• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

কয়রায় মেয়াদোত্তীর্ণ সামগ্রী ব্যবহার করে সেতু নির্মাণ!

প্রকাশ:  ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১৬:৩৪
খুলনা প্রতিনিধি

খুলনার কয়রা উপজেলার কাশির খালের উপর নির্মাণাধীন সেতুতে মেয়াদোত্তীর্ণ নির্মাণ সামগ্রী ও মরিচা ধরা রড ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। জানা যায়, প্রায় ৩ বছর যাবত লোনা পানিতে তলিয়ে ছিল এসব নির্মাণ সামগ্রী। নির্মাণ কাজে ওইসব ত্রুটিপূর্ণ সামগ্রী ব্যবহারে এলাকাবাসীর বাঁধার মুখেও তা বন্ধ না হওয়ায় অবশেষে সমস্যার সমাধানে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানায়, সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) বেতগ্রাম-কাশিরহাট সড়কের কাশিরখালের উপর সেতু নির্মাণ কাজ চলমান। ২০১৯ সালের মে মাসে কাজ শুরু হয়ে করোনা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদার। প্রায় ৩ বছর বন্ধ থাকার পর গত ২ মার্চ সেতুটির নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করা হয়। তবে ৩ বছর ধরে কাজের সাইটে ফেলে রাখা নির্মাণ সামগ্রী (রড, সিমেন্ট, পাথর, খোয়া, বালু) ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহারের চেষ্টা করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে স্থানীয়রা নির্মাণকাজে বাঁধা দিলে তাৎক্ষণিক দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।চলমান পরিস্থিতে এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও সওজ কর্তৃপক্ষের কাছে গণস্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা শেখ জাহাঙ্গীর কবির বলেন, যেখানে সেতু নির্মাণ চলছে তার দক্ষিণ পাশে এলাকার বড় একটি মাছের আড়ৎ রয়েছে। সেখানে প্রতিদিন মাছ আনা নেওয়ার কাজে অসংখ্য যানবাহন যাতায়াত করে থাকে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটি নির্মাণ কাজে শুরুতেই এমন ত্রুটি হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। এ কারণে স্থানীয়রা ঠিকদারের লোকজনকে মেয়াদোত্তীর্ণ মালামাল সরিয়ে নিতে বললে তারা উল্টো এলাকাবাসীদের মামলার ভয় দেখাচ্ছেন।

সওজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে সেতুটির নির্মাণ কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ কাজটি পায়। প্রায় এক কোটি টাকা বরাদ্দের এ নির্মাণ কাজ ২০২১ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু করোনা এবং জলোচ্ছ্বাসের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

সরেজমিনে নির্মাণাধীন সেতু পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘ দিনের ফেলে রাখা লোহার রডের গায়ে ধরা মরিচা শ্রমিকরা ঘসে ঘসে ছাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

এসময় শ্রমিকরা জানান, সেতুর উপরে ঢালাইয়ের কাজে এ রড ব্যবহার হবে। সেখানে উপস্থিত হাফিজুর রহমান নামে এক ব্যাক্তি জানান, তিনি ঠিকাদারের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা চুক্তিতে শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছেন।

সওজের উপসহকারী প্রকৌশলী আজিম কাওছার জানান, নির্ধারিত মেয়াদে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাজটি সম্পন্ন করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে কাজটি পুনরায় শুরু হয়েছে। সেখানে ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পেয়ে আপাতত কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সাইটের ব্যবহার অনুপযোগী মালামাল সরিয়ে নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি ।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক দিলিপ কুমার জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে চুড়ান্ত বিল প্রদান করা হয়। বর্তমানে বাকি কাজ সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে নতুন করে নির্দেশনা দেওয়ায় পুনরায় বাকি কাজ শুরু হয়েছে। আর নির্মাণকাজে ত্রুটিপূর্ণ কোন মালামাল ব্যবহার না করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএনএস/জেএস

খুলনা,কয়রা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close