• রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ব্রিটিশ আমলের জরাজীর্ণ ভবনে চলছে ইউপির কার্যক্রম

প্রকাশ:  ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪:২৮ | আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬:১৯
পাইকগাছা প্রতিনিধি

প্রতি মুহূর্তে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাইকগাছার কপিলমুনি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। গ্রাম আদালতসহ পরিষদের সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কায় প্রতিদিন জনপ্রতিনিধি, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ হাজার হাজার মানুষ ওঠা-নামা করছে বাঁশ-খুঁটির ঠেকনা দিয়ে রাখা পরিষদের দ্বিতল ভবনটিতে।

জানা যায়, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯৩৩ সালের দিকে ৫ শতক জমির উপর নির্মিত পরিষদের ভবনটি থেকে অদ্যবধি ইউনিয়নের ২২টি গ্রামের অসংখ্য মানুষ নানাবিধ সেবা নিচ্ছে। ভবনটি প্রথম দফায় ১৯৬০ সালে সংষ্কার করা হয়। সর্বশেষ ২০০০ সালে এলজিইডির অর্থায়নে পরিষদের একাংশের ছাদ ও পলেস্তরা সংষ্কার হলেও এরপর আর ফিরে তকায়নি কেউ।

কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রয়োজনীয় জায়গার অভাবে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বে ও সরকার কপিলমুনি ইউপি ভবনের জন্য বরাদ্দ দিতে পারছেনা। সারা দেশে দৃষ্টি নন্দন ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন তৈরি করা হলেও কপিলমুনির অবস্থা সম্পূর্ণ উল্টো।

কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, ইতোপূর্বে পরিষদের নিজস্ব ৫০ শতক জমির প্রয়োজন হলেও পরিষদটি মাত্র ৫শতক জমির উপর অবস্থিত। বেশ আগে থেকে পরিষদের জন্য সদরসহ আশপাশের এলাকায় প্রয়োজনীয় জমির জন্য অনুসন্ধান শুরু হলেও অদ্যবধি তার অবসান হয়নি। এর উপর কপিলমুনি কেন্দ্রিক উপজেলা বিনোদগঞ্জসহ দু’টি পৌরসভা বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে রয়েছে বহুলাংশে। কপিলমুনি পৌরসভা বাস্তবায়ন হলে ইউপি ভবন চলে যাবে ইউপি সীমানায়। এমন আশংকার প্রেক্ষিতেও এর জন্য প্রয়োজনীয় জমির দেখভালের কাজ পিছিয়ে রয়েছে বলেও দাবি মহল বিশেষের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতল ভবনটির দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়ছে, ছাদের পুরো অংশই খসে খসে পড়ছে। বর্ষা মৌসুমে সম্পূর্ণ ছাদটি ধসে পড়ার আশংকায় বিভিন্ন স্থানে বাঁশের খুঁটি দিয়ে ঠেক পেয়ালা দেওয়া রয়েছে। দ্বিতীয় তলার ৪টি কক্ষের সবগুলোই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। মেঝে ও ছাদ দু’টিরই অবস্থা জবুথবু। কোন কোন জায়গায় ঢালাইয়ের নষ্ট রড বেরিয়ে উঁকি মারছে। পায়ের ভারে প্রতি মুহূর্তে খসে খসে পড়ছে ছাদের ঢালাইয়ের অংশ বিশেষ। নিচতলার অধিকাংশ কক্ষই পরিত্যক্ত, যেখানে বর্তমানে সাপ-পোঁকা-মাকড়ের বসবাস। জানালাগুলোও ভেঙে গেছে। বৃষ্টি শুরু হতেই হালকা বাতাসের ঝাপটায় ভেতরে ঢুঁকে পড়ে পানি। এরপরও এক প্রকার বাধ্য হয়ে ইউনিয়নের ২২ টি গ্রামের মানুষ নিত্য সেবা নিচ্ছেন পরিষদের এই ভবন থেকে। একেবারেই যেন বাধ্য হয়ে তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চেয়ারম্যান, মেম্বর, সচিব ও সাধারণ মানুষ নিত্য কাজ মেটাচ্ছেন। ভবনটির নিচে ৫ টি দোকান ঘর বরাদ্ধ দেওয়া রয়েছে, তারাও ব্যবসা পরিচালনা করছেন জীবনের শংকা নিয়ে।

এদিকে জরাজীর্ণ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করার জন্য পরিষদ কর্তৃপক্ষ ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করলেও কাজ হয়নি। আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা পরিষদ থেকে একাধিকবার ভবনটি পরিদর্শনসহ আধুনিক ভবনের প্রতিশ্রুতি দিলেও অদ্যবধি কাজ হয়নি।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ রবিউল ইসলামসহ সেবা নিতে আসা স্থানীয়রা জানান, বাধ্য হয়েই ইউপি ভবনে সেবা দেওয়া-নেওয়া করতে আসতে হয় তাদের। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের করুণ পরিস্থিতি প্রতি নিয়ত প্রসারিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান মো: কওছার আলী জোয়ার্দার বলেন, বর্তমানে জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে প্রতিদিন ১২ জন মেম্বর, সচিব ও গ্রামপুলিশরা কাজ করছে। পাশাপাশি গ্রাম আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয় এখান থেকেই।

পূর্বপশ্চিমবিডি/জেএস

পাইকগাছা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close