• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ঋণ করে জিনের বাদশার শর্ত পূরণ করতে গিয়ে নিঃস্ব পরিবার

প্রকাশ:  ১৩ মার্চ ২০২২, ১৬:২১ | আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২২, ১৬:৩৯
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁও পৌর-শহরের মন্দির পাড়া এলাকায় জিনের বাদশার খপ্পরে পড়ে মজিবর নামে এক দিনমজুর পরিবারসহ এখন রাস্তায়। স্বর্ণ মূর্তির লোভে হারিয়েছেন সারা বছরের উপার্জিত টাকা, হয়েছেন আসামি। হাজিরা দিতে যেতে হয় ঢাকার সিআইডি কার্যালয়ে।

সবশেষে গত (৭ মার্চ) সিআইডি ইউনিট থেকে জিঙ্গাসাবাদের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে তলব করা হয় মজিবরসহ পরিবারের তিনজনকে।

জানা যায়, গত বছরের প্রথম দিকে আসমান থেকে অদৃশ্য এক জিন ফোন করে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখান দরিদ্র মজিবর এবং তার পরিবারকে। এ খবর শুনে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান তারা। জিনের বাদশার কথা অনুযায়ী লাল কাপড়ে মোড়ানো সোনালী রঙের একটি দেবী মূর্তি পায় মজিবরের পরিবার। তবে লাল কাপড়ে মোড়ানো মূর্তিটা খোলার আগে তিনটি দুম্বা কুরবানি দিতে হবে তাদের। কুরবানি না দিলে ও এব্যাপারে কাউকে বললে বড় ধরণের ক্ষতি হবে বলে জানান প্রতারক জিন। তাই মজিবর সারা বছরের উপার্জিত ২ লাখ ও ঋণ করা ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে ভন্ড জিনের শর্ত পূরণ করেন।

এ শর্ত পূরণ হতে না হতেই ফোন করে জিন আরও বলেন, পরিবারের চার সদস্যের নামে ৪টি সিম ক্রয় করে রংপুরের এক নিদিষ্ট স্থানে রেখে আসতে হবে। অদৃশ্য জিনের আদেশ শুনা মাত্রই সিম নিয়ে রংপুরে হাজির হন মজিবর। এর পর থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় আসমানে থাকা জিনের বাদশা। অন্যদিকে মজিবরের কিনে দেওয়া সিম ব্যবহার করে অন্যত্র প্রতারণার কাজ চালিয়ে যায় সেই জিন। পরে সেই সিমের নামে মামলা হলে মজিবর ও তার সন্তানদের হাজিরা দিতে যেতে হয় ঢাকা সিআইডির কার্যালয়ে।

ভুক্তভোগী মজিবর রহমান জানান, প্রথমে আমার বড় ছেলের স্ত্রীকে ফোন দেয় এক বৃদ্ধ। নিজেকে আসমানি জিন হিসেবে দাবি করেন তিনি। পরে আমরা পরিবারের বাকি চার জন জড়িয়ে পড়ি। আমাদের সবাইকে শপথ পড়ানো হয় বিষয়টি যেন আমরা কাউকে না বলি।

তিনি আরও বলেন, পরিবার নিয়ে আমি একটি ভাড়া বাসায় থাকি। বাড়ি করার জন্য যে টাকা সঞ্চয় করেছিলাম সেই টাকা এবং ঋণ করা ৮৫ হাজার টাকা আমরা প্রতারকের হাতে তুলে দেই। কিন্তু পরে জানতে পারি আমাকে দেয়া দেবী মূর্তিটি সোনার নয়, পিতলের ছিল। আমি এখন নিঃস্ব। টাকাও গেল আবার মামলাও খেলাম। সেই মামলার হাজিরা দিতে হয় ঢাকায়।

এ বিষয়ে সিআইডি কর্মকর্তা উপ- পরিদর্শক সিরাজ উদ্দিন মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এই ঘটনার সাথে পরিবারটি জড়িত। মামলার তদন্তের স্বার্থে তাদের থেকে পাওয়া তথ্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে মজিবরের পরিবারকে ঢাকায় ডাকা হয়েছে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এনজে

জিনের বাদশা,নিঃস্ব,সিআইডি,মামলা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close