• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

উপজেলা চেয়ারম্যানের দিকে পিস্তল তাক করলেন এমপি বাবলু

প্রকাশ:  ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০:৫৩ | আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০:৫৮
বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) রেজাউল করিম বাবলু ও শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নুর সমর্থকদের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ উঠেছে। ওই হট্টগোলের একপর্যায়ে এমপি বাবলু উপজেলা চেয়ারম্যানের দিকে পিস্তল তাক করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে এমপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আত্মরক্ষায় পিস্তল বের করেছেন তিনি।

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের বারান্দায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, সকালে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় যোগ দেওয়ার জন্য সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু তার লোকজন নিয়ে উপজেলা পরিষদে আসেন। এসময় উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলমগীর এমপির কাছে বরাদ্দের টাকা ফেরত চাওয়া নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে এমপির ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) রেজাউল করিম আহত হন।

এসময় হট্টগোল শুনে উপজেলা চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নু মিটিং থেকে বেরিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করেন। বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হলে একপর্যায়ে এমপি বাবলু তার তার ব্যক্তিগত পিস্তল বের করে তাক করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও উপজেলা পরিষদের লোকজন গিয়ে পরিবেশ শান্ত করেন।

এমপি রেজাউল করিম বাবলু বলেন, আজকে উপজেলার মাসিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার মিটিংয়ে যোগ দেওয়ার জন্য আমাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চিঠি দিয়েছিলো। সে জন্য আমি সকালে উপজেলা ভবনে যাই। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান ছান্নুর নির্দেশে যুবলীগের নেতাকর্মীরা সকাল সাড়ে ১০টায় আমার ওপর হামলা করে।

তিনি বলেন, ছান্নুর নির্দেশেই ৪ থেকে ৫ জন যুবলীগ নেতাকর্মী আমার ও আমার সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর হামলা করে। লোহার রড দিয়ে আমার পিএস রেজাউল করিম রেজার মাথা ফাটিয়ে দেয় হামলাকারীরা। রেজাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নু বলেন, উপজেলা যুবলীগের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে প্রকল্পের জন্য টাকা নিয়েছিলেন এমপি। এমপি তাদের প্রকল্পে কাজ দেননি, টাকাও ফেরত দেননি। এ নিয়ে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাদশার সঙ্গে আজ সকালে এমপির গণ্ডগোল হয়। সেসময় আমি বিষয়টি মীমাংসা করতে আসলে এমপি বাবলু আমার দিকে পিস্তল তাক করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলমগীর বলেন, টিআর ও কাবিখা প্রকল্প পাওয়ার জন্য ৪ বছর আগে আমি এমপি বাবলুকে ৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা দেই। কিন্তু, তিনি আমাকে প্রকল্প দেননি। ৪ বছর হলো তিনি উপজেলায় আসেন না। ৩ লাখ টাকা ফেরত দিলেও আমি এখনো তার কাছে ৯৫ হাজার টাকা পাই। আজ তিনি উপজেলা পরিষদ ভবনে আসলে আমি তার কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং আমাকে লোহার রড দিয়ে আক্রমণ করেন।

এমপির পিএসের মাথা ফাটানোর অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা কে করেছে জানি না। আমি করিনি।

প্রকল্পের জন্য টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে জেলে এমপি রেজাউল করিম বলেন, এ টাকার বিষয়ে তিনি আগে কেন কোনো অভিযোগ দেননি? আজ মারামারির পরে কেন দিচ্ছে? এর সঙ্গে টাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তারা আমার ওপর হামলা করবে, এটা পরিকল্পিত ছিলো।

উপজেলা চেয়ারম্যানের দিকে পিস্তল তাক করার বিষয়ে জানতে চাইলে এমপি বাবলু বলেন, তারা হামলা করে আমার পিএসের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। এরপরে আমাকে আক্রমণ করতে আসলে আত্মরক্ষার জন্য আমি পিস্তল বের করি। আত্মরক্ষার জন্যই তো সরকার আমাকে এই পিস্তলের লাইসেন্স দিয়েছে।

শাহজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মানুন বলেন, আমরা সবাই এখন উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির মিটিংয়ে আছি। এমপির সঙ্গে কী হয়েছে, কেন হয়েছে, এই মিটিংয়ের পরে সেটা বলতে পারবো।

এর আগে, এমপি বাবলুর বিরুদ্ধে পিস্তল কিনে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করার অভিযোগ উঠেছে। ওই ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বগুড়ায় সর্বস্তরে তখন এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

বগুড়া,এমপি,পিস্তল,উপজেলা চেয়ারম্যান,রেজাউল করিম বাবলু

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close