• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

হরতালেও উত্তাপ নেই বেনাপোল স্থলবন্দরে: চলেছে আমদানি-রপ্তানি

প্রকাশ:  ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:০৩
বেনাপোল প্রতিনিধি

বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে আজ রোববার দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে কোন প্রভাব পড়েনি। হরতাল ডেকে মাঠে নেই দুই দলের কোন নেতাকর্মী। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যসহ কাষ্টমস ও বন্দরের কার্যক্রম চলছে স্বাভাবিক ভাবে। পাসপোর্টযাত্রী চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

হরতালে খুলনা-বেনাপোল, কলকাতা-খুলনা মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করেছে। দুরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও বেনাপোল থেকে যশোরের মধ্যে সকল ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করেছে। ব্যাংক, বীমা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অফিস আদালত খোলা ছিল। বন্দরে কার্যক্রম চলেছে পুরোদমে। হ্যান্ডলিং শ্রমিকরা বন্দর অভ্যন্তরে পণ্য লোড আনলোড কাজে কর্মব্যস্ত রয়েছে। ভারত থেকে ফেরত আসা বেশ কিছু পাসপোর্টযাত্রী বেনাপোলের বিভিন্ন পরিবহন অফিসে আটকা পড়ে আছে। সন্ধ্যার পর দুরপাল্লার বাস চলাচল করলে তারা গন্তব্যে চলে যাবেন বলে জানান পরিবহন ম্যানেজাররা। অনেকে বিকল্প হিসেবে মোটরসাইকেল, ভ্যান রিক্সা ও নসিমনে করে গন্তব্যে চলে যেতে দেখা গেছে। হরতালের পক্ষে বিপক্ষে কাউকে পিকেটিং করতে দেখা যায়নি।

বেনাপোল, শার্শা, নাভারন ও বাগআঁচড়ার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশী টহল দিতে দেখা গেছে। উপজেলায় মাঠে নেই বিএনপি ও জামায়াতের কোনো নেতা-কর্মীরা। অনেকটাই আত্মগোপনে চলে গেছেন তারা। মূলত গ্রেফতার এড়াতেই কেউ প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি পালন করতে আসছেন না বলেই বিএনপি নেতাদের দাবি। এসব নেতারা মাঠে না থাকায় নেতাকর্মীরা অনেকটা হতাশ। অনেক নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন বড় বড় নেতারা সরকারী দলের নেতাদের সাথে সমঝোতা করে চলেন এ কারণে কোন আন্দোলন করছেন না এলাকায়।

বেনাপোল শার্শায় হরতাল না হওয়ার ব্যাপারে বিএনপির শার্শা উপজেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক আবুল হাসান জহির বলেন, বেনাপোল-শার্শায় অবরোধ হরতাল পালন করা কঠিন ব্যাপার। এখানে হরতাল আহবান করলে প্রতিপক্ষ ও পুলিশ জোর প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মূলত সহিংসতা এড়ানোর জন্য আমরা এখানে হরতাল কর্মসূচি এড়িয়ে চলি। শুধু বেনাপোল বন্দর নয়, শার্শা, নাভারন বাগআঁচড়ায় আমরা হরতাল পালন করতে পারি না। এখানকার পরিস্থিতি একটু আলাদা।

শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখনও আমরা হরতালের পক্ষে মাঠে নামতে পারেনি। হরতালের সময় এখানে কাজ হয়েছে। আসলে বেনাপোল বন্দরকে সচল রাখতে অবরোধ হরতাল থেকে সবাইকে সরে আসতে হবে। অবরোধ হরতালের কারণে দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো ভেঙ্গে পড়ে।

বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভূইয়া ও শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এস আকিকুল ইসলাম জানান, হরতালে বেনাপোল বন্দরসহ শার্শা উপজেলার কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ টহল দিচ্ছে। যে দলই বিরোধীদলে থাকুক না কেন এখানে হরতাল আসলে হয় না বলে আমি জেনেছি। এখানে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক সময়েরই মতো চলে। কোনো ঝামেলা নেই হরতালের দিনে। নেই কোন পিকেটিং, মিছিল সমাবেশ। এ কারণে এখানে নিরাপত্তা নিয়েও কোন সমস্যায় পড়তে হয় না আমাদের।

বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল ইসলাম জানান, হরতালে বেনাপোল কাস্টম হাউজ ও চেকপোস্ট কার্গো শাখায় কাজ চলেছে। হরতালে ব্যাংক খোলা থাকায় রাজস্ব আদায়ে কোন প্রভাব পড়েনি। কাস্টম কর্মকর্তা ও ক্লিয়ারিং এজেন্টরা স্বাভাবিক কাজকর্ম করেছে। সকাল থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি স্বাভাবিক ভাবে চলেছে।

তিনি বলেন, হরতালে বন্দরে কোন প্রভাব পড়েনি। সকাল থেকে ভারত থেকে আসা আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাক থেকে পণ্য আনলোড ও বাংলাদেশী ট্রাকে পণ্য লোড অব্যাহত আছে। দুপুরের পর থেকে এসব ট্রাক পণ্য নিয়ে বন্দর ত্যাগ করতে শুরু করবে। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে এ কারনে বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ পাসপোর্টযাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।

বেনাপোল স্থলবন্দর
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close