এমপিদের নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে আওয়ামী লীগ
এবারের উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নিজ দলের সংসদ সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। এমপিদের বারবার সতর্ক করতে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হচ্ছে দলটির হাইকমান্ডকে।
সম্পর্কিত খবর
এদের মধ্যে কেউ কেউ মৌন সমর্থন দিচ্ছেন পছন্দের প্রার্থীদের। কেউবা নিজ পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী করছেন। কেউবা প্রকাশ্যেই প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নামছেন।
আতাহার ইশরাক, যিনি শাহাব চৌধুরী নামেই বেশি পরিচিত। তিনি নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে তিনি। সম্প্রতি একামুলের একটি বক্তৃতার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি বলেছেন, তার ছেলেকে ভোট না দেওয়া হলে তিনি উন্নয়ন বন্ধ করে দিবেন।
এদিকে, নাটোরে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় অপহৃত হয়ে যান। তাকে অপহরণে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ও তার সমর্থকরা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, টাঙ্গাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
হাতিয়ার দুইবারের সাবেক এমপি আয়েশা ফেরদৌস ও তার সন্তান আশিক আলী- দুজনেই উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তিনবারের সাবেক এমপি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর পরিবারের সদস্য তারা। রাজনৈতিক উত্তরাধিকার তৈরি করতেই তিনি পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী করেছেন।
একইরকম ঘটনা ঘটেছে নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, বগুড়াসহ বেশ কয়েকটি জেলায়। যেখানে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা নিজ পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী করছেন।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন যেন এমপিরা উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার থেকে বিরত থাকেন।
হাইকমান্ডের এই নির্দেশনা সম্পর্কে জানতে চাইলে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, “আমরা দলীয় সংসদ সদস্যদের নির্দেশনা দিয়েছি যেন, কেউ তারা পরিবার বা স্বজনদের প্রার্থী না করেন। কারণ, আমরা চাই নির্বাচন প্রতিযোগিতাপূর্ণ হোক, স্বতস্ফুর্ত হোক।”
“আমরা তাদের মনে করিয়ে দিয়েছি যে, প্রত্যেক এমপিকে উপজেলা নির্বাচনের নীতিমালা মেনে চলতে হবে। নির্বাচনে এমপিদের প্রভাব বিস্তার করা যাবে না,” বলছিলেন জাতীয় সংসদের এই হুইপ।
আওয়ামী লীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন বলেন, “দলের সিদ্ধান্ত পরিস্কার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর নির্বাচন চান। কোনো ধরনের অনৈতিক চর্চা তিনি মেনে নেবেন না।”
দলীয় সূত্র বলছে, আগামী সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা দলের সংসদীয় কমিটির সভা ডাকতে পারেন। এতে কড়া নির্দেশনা দিতে পারেন তিনি।