• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

প্রেমঘটিত কারণে খুন টিকটকার যুবলীগ নেতা

প্রকাশ:  ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:২২
বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়ায় প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে প্রেমিকার নতুন প্রেমিকের হাতে খুন হয়েছেন টিকটকার যুবলীগ নেতা মিরাজ আলী (২২)। এ সময় নিহতের সঙ্গে থাকা তার বন্ধু নাজমুলও ছুরিকাহত হন।

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ জড়িত এক স্কুলছাত্র কিশোরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে প্রেস বিফ্রিংয়ে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী এ তথ্য জানান। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে রক্তমাখা জ্যাকেট ও হত্যায় ব্যবহৃত বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বগুড়া শহরের রহমান নগর এলাকার আবদুল কুদ্দুসের ছেলে মো. মিঠুন (২৮) ও সোনাতলা উপজেলার নওদাবগা বুড়িতলা গ্রামের মুন্নু মিয়ার ছেলে তারেক রহমান (১৮)। অপরজন কিশোর দশম শ্রেণির ছাত্র হওয়ার তার নাম প্রকাশ করা হয়নি।

নিহত মিরাজ শহরের বৃন্দাবনপাড়া এলাকার নৈশপ্রহরী আব্দুর রহমানের ছেলে মিরাজ। তিনি বগুড়া পৌর যুবলীগের ২ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সদস্য ও অটোরিকশা মেকানিক ছিলেন। মিরাজ নিয়মিত টিকটক ভিডিও করতেন।

পুলিশ জানান, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বগুড়া শহরের এডওয়ার্ড পৌর পার্কের জগিং সেন্টারে মিরাজকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এ সময় নাজমুল নামে তার বন্ধু আহত হন।

এ ঘটনায় সদর থানা ও ডিবি পুলিশের একটি দল হত্যারহস্য উদঘাটন এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামে। হত্যার কারণ ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর রাতভর অভিযান চালিয়ে এক কিশোরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এরা হত্যার কারণ প্রকাশ করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশকে জানান, নিহত মিরাজের সঙ্গে বগুড়া শহরের বাদুড়তলার এক মেয়ের প্রায় এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। প্রেমিকার ফেসবুকের পাসওয়ার্ড মিরাজের কাছে ছিল। সম্প্রতি ফেসবুকে ওই মেয়ের সঙ্গে সোনাতলার নওদাবগা গ্রামের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রের পরিচয় হয়। একপর্যায়ে সে মিরাজকে ছেড়ে ওই ছাত্রের সঙ্গে প্রেম করতে থাকে। মিরাজ ফেসবুকে ঢুকে দেখেন তার প্রেমিকা সোনাতলার ওই ছাত্রের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েছে।

মিরাজ তার প্রেমিকাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, ওই ছেলে তাকে বিরক্ত ও প্রেমের জন্য চাপ দিচ্ছে। এরপর মিরাজ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার ও মোবাইল ফোনে ওই ছেলের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর একে অপরকে হুমকি-ধামকি দেন তারা।

ঘটনার দিন মিরাজ তাদের মধ্যে মীমাংসা করতে ওই প্রেমিক স্কুলছাত্র ও প্রেমিকাকে পার্কে ডাকেন। সন্ধ্যার দিকে কিশোর স্কুলছাত্র তার সহযোগী তারেক রহমান ও মো. মিঠুনকে নিয়ে পার্কে আসেন। তবে তাদের প্রেমিকা সেখানে আসেননি।

সেখানে মিরাজ ও তার বন্ধু নাজমুলের সঙ্গে মিঠুন, তারেক এবং অপরজনের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় মিঠুন কাছে থাকা বার্মিজ চাকু দিয়ে মিরাজের বুকে দুটি ও নাজমুলের হাতে একটি আঘাত করে পালিয়ে যায়। এ সময় পার্কে থাকা জনগণ রক্তাক্ত মিরাজ ও নাজমুলকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেন। সেখানে চিকিৎসক মিরাজকে মৃত ঘোষণা করেন এবং নাজমুলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

পুলিশ সুপার জানান, গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে মূল অভিযুক্ত স্কুলছাত্র কিশোর হওয়ায় তাকে আলাদাভাবে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। মিঠুন ও তারেককে বুধবার বিকালে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া নিহতের বন্ধু নাজমুল ও প্রেমিকাকে সাক্ষী করা হবে। তবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রেমিকার কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

সদর থানার ওসি সেলিম রেজা জানান, মঙ্গলবার রাতেই নিহত মিরাজের বড়ভাই আতাউর রহমান অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

পূর্বপশ্চিমবিডি/জেএস

বগুড়া

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close