• বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

রাজনৈতিক সংকট সরকারকে মহাবিপদে ফেলে দিতে পারে: দুদু

প্রকাশ:  ২৯ মে ২০২৩, ১৬:৩৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট আওয়ামী লীগ সরকারকে মহাবিপদে ফেলে দিতে পারে বলে এমন মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

সোমবার (২৯ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানবন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং খালেদা জিয়া ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুসহ সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধন হয়।

এর আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দল - ঢাকা মহানগর উত্তর।

মানববন্ধনে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ইদানীং আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্সের নামে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আসছে। বিভিন্ন পত্রিকা লিখছে এটা। পাচার পাওয়া অর্থ তারা দেশে ফিরিয়ে আনছেন। কারণ, এই সরকারি কর্মকর্তারা যদি তাদের বউ-বাচ্চা নিয়ে আমেরিকায় না যেতে পারেন তাহলে এই টাকা সেখানে বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে। এ কারণে আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স আসা বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কিছুতেই স্বীকার করবে না যে তারা খারাপ আছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা স্বীকার করেছে। তিনি পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন আমেরিকা চাইলে বাংলাদেশের ক্ষমতাকে ওলটপালট করতে পারে। অর্থাৎ ৩ তারিখে ভিসানীতি সরকারের নলেজে আনার পরে সরকারের হুঁশ হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি সম্পর্কে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকার একটা ভিসানীতি ঘোষণা করেছেন। এই ভিসানীতি সরকারকে পাঠিয়েছিলো অনেক আগেই, ৩ মে। কিন্তু সরকার প্রকাশ করেছে দুই-তিনদিন আগে। আমি বলবো, এটা সরকার প্রকাশ করেনি। আমেরিকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টুইট করার পর আমরা জানতে পেরেছি। আমেরিকান সরকার একমাত্র বাংলাদেশের জন্যই এই নতুন ভিসানীতি তৈরি করেছে।

প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে বিতর্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছে সরকার এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ভোটের ব্যাপারে যদি একটু এদিক সেদিক হয় তাহলে তাদের (প্রশাসনের) সন্তানরা যারা নিজের যোগ্যতায় ভিসা পেয়ে সেখানে পড়াশোনা করছেন সে সন্তানদের দেশে ফেরত আসতে হবে। কারণ তাদের বাবা- মায়েরা সরকারের পক্ষ নিয়ে ভোটের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন সে জন্য।

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বলেন, আমরা আপনাকে (আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বিপদে ফেলতে চাই না। আপনারা সসম্মানে যেন প্রস্থান করতে পারেন এবং মানুষের কাছে ভুল স্বীকার করতে পারেন সে সুযোগ আমরা দিতে চাই। আমাদের দাবি ১০ দফা। আর মানুষকে মানুষের মতন বাঁচার সুযোগ দেবার জন্য আপনি পদত্যাগ করেন। তা না হলে যে আন্দোলনের মুখোমুখি আপনি হবেন গত ৫২ বছরে এমন আন্দোলন কেউ কখনো দেখেনি।

তিনি বলেন, গত ৫২ বছরের মধ্যে বর্তমান সরকার দেশকে ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে নিয়ে গেছে। সরকার ভয়ংকরভাবে স্বাধীনতাকে বিপন্ন করেছে। মানুষের জীবনকে বিপন্ন করেছে। দেশের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে নিয়ে গেছে। এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই সরকারের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে। এই পার্লামেন্ট তথাকথিত নিশি রাতের পার্লামেন্ট। নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এই কাজগুলো ছাড়া দেশে যে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে তা কাটবে না। এই রাজনৈতিক সংকট ভয়ংকর সংকট। রাজনৈতিক সংকট ঘূর্ণিঝড় বা কালবৈশাখি থেকে তীব্র হতে পারে।

গত ৫২ বছরের মধ্যে দ্রব্যমূল্যের দাম রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে দুদু বলেন, আজ আদার দাম ৫০০ টাকা কেজি। বিএনপির সময় যা ২০-৩০ টাকার বেশি ছিল না। বর্তমানে ৮০ টাকা কেজি মোটা চাল যা বেগম জিয়ার সময় এটা ছিল ১৬ টাকা। শেখ হাসিনা ওয়াদা করেছিলেন ক্ষমতায় আসলে তিনি ১০ টাকা কেজি মোটা চাল খাওয়াবেন। ১০ টাকার সে চাল এখন পাওয়া যায় না। বর্তমানে ৭০ থেকে ৮০ টাকার কমে কোনো মোটা চাল নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম ৩০০ থেকে ৫০০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সরকার যতোদিন ক্ষমতায় থাকবে দ্রব্যমূল্যের দাম ততোদিন বাড়তে থাকবে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

সরকার,রাজনৈতিক,সংকট,শামসুজ্জামান দুদু,বিএনপি,ছাত্রদল
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close