বিএনপির কর্মসূচির প্রতি জনগণের সমর্থন রয়েছে: রিজভী
দেশে ভয়াবহ দুঃশাসন চলছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের সীমাহীন নিপীড়ন-নির্যাতনের কারণে দেশের জনগণ এখন ভয়ে কথা বলতে পারে না। চোখের ইশারায় কথা বলে।
বিএনপির নেতাকর্মী ও সমমনা দলের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, যে লিফলেট বিতরণ করছি তা প্রতি ঘরে ঘরে নিয়ে যাবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সবার হাতে হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবেন। এটা শুধু শহরে বা নগরে দিলেই হবে না, থানা-ইউনিয়ন পর্যায়ে এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রতি ঘরে ঘরে নিয়ে যেতে হবে। কারণ এই কর্মসূচির প্রতি জনগণের সমর্থন রয়েছে। সরকারের অনাচারের বিরুদ্ধে আপনারা যে লিফলেট বিতরণ করছেন, জনগণের ভাষা এই লিফলেটের মধ্যে লিপিবদ্ধ হয়েছে।
সম্পর্কিত খবর
মঙ্গলবার বিকালে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী অভিযোগ করেন, কারাগারের ভেতরেও বিএনপির সিনিয়র নেতাকর্মীরা নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সাবেক যারা এমপি কারাগারে তারা ডিভিশন পান। কিন্তু বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের ডিভিশন বাতিল করে সাধারণ কয়েদিদের জায়গায় রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের জনগণ এখন কথা বলতে ভয় পায়। আমরা যখন লিফলেট বিতরণ করতে যাই অনেকেই আমাদের সঙ্গে হাত মেলাই। চোখের ভাষায় বোঝা যায় তাদের সম্মতি আছে আমাদের কর্মসূচিতে। বোঝা যায়, তারা আতঙ্কে আছে। এমনও হয়েছে আমরা যখন লিফলেট বিতরণ করতে যাই একজন প্রাইভেট চাকরি করে লিফলেট হাতে নিয়ে তিনি বলেন- এটা প্রকাশ্যে পড়া যাবে না বাসায় নিয়ে পড়বো।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের সীমাহীন নিপীড়ন নির্যাতনের কারণে দেশে দুঃশাসন এতটাই তীব্র হয়েছে যে স্বাভাবিকভাবে জীবন-যাপন করা যাচ্ছে না। যারা সত্য কথা বলবে তাদের নামে হবে নাশকতাসহ ভয়ংকর সব মামলা। এই দেশে যখন উপনিবেশ শাসন ছিল তখনও রাজনীতিবিদদের নামে মামলা দেওয়া হতো, কিন্তু তখন তাদেরকে সম্মান করতো এটা কারাগারে হোক বা কারাগারের বাইরে হোক। বর্তমানের মতো এত নিষ্ঠুর অবিচার নির্যাতন অসম্মান করা হতো না। আওয়ামী লীগের এই নির্যাতন নিপীড়ন অতীতের স্বৈরাশাসকের সব রেকর্ড এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে মধ্যযুগীয় বর্বরতা কেউ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
রিজভী বলেন, এদেশে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম হয়েছে আন্দোলন হয়েছে। নব্বইয়েও সরকারের বিরুদ্ধেও আন্দোলন হয়েছে। সেই গণতন্ত্রের আন্দোলনের চিহ্ন এখন আমি বয়ে বেড়াচ্ছি। এখনো কেন এই দেশে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করতে হবে? এখনও কেন মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য কথা বলতে হচ্ছে। এগুলোর জন্য সেলিম, সাজু, দিপালী সাহা, শাজাহান সিরাজ আত্মদান করেছে। সর্বোপরি ডাক্তার মিলন, জিহাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে ওই সময়ে সরকারের পতন হয়েছে। তখন ছাত্র রাজনীতি করতাম। আমি তো দেখছি সেই যুগে যে জুলুম নির্যাতন চলেছে তার চেয়ে আরো নির্মম বর্বর অনাচার পৈচাশিক এই আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারী দুঃশাসন। ওই সময়ের সরকার তো প্রতারণা অত্যাচার করে নয় বছর শাসন করেছে। বর্তমান স্বৈরশাসক তো মহাপ্রতারণা অত্যাচারের সঙ্গে সরকারি প্রশাসনিক নির্যাতনের খর্ব জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। আর মিডিয়াকে ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত বিরোধীদলের উপর নানা ধরনের কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে।
তিনি জানান, সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে ১০৫ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে ৪টি, আসামী করা হয়েছে ৩২৫ জনকে।