• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

নওগাঁয় বিদেশি সবজি স্কোয়াশ চাষে মিলছে সাফল্য

প্রকাশ:  ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৯:৫২ | আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৯:৫৯
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে বিদেশি স্কোয়াশের চাষাবাদ। দেশের অন্যান্য জেলার মতোই এ জেলাতেও কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল বিদেশি শীতকালীন সবজি স্কোয়াশের চাষ করছেন। দেখতে শসার মত, কুমড়া জাতীয় এই সবজি অতি পুষ্টিকর, সু-স্বাদু ও লাভজনক। তাই এ জেলার কৃষকরা এই সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এই সবজি ভাজি, মাছ ও মাংসের সঙ্গে রান্নার উপযোগী। বিশেষ করে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সবজি এবং সালাদ হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, স্কোয়াশ মূলত বিদেশি সবজি হলেও, বেশ ভালো ফলন হচ্ছে আমাদের দেশে এবং রয়েছে এই সবজির ব্যাপক চাহিদা। এই স্কোয়াশ পরিপক্ক হলে এক-একটির ওজন হয় প্রায় এক কেজিরও বেশি। অনেকটা কুমড়া গাছের মতোই আকার এই স্কোয়াশ গাছগুলির। স্কোয়াশ শশার মতো লম্বা হলেও রঙ মিষ্টি কুমড়োর মতো। স্কোয়াশ অল্প সময়ে এবং সাশ্রয়ী মূল্যে উৎপাদন করা যায়। পূর্ণবয়স্ক একটি স্কোয়াশ গাছ অল্প জায়গা দখল করে। পরিণত স্কোয়াশের প্রতিটি গাছের গোড়ায় ৮থেকে ১২টি পর্যন্ত ফল বের হয়। কয়েকদিনের মধ্যেই খাওয়ার উপযোগী হয় এটি। বাজারে বিক্রি করেও বেশ ভালো দাম পাওয়া যায়।

সম্পর্কিত খবর

    শুধু জমিতেই নয় যে কেউ এই সবজি বাড়ির ছাদে কিংবা টবে করে বারান্দাতেও চাষ করতে পারেন। কৃষকদের একঘেয়েমি ফসল চাষ থেকে ফিরে এনে আধুনিক কৃষিতে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। পরীক্ষামূলক ভাবে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার সদর উপজেলার তিলকপুর ও রাণীনগর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে পলি জমিতে সম্পন্ন জৈব ও মালচিং পদ্ধতিতে সবুজ ও হলুদ রঙের শীতকালীন স্কোয়াশ সবজির চাষ করা হচ্ছে।

    অল্প পরিশ্রম ও কম কীটনাশকের ব্যবহার করে সম্পন্ন বিষমুক্ত ভাবে এই সবজি চাষ করা সম্ভব। বাজারে এর চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় এই সবজি চাষে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব। শীতকালীন সবজি হওয়ায় বছরের অক্টোবর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে এই সবজি চাষে ফলন অনেক বেশি হয়।

    রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কৃষক নিরাঞ্জন চন্দ্র সরকার বলেন, আমি কৃষি অফিসের উৎসাহে ও সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে স্কোয়াশ চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছি। কৃষকরা স্বল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ার জন্য উচ্চ ফলনশীল জাতের এই বিদেশী সবজি চাষ করতে পারেন। বর্তমানে বাজারে স্কোয়াশের প্রতি কেজির দাম ২৫-৩০টাকা। আমি আগামী বছর এর চাষ আরো সম্প্রসারিত করবো।

    একই এলাকার কৃষক রবিউল হাসান, হাসেম আলীসহ অনেকেই বলেন, নতুন এই সবজির চাষ দেখে আমরাও উদ্বুদ্ধ হয়েছি। আগামী বছর কৃষি বিভাগের সহযোগিতা নিয়ে এই সবজির চাষ শুরু করবো। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকার মানুষরা নিরাঞ্জনের স্কোয়াশের ক্ষেত দেখতে আসছেন।

    রাণীনগরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, এলাকার কৃষকদের স্কোয়াশ চাষে উদ্বুদ্ধ করতেই নিরাঞ্জনকে কৃষি অফিস থেকে স্কোয়াশ চাষের সব উপকরণ সরবরাহ করেছি। এই প্রথম উপজেলায় জৈব পদ্ধতিতে সম্পন্ন বিষমুক্ত ভাবে স্কোয়াশের চাষ করা হয়েছে। প্রতিদিনই আগ্রহী কৃষকরা স্কোয়াশ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। আমি আশাবাদী আগামীতে উপজেলায় এই স্কোয়াশ চাষের নতুন দ্বার উন্মোচন হবে এবং আধুনিক কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলবে।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ বলেন, জেলায় এই প্রথম পরীক্ষামূলক বিদেশি সবজি স্কোয়াশের চাষ হচ্ছে। সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ ও উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। বিদেশি এই সবজিটি অপ্রচলিত হলেও খুবই লাভজনক এবং কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও এই সবজি রপ্তানি করা সম্ভব। আগামীতে এই সবজির চাষ ও চাহিদা বাড়বে বলে আমি আশাবাদী।

    পূর্বপশ্চিমবিডি/জেএস

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close