প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আসামি, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে উত্যক্ত ও ব্ল্যাকমেইল করে আত্মহত্যার প্ররোচনার ঘটনায় মিরাজ হাসান (২১) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে পুলিশ এখনো আসামিকে গ্রেপ্তার করেনি। আসামি প্রকাশ্যেই এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ওই উপজেলার আরাজী আলমপুর গ্রামের মিরাজ লোহাগাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাতের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। এই সরলতার সুযোগ নিয়ে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে মিরাজ। পরবর্তীতে তাকে টাকা দেওয়া ও তার কথা মতো না চললে ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল সে। এছাড়াও মিরাজ নুসরাতকে বিভিন্ন সময়ে মারধর ও প্রচণ্ডভাবে মানসিক নির্যাতন করতো।
সম্পর্কিত খবর
এ বিষয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠকও হয়। ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর নুসরাত স্কুল হতে বাড়ি ফেরার পথে মিরাজ তার গতিরোধ করে শ্লীলতাহানি ও এক ঘণ্টার মধ্যে টাকা না দিলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে নুসরাত। যার প্রমাণ স্বরূপ স্বহস্তে লিখিত চিঠি এবং সহপাঠীদের এই সব বিষয় জানিয়ে যান।
এব্যাপারে পীরগঞ্জ থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে। পরে ঐ ছাত্রীর বাবা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতের দ্বারস্থ হলে, বিজ্ঞ আদালত মামলা নথিভুক্ত করে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য পীরগঞ্জ থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। অপরদিকে ওই যুবককে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে একাধিকবার মানববন্ধন করেছে স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
নুসরাতের কয়েকজন সহপাঠী জানান, নুসরাতকে মিরাজ বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা নিতো। তাকে নিয়ে ঘুরতে যেত। নুসরাত যেতে না চাইলে খারাপ ভাষায় গালিগালাজ ও গায়ে হাত তুলত। যদি আমরা মুখ খুলি তাহলে আমাদের খবর আছে বলে তার বখাটে বন্ধুদের দিয়ে হুমকি দিতো। আমরা বেয়াদব নেশাখোর মিরাজের শাস্তি চাই। মিরাজ এখনো কিভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় পুলিশের কাছে আমাদের প্রশ্ন? আমরা মিরাজ ও তার মাদকাসক্ত বখাটে বন্ধুদের ভয়ে স্কুল যেতে পারি না। না জানি কখন কি হয়।
নুসরাতের বাবা বলেন, আমার মেয়ে যেদিন আত্মহত্যা করে, সেদিন পুলিশকে আত্মহত্যার প্রমাণ হিসেবে চিঠিগুলো দেয়া হলেও পুলিশ তা গ্রহণ করেননি। থানায় অভিযোগ দিতে গেলেও তা গ্রহণ করেননি। আমরা গরিব বলে কি বিচার পাবো না। আমার মতো আর কোন বাবা-মায়ের বুক যেন খালি না হয় সে জন্য অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। মিরাজ ও তার পরিবারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে পীরগঞ্জ থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মামলা তদন্তনাধীন অবস্থায় রয়েছে। এখনোই কিছু বলতে পারবো না।
পূর্বপশ্চিম/এএ/এসকে