• রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

জমজ দুই বোন মনি-মুক্তাকে পুকুরে ছুড়ে ফেলেন তাদের মা

প্রকাশ:  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৭:২৮ | আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৭:৪৫
খুলনা প্রতিনিধি

খুলনার তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামে নানাবাড়ি বেড়াতে এসে মাঝরাতে নিখোঁজ হয় জমজ দুই বোন আড়াই মাস বয়সী মনি ও মুক্তা। ভোরবেলা একটি পুকুরে তাদের ভাসমান লাশ পাওয়া যায়। মনি-মুক্তাকে হত্যার অভিযোগে মা কানিজ ফাতেমা কনাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুকুরের ভাসমান মনি-মুক্তির লাশ উদ্ধারের পর ঘটনার তদন্তে নিহত শিশু দু’টির মাসহ তিনজনকে তেরখাদা থানায় ডেকে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পরে অন্য দু’জনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

সম্পর্কিত খবর

    মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও তেরখাদা থানার এসআই মো. এনামুল হক বলেন, গত চার বছর আগে তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামের খোরশেদের কন্যার সাথে মোল্লারহাট উপজেলার মাতারচর গ্রামের মোল্লা আবু বক্কারের ছেলে মাসুম বিল্লাহর বিয়ে হয়। বিয়ের তিন বছরের মাথায় তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এরপর কনাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সন্তান হওয়ার পর থেকে গত দু’মাস ১১ দিন বাবার বাড়িতে অবস্থান করেন তিনি। সন্তান দু’টি প্রচুর কান্নাকাটি করত। এ বিষয়ে কনা স্বামীর সাথে যোগাযোগ করেন। বলা হয়, আগামী মাসে তাকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসা হবে। কিন্তু এর আগে জমজ শিশুকে হত্যা করে কনা।

    তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য অনুযায়ী, মনি ও মুক্তা রাতে কান্নাকাটি করছিল। প্রথমে কনা তাদের দুধ খাওয়ায়। এরপরও তারা থামছিল না। রাত আড়াইটার দিকে বাচ্চা দু’টির মুখে চড় মারে কনা। পরবর্তীতে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর কি করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না কনা। তাই নাটক সাজানোর জন্য বাচ্চা দু’টিকে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।

    তদন্ত কর্মকর্তা জানান, জমজ শিশুদের পুকুরে ফেলে দেওয়ার পর ঘরের দরজা খুলে ঘুমিয়ে পড়েন কনা। যেন বিষয়টি কেউ আঁচ করতে না পারে। ঠিক এর দু’ঘন্টা অর্থাৎ রাত চারটার দিকে ঘুম থেকে উঠে চিৎকার করে সে। পাড়ার লোকজন তাদের বাড়িতে জড়ো হয়। এরপর সবাই যমজ শিশুদের খোঁজ নিতে থাকেন। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে দু’জনের লাশ উদ্ধার করে নানী শরিফা খাতুন ও মামা নুর আলম।

    মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লাশ দু’টির সুরাতহাল রির্পোট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এরপর ওই পরিবারের প্রতিটি সদস্যর ওপর নজর রাখেন এ কর্মকর্তা। পরবর্তীতে বিকেলে কনা, তার বাবা ও মাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নেওয়া হয়।

    জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মনি-মুক্তার মা কনা অসংলগ্ন কথা বলতে থাকেন। পরে ওই মা তার যমজ দুই কন্যা শিশুকে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং হত্যার কারণ পুলিশের নিকট ব্যাখ্যা করেন। পরে অপর দু’জনকে ছেড়ে দিয়ে কনাকে আটক রাখে।

    যমজ শিশু হত্যার দায়ে রাতে বাবা মাসুম বিল্লাহ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।

    পূর্বপশ্চিম-এনই

    আগের নিউজ: পুকুরে মিললো জমজ দুই বোন মনি-মুক্তার লাশ

    মনি-মুক্তি

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close