• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

বিতর্ক যার সঙ্গী

প্রকাশ:  ০৪ মার্চ ২০২২, ২৩:০৫
স্পোর্টস ডেস্ক

ক্রিকেটের কিংবদন্তি শেন ওয়ার্ন ছিলেন একজন বৈচিত্র্যময় চরিত্রের অধিকারী। হয়তো তিনি সব সময় খবরে থাকতে পছন্দ করতেন।

বিশ্ব ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়া শেন ওয়ার্নের বিতর্ক পিছু ছাড়েনি কখনো। অবসরেও একাধিক কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছে তার।

১৯৯৫ সালে ওয়ার্নের প্রথম স্ত্রী সিমোনে কাল্লাহানের সঙ্গে বিয়ে হয়। তিন সন্তানের জন্ম দেন তারা। ২০০৫ সালে সিমোনের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। ২০০০ সালে এক ব্রিটিশ নার্সকে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা পাঠানোয় তার সহ-অধিনায়কত্ব কেড়ে নেয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।

শুধু নারীর প্রতি দুর্বলতাই নয়, প্রচুর সিগারেটও খেতেন ওয়ার্ন। একটি ছেলে সেই ছবি তুলে নিয়েছিল। সেই ‘অপরাধে’ ছেলেটিকে মারধর করেন ওয়ার্ন।

ওয়ার্নের সিগারেট প্রেমের কথা জানা যায় তার এক সময়ের সতীর্থ মাইকেল ক্লার্কের কাছ থেকে। ২০০৬ সালে অ্যাশেজ সিরিজের আগে এক অনুশীলন ক্যাম্পে যাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া দল। সেই সময় শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া বাকি সব কিছু নিয়ে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। ওয়ার্ন বেছে নিয়েছিলেন সিগারেট।

অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক ক্লার্ক এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ওয়ার্ন সিগারেট খেতে পছন্দ করে। ও সেই ক্যাম্পে যাওয়ার আগে জানিয়ে দিয়েছিল সিগারেট না নিয়ে যাবে না। ওয়ার্ন তিন জোড়া অন্তর্বাস এবং মোজার বদলে সিগারেট নিয়ে গিয়েছিল।

ক্লার্ক বলেন, অন্ধকারের মধ্যে সবাই স্লিপিং ব্যাগের ভিতরে। শুধু একটা জায়গায় কমলা রঙের একটা আলো। স্লিপিং ব্যাগের মধ্যে ধূমপান করছে ওয়ার্ন।

১৯৯৭ সালে লন্ডনে অ্যাশেজ খেলতে গিয়েও সিগারেট খেতে দেখা গিয়েছিল ওয়ার্নকে। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। ২২ বছরের ক্রিকেট জীবনে সিগারেট ছাড়েননি ওয়ার্ন।

এক ‘নিকোটিনের পরিবর্তন’ সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন তিনি। সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার চুক্তি ছিল তাদের সঙ্গে। কিন্তু চার মাসের মধ্যে সেই চুক্তি ভেঙে যায়। কারণ বারবাডোজে গিয়ে সিগারেট খেতে দেখা গিয়েছিল তাকে।

২০০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই সময় সংবাদমাধ্যমে ফের বিতর্কের শিরোনামে ওয়ার্ন। অভিযোগ ওঠে আবার এক মহিলাকে যৌনবার্তা পাঠিয়েছেন তিনি। কিন্তু যে মহিলা এ অভিযোগ করেছিলেন তার বিরুদ্ধে সেই দেশে অবৈধভাবে টাকা নেওয়ার মামলা ছিল।

সিমোনের সঙ্গে ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক ফের জোড়া লাগতে শুরু করে ২০০৭ সালে। ইংল্যান্ডে একসঙ্গে গিয়েছিলেন তারা। কিন্তু হঠাৎ বিপত্তি। ইংল্যান্ড থেকে দেশে ফেরেন সিমোনে। অন্য এক মহিলাকে বার্তা পাঠাতে গিয়ে ভুল করে সিমোনেকে পাঠিয়ে ফেলেছিলেন। তাতেই আবার ভেঙে যায় তাদের সম্পর্ক।

২০১০ সালে ইংলিশ অভিনেত্রী এলিজাবেথ হার্লেকে চুমু খেতে দেখা যায় ওয়ার্নকে। সেই ঘটনা জানাজানি হতেই টুইট করে ওয়ার্ন জানান, সিমোনের সঙ্গে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে; কিন্তু সেই খবর জানতেন শুধু তার পরিবার এবং কাছের বন্ধুরা।

হার্লের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার সময় মেলবোর্নের এক বিবাহিত ব্যবসায়ীকে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা পাঠানোর খবর সামনে আসে। কিন্তু ঘটা করে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে ওয়ার্নের বাড়িতে থাকতে আসেন হার্লে। ২০১১ সালে তাদের বাগদান হবে বলেও জানানো হয়; কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি।

শুধু ব্যক্তিগত জীবনেই নয়, ওয়ার্ন বিতর্কে জড়িয়েছেন তার কর্মজীবনেও। ১৯৯৮ সালে জানা যায়, তিন বছর আগে শ্রীলংকার এক ব্যক্তিকে টাকার বিনিময়ে পিচ এবং আবহাওয়া সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন ওয়ার্ন। নিজের আত্মজীবনীতেও সেই কথা উল্লেখ করেছিলেন তিনি।

১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপের আগে দু’ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় ওয়ার্নকে। এক সংবাদমাধ্যমকে শ্রীলংকার অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গার নামে খারাপ কথা বলেন তিনি। সেই কারণে আইসিসি তাকে নির্বাসিত করেছিল দু’ম্যাচের জন্য।

২০০৩ বিশ্বকাপ শুরুর আগের দিন বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল ওয়ার্নকে। ডোপ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ওয়ার্ন যদিও বলেছিলেন তিনি মায়ের দেওয়া ওষুধ খেয়েছিলেন তার ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য। কিন্তু সেই অপরাধে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড তাকে এক বছরের জন্য নির্বাসিত করে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে।

২০১৩ সালে বিগ ব্যাশ লিগে খেলার সময় এক ক্রিকেটারকে খারাপ কথা বলা, তার শরীরে অশালীনভাবে হাত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওয়ার্নের বিরুদ্ধে। সেই কারণে এক ম্যাচের জন্য নির্বাসন এবং ৪৫০০ ডলার জরিমানা দিতে হয় তাকে।

পূর্ব পশ্চিম/জেআর

শেন ওয়ার্ন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close