পুলিশের উপস্থিতিতে প্রবাসীর বাড়ি ভাঙলো দুর্বৃত্তরা
ঠাকুরগাঁও পৌর-শহরে জহির খান নামের এক প্রবাসীর নির্মাণধীন বাড়ি পুলিশের উপস্থিতিতে দুর্বৃত্তদের ভাঙ্গার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে সেই প্রবাসী মানবেতার জীবনযাপন করছেন। প্রানের ভয়ে পরিবার নিয়ে ন্যায় বিচারের আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে শহরের মুসলিম নগর এলাকায় প্রায় ৩০জনের একটি দুর্বৃত্তের দল ওই প্রবাসীর বাড়ি-ঘর ভাঙচুর চালায় ও মালামাল লুট করে। পরে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে ফিরিয়ে দেন।
সম্পর্কিত খবর
প্রত্যক্ষদর্শী শফিকুল ইসলাম জানান, ‘জোহার স্ত্রী আনোয়ারা একদল সন্ত্রাসী নিয়ে এসে প্রবাসী জহিরের বাড়িঘর ভাঙতে শুরু করেন। এ সময় বাড়ির মহিলারা বাধা দিলে পুলিশের সামনেই মহিলাদের চুল ধরে ধাক্কা দিয়ে ফেলেন দেন আনোয়ারা। আমরা কয়েকজন এগিয়ে গেলে রাম দা, চাইনিস কুড়াল নিয়ে আমাদের দিকে সন্ত্রাসীরা তেরে আছেন।’
আরেক প্রতিবেশী ইউসুফ রানা বলেন, ‘জহির ভিসার কাজে ঢাকায় ছিলেন এই সুযোগে ওই মহিলা (আনোয়ারা) দেশীয় অস্ত্রসহ একদল সন্ত্রাসী নিয়ে এসে বাড়ি ঘর ভাঙতে শুরু করেন। আমরা কথা বলতে গেলে তারা আমাদের ভয়ভীতি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আইনের লোকদের সামনেই যদি সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে দিন দুপুরের বাড়িতে হামলা চালায় তাহলে আমরা সাধারণ মানুষ কার কাছে গিয়ে আশ্রয় নেবো।’
ভুক্তভোগী প্রবাসী জহির খান বলেন, ‘৭বছর আগে জমিটা ক্রয় করে বাড়ি করে বসবাস করছি। আমি ঢাকায় ভিসার কাজ শেষে বাসায় এসে দেখি সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িঘর ভেঙে দিয়েছে। ২২ বছরের পরিশ্রমের টাকায় আমি বাড়িটা করেছি। পুলিশ প্রশাসনকে ফোন করেছি তারা আসেননি। দুই দিন ধরে স্ত্রী ও ৭বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে নিরাপত্তার জন্য থানায় ঘুরাঘুরি করছি কিন্তু পুলিশ কোন কথা শুনছে না। মামলা দিতে গেলে মামলাও নিচ্ছে না। বরং পরামর্শ দিচ্ছেন কোর্টে মামলা করতে।’
তিনি আরো বলেন, ‘২২ বছর ধরে সরকারকে আমি রেমিটেন্স দিচ্ছি। আমি কি ন্যায় বিচার পাবো না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ আমি একজন প্রবাসী, রেমিটেন্স যোদ্ধা। আমার প্রতি একটু সদয় হোন। ’
অভিযোগ প্রসঙ্গে আনোয়ারা পারভিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঐ জায়গাটা আমার স্বামীর। সোনালী ব্যাংক ঠাকুরগাঁও শাখার আওয়াতাধীন রয়েছে। প্রবাসী জহির বাড়ির কাজ শুরু করলে আমি ব্যাংক ম্যানেজারকে বিষয়টি অবগত করি। ম্যানেজার তখন ওসিকে ফোন করেন। পরে পুলিশ ও ব্যাংকের লোকদের সামনেই বাড়ির সীমানা প্রাচীর ও আর সিসি পিলার গুলো ভেঙ্গে দেওয়া হয়।’
সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম জানান, ‘মুসলিম নগরে একটি জমি সংকান্ত ঝামেলা হওয়ায় আমি অফিসারকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। পরে জানতে পারি সম্পত্তিটি সোনালী ব্যাংকের কাছে বন্ধক রয়েছে। আমার অফিসার কাগজপত্র সংগ্রহ করে ডায়রিতে নোট করেছে।’ এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক ঠাকুরগাঁও শাখার ম্যানেজার নিরঞ্জন চন্দ্র রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
পূর্বপশ্চিমবিডি/জেএস