মিয়ানমার একের পর এক উসকানি দিয়ে যাচ্ছে: রাসিক মেয়র
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি তাই বলে। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শক্রতা নয়; এটি বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দিয়ে গিয়েছিলেন। তাই আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। মিয়ানমার একটার পর একটা আমাদের উসকানি দিয়ে যাচ্ছে। গোলা এসে পড়ছে বাংলাদেশের মাটিতে। একজন মারাই গেলেন, আরেকজনের পা উড়ে গেলো।
তিনি বলেন, গতকাল লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘এতো উসকানির মধ্যেও বাংলাদেশ কিন্তু মাথা ঠান্ডা রেখেছে। বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না।’ মিয়ানমার কী আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিতে চায়? তারা কি এমন অবস্থা তৈরি করতে চায়, যাতে আমরা যুদ্ধ করতে বাধ্য হই। না এরমধ্যে আরো কোনো পরাশক্তির ইন্ধন রয়েছে? নিশ্চয় এটি ভেবে দেখবার বিষয় আছে।
সম্পর্কিত খবর
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘শেখ হাসিনার বৈশ্বিক ভাবমূর্তি: প্রসঙ্গ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
তিনি বলেন, মানুষকে আশ্রয় দিতে হয়েছে, এটা ঠিক। কিন্তু আমাদের আয়ের একটা অন্যতম জায়গা কক্সবাজার ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পথে। টিলাগুলো সব ছাপড়া ছাপড়া ঘরবাড়ি হয়ে সেখানে বিভিন্ন অবৈধ কাজ শুরু হয়েছে।
মিয়ানমারের ভেতরে যে ঘটনাগুলো ঘটছে, এটি তাদের বিষয় হলেও আমাদের কথা বলতে হচ্ছে, এই কারণে যে সেটি আমাদেরকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমরা জানি, মিয়ানমার থেকে ১২ লাখ মানুষ বাংলাদেশে এসেছে, সেটি সংখ্যায় প্রতিনিয়তই বাড়ছে। তারা বিয়ে করছে, তাদের সন্তান হচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাসানচরে চমৎকার পরিবেশে তাদের প্রায় এক লাখ মানুষের থাকবার মতো করে ঘরবাড়ি তৈরি করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে ইয়াবা ঢুকছে, আমাদের যুবসমাজকে নষ্ট করে দিচ্ছে। কাজেই রোহিঙ্গা সমস্যার খুবই দ্রুত সমাধান হওয়া দরকার। তাদের এখান থেকে চলে যাওয়া দরকার, নিজ দেশে, নিজ বাড়িতে।
লিটন বলেন, উন্নত বিশ্ব বিশেষ করে ইতালি, গ্রিস অথবা ফ্রান্স-এসব দেশে যখন ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে নানা দেশের মানুষ বিভিন্নভাবে চোরাই পথে প্রবেশ করতে যায়, তখন তারা হয় ডুবে মারা যায়, না হলে ধরে পড়ে যায়। ধরা পড়লে তাদের ওপর অবর্ণনীয় যন্ত্রণা-কষ্ট নেমে আসে। তাদের মতো উন্নত দেশও কিন্তু পাঁচশো, হাজার বা ১০ হাজার মানুষকে আশ্রয় দিতে চায় না, অস্বীকার করে। অথচ আমাদের দেশে প্রায় ১২ লাখ মানুষ চলে এসেছে, আরো বাড়ছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে উন্নত বিশ্বের তাদের যে বক্তব্য, যে কর্মকাণ্ড আমরা খুব একটা কার্যকরী হতে দেখছি না। আমরা জানি যে, জাতিসংঘ কিছু তৎপরতা চালিয়েছিলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের যেখানে গেছেন, সেখানেই এই বিষয়টি তুলে ধরেছেন এবং সবাই বলেছেন, আমরা আশ্বাস দিচ্ছি, আমরা চেষ্টা করবো, আমরা বলছি, আমরা চাপ সৃষ্টি করছি। কিন্তু এই পর্যন্ত কাউকে আমরা সেরকম জায়গায় যেতে দেখিনি।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম