• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত জামালপুরের গাছিরা

প্রকাশ:  ২৬ অক্টোবর ২০২২, ১৫:৩৬ | আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২২, ১৫:৪৮
জামালপুর প্রতিনিধি

শীত আসি আসি। জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে সকালের শিশিরের সঙ্গে অনুভূত হচ্ছে মৃদু শীত। শেষ রাতে দেখা যায় ঘন কুয়াশা। গাছে গাছে জমছে রস। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে উপজেলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা।

আর মাত্র কয়েক দিন পর রস সংগ্রহ করে রস থেকে লালি ও গুড় তৈরির পর্ব শুরু হবে। চলবে প্রায় মাঘ মাস পর্যন্ত। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি প্রতিটি গ্রামে চোখে পড়ছে।

বিশেষ করে উপজেলার জিল বাংলা সুগার মিলের পাশের সারি সারি খেজুরের গাছে রস সংগ্রহের দৃশ্য সকলের নজর কাড়ছে। মন জুড়িয়ে যাওয়ার মতো এক দৃশ্য। একসময় খেজুরের রসের গুড় দিয়ে গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন পিঠা বানানো হতো। এখন হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড়ের তৈরি পিঠাপুলি।

এখনো শীতকালে শহর থেকে মানুষ দলে দলে ছুটে আসেন খেজুর রস খেতে। রস জ্বালিয়ে পাতলা ঝোলা, দানা গুড় ও পাটালি তৈরি করা হত। যার স্বাদ ও ঘ্রাণ ছিল ভিন্ন ভিন্ন। যত বেশি শীত পড়বে তত বেশি মিষ্টি হবে রস। প্রতিটি গাছ ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত রস দেয়। শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি ও পায়েস খাওয়ার পালা।

কিছুদিন আগেও বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে, ক্ষেতের আইলে, ঝোপ-ঝাড়ের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ। মানুষের সচেতনতার অভাবে পুকুরের পাড়ে রাস্তার ধারে খেজুর গাছ এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। ইট ভাটার রাহুগ্রাসে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে দিনদিন খেজুর গাছ কমছেই।

গাছি কালাম মিঞা ও তার সহকর্মীরা সময়ের আলোকে বলেন, আমরা প্রায় প্রতি বছরই রস সংগ্রহ করে থাকি। এটাই আমাদের পেশা। রস বিক্রি করে এবং গুড় বানিয়েও বিক্রি করি। বর্তমানে চাহিদা মতো খেজুরগাছ না পাওয়ার কারণে রস কম হওয়ায় পর্যাপ্ত গুড় তৈরি করতে পারি না। বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে না দিয়ে এখনো এই পেশা ধরে রেখেছি। তবে যেভাবে খেজুর গাছ কাটা হচ্ছে, অল্প দিনের মধ্যেই এই এলাকায় আর গুড় পাওয়া যাবে না।

তিনি আরও বলেন, শীত একটু বেশি পড়তে শুরু করলে আত্মীয়-স্বজন আনা নেওয়া ও পিঠা-পুলির উৎসবে খেজুর গুড়ের দাম ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সে সময় আমাদের লাভ একটু বেশি হয়। যে পরিমাণে শ্রম দিতে হয়, সে পরিমাণে আমরা লাভ করতে পারি না। তবুও পেশাগত কারণে চালিয়ে যাচ্ছি এই ব্যবসা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস জানান, বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য ও অপেক্ষার পালা। এ জন্য মৌসুমে আসার সঙ্গে সঙ্গে দক্ষ গাছিদের কদর বাড়ে।

জামালপুর,খেজুরের রস,সংগ্রহ,ব্যস্ত,গাছিরা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close