• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

সুনামগঞ্জে পীর হাবিবের স্মৃতিচারণে যা বললেন বিশিষ্টজনেরা

প্রকাশ:  ১১ মার্চ ২০২২, ২১:২৪
এম এ কাইয়ুম, সুনামগঞ্জ থেকে

বরেণ্য সাংবাদিক ও কলামিস্ট, পূর্বপশ্চিমের প্রতিষ্ঠাতা এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান স্মরণে সুনামগঞ্জে বিশাল নাগরিক শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ।

শুক্রবার (১১ মার্চ) বিকালে জেলা শহরের সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সুনামগঞ্জ পৌরসভা এ নাগরিক আয়োজন করে। শোকসভায় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিককর্মী, ক্রীড়াবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন পেশার বিদগ্ধজনদের কাছ থেকে পীর হাবিবুর রহমান সম্পর্কে স্মৃতিচারণ শুনতে শোকসভাস্থলে হাজারো মানুষ উপস্থিত হন। পড়ন্ত বিকেলে কানায় কানায় ভরে ওঠে স্কুল মাঠ।

শোকসভায় পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ‘পীর হাবিব ছিলেন আমাদের পরিবারের একজন। সুনামগঞ্জের উন্নয়ন, অগ্রগতি নিয়ে তার সাথে কথা হতো। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে কাজ করতেন। আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত হওয়ার পর তিনি রাজনীতির ব্যাপারে আমাকে অনেক সুপরামর্শ দিতেন। তিনি ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সুনামগঞ্জকে আলাদা পরিচিতি এনে দিয়েছিলেন।’

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম। আর পীর হাবিব প্রস্তুত ছিলেন জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার জন্য জীবন দিতে। আমরা যে দেশের জন্য লড়াই করেছিলাম সেই দেশ আমরা পাইনি। মুক্তিযোদ্ধাদের আকাঙ্ক্ষার দেশ গড়তে প্রতিনিয়ত লিখতো পীর হাবিব। তার জীবন আরও দীর্ঘ হলে দেশের সাধারণ মানুষ উপকৃত হতো। আমার জীবনের সুকর্মের বিনিময়ে আল্লাহ যেন তাকে বেহেশত নসিব করেন।’

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ‘এরশাদ সরকারের আমলে রাজনীতির জন্য পীর হাবিব জেল খেটেছিলেন, আবার এরশাদ সাহেবের সাথে তার অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল। এরশাদের সমালোচকও ছিলেন তিনি। আমি জাতীয় সংসদে পীর হাবিবের লেখার উদ্বৃতি দিতাম। দেশের একজন প্রথম সারির কলামযোদ্ধা যার গাড়ি-বাড়ি ফ্ল্যাট নেই। এই প্রজন্মের সাংবাদিকদের তাকে অনুসরণ করা উচিত।’

সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘পীর হাবিব জঙ্গিবাদ, পাকিস্তানপন্থা, সামরিক শাসনের বিপক্ষে এবং স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে আজীবন লিখে গেছেন। মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র হাতে নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, আর পীর হাবিব স্বাধীন দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার কলমযোদ্ধা ছিলেন। তিনি দু’হাত খুলে লিখতেন। তার কলমের ডগা দিয়ে আগুনের ফুলকি বেরুতো। এভাবে লিখতে বুকের পাঠা লাগে, যেটা তাঁর মধ্যে ছিল। গল্পবলা ডংয়ে তিনি লিখতেন, যেখানে আবেগ মেশানো থাকত। তিনি নিরপেক্ষ ছিলেন না- ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের, স্বাধীনতার ও বঙ্গবন্ধুর পক্ষের সাংবাদিক।’

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, ‘সাধারণ পরিবার থেকে ওঠে আসা পীর হাবিব সাধারণ মানুষের পক্ষেই কথা বলতেন। তার আগুনঝরা লিখনীতে সাধারণ মানুষের কথা ফুঠে ওঠতো। পীর হাবিব আমার চেয়ে হাজারগুণ বেশি সাহসী ছিলেন। বাংলাদেশের মানচিত্রে এখন শকুনের চোখ পড়েছে। এখন পীর হাবিবের মতো সাহসী মানুষের দরকার ছিল। তাকে সুনামগঞ্জের মানুষ এতটা ভালোবাসে আমি এখানে না আসলে বুঝতে পারতাম না।’

সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখতের সভাপতিত্বে ও সজ্জাদুর রহমান সাজুর সঞ্চালনায় শোকসভায় আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মতিউর রহমান, মুহিবুর রহমান মানিক এমপি, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুস সামাদ ডন, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নূরুল হুদা মুকুট, সিনিয়র সাংবাদিক প্রণব সাহা, সাবেক ফুটবলার কায়সার হামিদ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, রাকসুর সাবেক ভিপি রাগিব আহসান মুন্না।

পীর হাবিবের পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন, তাঁর সহোদর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান পীর ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, পীর হাবিবের ছেলে ব্যারিস্টার আহনাফ ফাহমিন অন্তর ও মেয়ে রাইসা নাজ চন্দ্রস্মিতা।

পূর্বপশ্চিম- এনই

পীর হাবিব

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close