‘কাকে গ্রেপ্তারের আদেশ দিবো এটা একান্তই আমার ব্যাপার’

ঠাকুরগাঁওয়ে গ্রাম্য সালিশ অমান্য করায় এক যুবককে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ৫নং দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: সোহেল রানার বিরুদ্ধে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটা আমার ইউনিয়ন। কিভাবে পরিষদ চালাতে হয় আর কাকে গ্রেপ্তারের আদেশ দিবো কাকে দিবো না এটা একান্তই আমার ব্যাপার।’

জানা যায়, ইউনিয়নের বেংরোল জিয়াবাড়ি এলাকার আব্দুল রাজ্জাকের মেয়ে মাসুদা আক্তার (২৩) ২৫ জানুয়ারি তার স্বামী পজির উদ্দীনের (২৫) বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দেন। এরপর পজির উদ্দীনকে ৩ ফেব্রুয়ারি গ্রাম সালিশে উপস্থিত হওয়ার জন্য চেয়ারম্যান একাধিক ভুলে ভরা একটি নোটিশ পাঠান। কিন্তু পজির উদ্দীন সালিশে উপস্থিত না হয়ে তার তালাকনামা চেয়ারম্যানকে পাঠান।

এতে গ্রাম সালিশ অমান্য করার অভিযোগ এনে চেয়ারম্যান পজির উদ্দীনকে গ্রেপ্তার করতে গ্রাম পুলিশকে আদেশ করেন। পরবর্তীতে গ্রাম পুলিশ পজির উদ্দীনের বাসায় গিয়ে তাকে মারধর করে। এ সময় পজির উদ্দীনকে পাঠানো চেয়ারম্যানের চিঠিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে পজির উদ্দীনকে চেয়ারম্যান সোহেল রানা মুঠোফোনে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে।

এ ঘটনায় পজির উদ্দীন বলেন, ‘আমাকে গত বৃহস্প্রতিবার গ্রাম আদালতে হাজির হতে বলেছিলেন চেয়ারম্যান। কিন্তু আমি সময় মতো হাজির হতে পারিনি বলে চৌকিদার দিয়ে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান তিনি। আর এই নোটিশ ভাইরাল হলে চেয়ারম্যান আমাকে ফোনে নানান ধরনে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। আমি ওনাদের ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারি না।’

ঠাকুরগাঁও জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এডভোকেট মো: ইমরান হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান কাউকে গ্রেপ্তারের আদেশ দিতে পারবেন কিনা সেই আইন আমার জানা নেই। তবে তিনি আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করতে পারেন। গ্রেপ্তারের আদেশ বিজ্ঞ আদালত ও থানা পুলিশ দিতে পারেন। ইউপি চেয়ারম্যান নয়।’

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এলাকাবাসী জানায়, চেয়ারম্যান সোহেল রানা যা ইচ্ছা তাই করেন। কেউ কথা না শুনলে হুমকি প্রদান করেন। চৌকিদার দিয়ে হয়রানি ও নির্যাতন করেন।

পূর্বপশ্চিমবিডি/জেএস