• বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

সরকারি তিন হ্যাচারির দুটিই পরিত্যক্ত, মাটির কুয়াতেই ভরসা

প্রকাশ:  ২১ এপ্রিল ২০২২, ১৭:৩৮ | আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২২, ১৭:৪৪
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

এশিয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী। প্রতিবছর এপ্রিল-মে দুই মাসের যেকোনো সময় বজ্রপাতের সাথে টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল নামলে হালদা নদীতে কার্প জাতীয় রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ মা-মাছ ডিম ছাড়ে। এ মৌসুমে নিষিক্ত ডিম আহরণ করতে ব্যস্ততার সীমা থাকেনা হালদাপারের ডিম সংগ্রহকারীদের।

হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র পুনরুদ্ধার প্রকল্পের আওতায় মৎস্য অধিদপ্তর ২০১২ সালের দিকে হালদা নদীর রাউজান অংশে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে কাগতিয়া, পশ্চিম গহিরা ও মোবারেকখীল এলাকায় তিনটি হ্যাচারি নির্মাণ করে। নির্মাণের কয়েক বছরের মধ্যে তিনটার মধ্যে দুটো সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। মোবারেকখীল হ্যাচারি সচল থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণে স্থায়ী জনবল না থাকায় জেনারেটর চুরিসহ অনেক যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে পড়ে। ফলে সচল একমাত্র হ্যাচারির শতভাগ সুফল পাচ্ছেননা ডিম আহরণকারীরা।

সরকারি অর্থায়নে নির্মিত হ্যাচারি নষ্ট থাকায় বিগত মৌসুমের মতো চলতি ডিম ছাড়ার মৌসুমেও সুফলবঞ্চিত ডিম আহরণকারীরা মার কুয়ার উপর নির্ভর থাকতে হচ্ছে।

ডিম আহরণকারীরা জানান, হালদা নদী থেকে নিষিক্ত ডিম আহরণ শেষে মান্ধাতা আমলের মাঠির কুয়ায় রেণু ফোটাতে গিয়ে বেশীরভাগ ডিম নষ্ট হয়ে যায়। ফলে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

হালদা নদীর ডিম আজিমের ঘাট এলাকার ডিম আহরণকারী, আইডিএফ স্বেচ্ছাসেবক রোসাঙ্গীর আলম ও কাগতিয়া গোলজার পাড়ার শফিউল আলম বলেন, সরকারি তিনটি হ্যাচারির দুটি সম্পূর্ণ অকেজো থাকায় আমাদের মান্ধাতা আমলের মাটির কুয়াতেই ভরসা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।

মোবারেকখীল হ্যাচারির অস্থায়ী কর্মচারি সুমন বড়ুয়া বলেন, হ্যাচারির কুয়ার মধ্যে কয়েকটি শতভাগ প্রস্তুত নেই। অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করলেও ৭/৮ মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে আছি।

জানা গেছে, ২০২১ সালে ২৬ মে ও ২ জুন মোট দুই দফায় তিন শতাধিক নৌকাযোগে ছয় শতাধিক ডিম সংগ্রহকারী নদীর আমতুয়া, নাপিতের ঘাট, আজিমের ঘাট, সোনাইমুখ, অংকুরিঘোনা পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে ৮৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করে। আহরিত ডিম থেকে ১০৫.৭২৫ কেজি রেণু উৎপাদিত হয়। মা মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুম শুরু হওয়ায় উপজেলা মৎস্য অফিসের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

রাউজান সি. উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পীযুষ প্রভাকর বলেন, নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুম চলছে। সরকারি তিনটা হ্যাচারির দুটি পরিত্যক্ত হলেও মোবারেকখীল হ্যাচারিকে আমরা প্রস্তুত রেখেছি। পাশাপাশি মাঠির কুয়ায় যাতে ডিম নষ্ট না হয় সেই বিষয়ে আমরা ডিম আহরণকারীদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করছি। আশা করছি চলতি মৌসুমে হালদা নদী থেকে আশানুরুপ ডিম সংগ্রহ করা যাবে।

সচেতন মহলের মতে, হালদা নদীতে প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননের যে বিপুল সম্ভার তা কাজে লাগানো গেলে জাতীয় অর্থনীতি হবে আরও সমৃদ্ধ।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এনইউআর/জেএস

হালদা নদী

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close