• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

ফসল নষ্ট করে কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়, নিরব প্রশাসন

প্রকাশ:  ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:২২
সাভার প্রতিনিধি

নিয়মিত ইটভাটায় মাটি কেটে নেওয়ার ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে জনজীবনসহ তিন ফসলি জমি। এমন দৃশ্য চোখে পড়ে ধামরাই উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের রঘুনাথপুর এলাকায়সহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। নিজেদের ইচ্ছে মতো মাটি কেটে নিচ্ছে মাটি ব্যবসায়ী ও ইউভাটার মালিকরা। যেমন নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি ও রাস্তার, তেমনি ঝুঁকিতে রয়েছে মানুষের জীবন। তবে এসব বিষয়ে প্রশাসন অনেকটা নীরব ভূমিকা পালন করছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের রঘুনাথপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মোয়াজ্জেম হোসেন মেম্বার ও নাছির হোসেন নামের দুই ব্যক্তি কৃষকদের প্রলোভন দেখিয়ে ভেকু মেশিন দিয়ে তিন ফসলি জমির মাটি কেটে নিচ্ছে। এতে সরিষা ক্ষেতের জমির মাটি প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়।

অভিযোগ করে উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক আ: মান্নান বলেন, আমাকে না জানিয়ে মাটি ব্যবসায়ী নাছির হোসেন আমার সরিষা ক্ষেত এর উপর দিয়ে মাটির পথ বানিয়ে ট্রাক নিতেছে। এতে আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমি বাঁধা দিলে নাছির আমাকে মারধর করতে আসে।

উপজেলার রঘুনাথপুর এলাকায় কৃষক আওলাদ হোসেন বলেন, আমি ৮৭ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে সরিষা চাষ করেছি। মোয়াজ্জেম মেম্বার আমার সরিষা ক্ষেত নষ্ট করে মাটির ট্রাক নিতাছে। আমাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও। এখন পযর্ন্ত আমাকে আর কোনো টাকা পয়সা দেয়নি। টাকা চাইলে শুধুই টালবাহানা করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের কান্দাপটল গ্রামের জমির মালিক বলেন, আমার ১’শত ফসলি জমির উপরের দিয়ে মাটির পথ তৈরি করেছে মাটির ব্যবসায়ী নাছির, আমি বাঁধা দিলেও আমার কথা না শুনে জমিতে কালা গাছ ও কাঁঠাল গাছ নষ্ট করে লিগ তৈরি করছে। এতে আমার প্রায় এক লাখ টাকা ক্ষতি হইছে। নাছির প্রভাবশালী হওয়ায় কিছু বলতে পারি না।

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ,বাইশাকান্দা, বাস্তা, মাদারপুর, কালামপুর, জালসা, ধলকুন্ড, ভালুম, গাড়াইল, দেপাশাই, নান্নার, জয়পুরা, বেলিশ্বর, সুয়াপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ভেকু মেশিনের মাধ্যমে ট্রাক দিয়ে ফসলি জমির মাটি বিভিন্ন ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জমির মালিকরা না বুঝেই তা মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন।

এ বিষয়ে মাটি ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেম হোসেন মেম্বার বলেন, জমির মাটি আমি ক্রয় করে কাটতেছি।

আপনি কৃষকদের ফলসি জমির উপর দিয়ে জোর করে পথ তৈরি করে ট্রাক দিতেছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি ক্ষতিপূরণ দিয়ে পথ তৈরি করেছি। জোর করে ট্রাক নিতেছি কথাটি মিথ্যা।

এ ব্যাপারে মাটি ব্যবসায়ী নাছির হোসেনকঁ মুঠোফোনে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফ হাসান বলেন, ইটভাটায় মাটি কেটে নেওয়ার ফলে ফসলি জমির পরিমান কমে যাচ্ছে। এতে ফসল উৎপাদন দিন দিন কমে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকি বলেন, রাতের আঁধারে জমির মালিকদের সাথে আঁতাত করে মাটি বিক্রি করছে মাটি ব্যবসায়ীরা। এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পূর্বপশ্চিমবিডি/জিএস

কৃষি জমি,ইটভাটায়,নিরব প্রশাসন,সাভার

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close