• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

মনিরামপুরে করোনা টিকার নিবন্ধন বন্ধ

প্রকাশ:  ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৭:৩৪
মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি

যশোরের মনিরামপুরে ফের করোনার টিকার নিবন্ধন বন্ধ রয়েছে। গত তিন দিন ধরে টিকার জন্য নতুন করে কেউ আবেদন করতে পারছেন না। প্রয়োজনীয় সব তথ্য উপস্থাপন করে সাবমিট করলে কেন্দ্র পূর্ণ দেখাচ্ছে। মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টিকার কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করলে এ জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। গেল কয়েকমাস আগেও সপ্তাহ খানেক এ উপজেলায় টিকার নিবন্ধন বন্ধ ছিল।

মনিরামপুরে করোনা টিকার নিবন্ধন বন্ধ থাকার বিষয়টি নজরে এসেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছেন হাসপাতাল প্রধান ডা. তন্ময় বিশ্বাস।

উপজেলার মাহমুদকাটি গ্রামের রাসেল হোসেন নামে এক যুবক বলেন, বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে আমার নিজের জন্য টিকার নিবন্ধনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। সব তথ্য দেওয়ার পর কেন্দ্র পূর্ণ দেখাচ্ছে।

মনিরামপুর বাজারের তাজাম্মুল হোসেন নামে এক কম্পিউটার অপারেটর বলেন, তিনদিন ধরে করোনা টিকার নিবন্ধনের কাজ করতে পারছি না। কেন্দ্র পূর্ণ দেখিয়ে অন্য কেন্দ্র উল্লেখ করতে বলা হচ্ছে।

এদিকে মনিরামপুরে এখনো ১ লাখ ১১ হাজারের বেশি মানুষ করোনা টিকার বাইরে রয়েছেন। গ্রাম পর্যায়ে টিকা নিয়েও মানুষকে তাতে আগ্রহী করা যাচ্ছে না। তাঁদের টিকার আওতায় আনতে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয় প্রশাসন।

গতকাল বুধবার (২৬ জানুয়ারি) উপজেলার সব ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান, সচিব ও মেম্বরসহ মসজিদের ইমামদের নিয়ে টিকা সংক্রান্ত করণীয় সভা হয়েছে। সেখানে টিকায় মানুষকে আগ্রহী করতে মসজিদে ঘোষণা দিতে ইমামদের আহবান জানানো হয়েছে। এছাড়া বাড়ি বাড়ি খোঁজ নিয়ে কারা এখনো টিকার বাইরে রয়েছে তাঁদের তথ্য পরিষদে জমা দিতে বলা হয়েছে গ্রাম পুলিশদের।

রোহিতা ইউপির সরসকাঠি-কাশিমপুর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন বলেন, সপ্তাহে দুদিন গ্রামে গ্রামে টিকা নিয়ে আসছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। সেখানে যেয়ে টিকা নিতে মুসুল্লিদের উৎসাহিত করতে ইমামদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এ জনপ্রতিনিধি বলেন, টিকার রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কাউকে পরিষদের সেবা না দেওয়ার ব্যাপারে একটা অলিখিত সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।

রোহিতা ইউপির সচিব কৃষ্ণ গোপাল মুখার্জি বলেন, যাঁরা এখনো করোনার টিকা নেননি তাঁদের তথ্য বাড়ি বাড়ি যেয়ে সংগ্রহ করতে

গ্রাম পুলিশ ও মেম্বরদের বলা হয়েছে। তাঁদের দেওয়া তথ্য নিয়ে সবাইকে টিকার আওতায় আনা হবে।

এদিকে করোনার টিকা শতভাগ করতে হাসপাতালের পাশাপাশি সপ্তাহের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার গ্রাম পর্যায়ে সম্প্রসারিত টিকাদান (ইপিআই) কেন্দ্রে ৩০০ করে টিকা নিয়ে হাজির হচ্ছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। ব্যাপক হারে প্রচারণা না থাকায় টিকা নিতে মানুষ সেখানে ভিড়ছেন না বলে তথ্য মিলেছে।

খেদাপাড়া ইউনিয়নে দায়িত্বরত স্বাস্থ্য সহকারী মহিতোষ মণ্ডল বলেন, মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) খেদাপাড়া গ্রামে একটি কেন্দ্রে ৩০০ করোনার টিকা নিয়ে গিয়েছি। ২২৭ জনকে টিকা দিতে পেরেছি।

মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রমতে, উপজেলায় ১২ বছরের উর্ধ্বের ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫২ জনকে করোনা টিকার আওতায় আনার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তারমধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ২ লাখ ৭৪ হাজার ৩৮৩ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৯৫ জন। আর বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ২ হাজার ২৯৩ জন।

সূত্রটি বলছে, হাসপাতালে সিনোফার্ম ও ফাইজারসহ চার প্রকারের ২০ হাজার ৩৩৯ ডোজ টিকা মজুদ রয়েছে। টিকার আবেদন জমা আছে ১৫ হাজারের বেশি।

মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তন্ময় বিশ্বাস বলেন, টিকার নিবন্ধন বন্ধ থাকার বিষয়টি গতকাল বুধবার রাতে জানতে পেরে সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলেছি। টিকার নিবন্ধনের বিষয়টি ঢাকা থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। সেখানে যোগাযোগ করে দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করা হবে।

তিনি বলেন, সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার ইপিআই কেন্দ্রগুলোতে করোনার টিকার কাজ চলমান থাকবে। কয়েকজন শিক্ষার্থী এখনো টিকার বাইরে রয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে তাদের টিকার কাজ সম্পন্ন করা হবে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/জিএস

মনিরামপুর,করোনা টিকা,নিবন্ধন বন্ধ

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close