• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই,গ্রেফতারে ছাত্রলীগ পরিচয়ে পেলেন ছাড়া

প্রকাশ:  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩:২২
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগে আটকের আট ঘণ্টা পর দুজনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। আটক হওয়ার পর ফেরদৌস হাওলাদার নামের একজন রাজধানীর রামপুরা থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি পরিচয় দিয়েছেন। শাকিল আহম্মেদ নামের অন্যজন নিজেকে কোতোয়ালি থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি পদপ্রত্যাশী বলে জানিয়েছেন।

শুক্রবার(১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত দুইটার দিকে হাতিরঝিলের বেগুনবাড়ি অংশের সিদ্দিক মাস্টারের ঢাল থেকে তাঁদের আটক করার কথা প্রকাশ করে হাতিরঝিল থানা-পুলিশ।পরে শনিবার সকাল ১০টায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

একজন ভুক্তভোগী পূর্ব পশ্চিমকে বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে মোটরসাইকেলে করে হাতিরঝিল হয়ে বাসায় ফিরছিলেন তিনিসহ দুজন। রাত দুইটার দিকে সিদ্দিক মাস্টারের ঢাল এলাকায় আসার পর দুই ব্যক্তি ইশারা দিয়ে তাঁদের মোটরসাইকেল থামান। তারপর ‘কোথা থেকে এসেছেন, কোথায় যাচ্ছেন’—এসব প্রশ্ন শুরু করেন। তাঁদের আচরণ ছিল পুলিশের মতো। একপর্যায়ে তাঁদের শরীর তল্লাশি করে মুঠোফোন এবং মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার নিয়ে চেষ্টা করেন। তখনই হঠাৎ পুলিশের কয়েকজন সদস্য এসে পুরো ঘটনা যাচাই করে দুই ব্যক্তিকে আটক করেন।

ওই ভুক্তভোগীর মতে, অভিযোগ নেওয়ার কথা বলে তাঁদের দুজনকেও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অভিযোগ লেখাও হয়। কিন্তু তাদের অভিযোগকে নথিভুক্ত করা হয়নি। সকাল ১০টা পর্যন্ত অভিযোগ নেওয়া হবে বলে থানায় তাঁদের বসিয়ে রাখা হয়। অভিযোগ নেওয়া হবে না বুঝতে পেরে তাঁরা থানা থেকে বের হয়ে চলে আসেন।

আটক দুজনকে ছাড়িয়ে নিতে রাতেই থানায় ছুটে যান হাতিরঝিল থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল শাওন।তিনি জানান, আটক হওয়া দুজন ছাত্রলীগের পদে নেই। তবে তাঁরা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী, এবং পদপ্রত্যাশী। তিনি দুজনকেই চেনেন। পুরো ঘটনা ভুল–বোঝাবুঝি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের তেমন কিছু নেই।’

আটক শাকিলের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। আর ফেরদৌস হাওলাদারের নম্বর পাওয়া যায়নি।

পুলিশ যা বলল

হাতিরঝিল থানা-পুলিশের এক সূত্র জানায়, দুজনকে আটকের পর প্রথমেই জানার চেষ্টা করা হয় তাঁরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কি না। তাঁরা কোনো উত্তর দেননি। থানায় নিয়ে আসার পর দুজনই ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দেন।

ওই দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয় হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল আলমের নেতৃত্বে। তিনি পূর্ব-পশ্চিম বিডিকে বলেন, ভুক্তভোগী ব্যক্তি অভিযোগ না দেওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

হাতিরঝিল থানা-পুলিশের এক সদস্য বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আজিমুল হকের নির্দেশে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে ডিসি আজিমুল হক বলেন, তাঁরা পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন, বিষয়টি এমন নয়। তাঁদের গভীর রাতে রাস্তায় দেখা গেছে, আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কোনো অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় হাতিরঝিল থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. আওলাদ বলেন, যাঁদের আটক করা হয়েছিল, তাঁরা ছাত্রলীগের নেতা। তাঁদের একজন রামপুরা থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। পুরো ঘটনা ভুল–বোঝাবুঝি। যাঁকে ভুক্তভোগী বলা হচ্ছে, তাঁর সাথে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা হয়ে গেছে। এই কারণে তিনি কোনো অভিযোগ করেননি। এই কারণে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া ওই দুজনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা জিডি (সাধারণ ডায়েরি) নেই।

ছাত্রলীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close