• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

সাঈদীর মৃত্যুতে চিকিৎসককে হত্যার হুমকি, আটক দুই

প্রকাশ:  ১৭ আগস্ট ২০২৩, ১৪:৩০
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াতের নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুর ঘটনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসককে হত্যার হুমকির অভিযোগে নারীসহ দুইজনকে আটক করা হয়েছে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন- তাফসিরুল ইসলাম (২৩) ও হাফিজা মাহবুবা বৃষ্টি (৩২)। তাফসিরুলকে ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। আর বৃষ্টিকে ঢাকার উত্তরা থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাঈদীর মৃত্যু হয়। তিনি হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক চৌধুরী মেশকাত আহমেদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলে ছিলেন এস এম মোস্তফা জামান।

মোস্তফা জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। “হত্যার হুমকি” পাওয়ার পর নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার ধানমণ্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি।

ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. পারভেজ ইসলাম জানান, “ফেসবুক মেসেঞ্জারে প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে ওই চিকিৎসক জিডি করেছেন।”

প্রাণনাশের হুমকিকে জামায়াতের সন্ত্রাসী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাঈদীর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সাঈদীর মৃত্যুকে ঘিরে সহিংস তাণ্ডব শুরু করে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। তারা জনসাধারণের জানমালের ক্ষতির চেষ্টা করে। দেশব্যাপী অনেক জায়গায় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা চালানো হয়। পুলিশ তাদের তৎপরতা প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছে।

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসাবে জামায়াতের নায়েবে আমির সাঈদীর বিচার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর। ৮৩ বছর বয়সী সাঈদী তার আগে থেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো ২০টি মানবতাবিরোধী ঘটনার অভিযোগ আনা হয় সাঈদীর বিরুদ্ধে।

২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এসব মামলায় রায় ঘোষণা করে ট্রাইবুনাল। ঘোষিত রায়ে বলা হয়, ১৯৭১ সালে সংঘটিত হত্যা, লুণ্ঠন, নির্যাতনসহ অন্তত ২০টি মানবতাবিরোধী অভিযোগের মধ্যে আটটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

এর মধ্যে দুটো অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। যার মধ্যে রয়েছে পিরোজপুরে ইব্রাহিম কুট্টি হত্যা এবং বিসা বালি হত্যা।

ওই রায়ের পর দেশজুড়ে সহিংসতা চালায় জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা। ওই তাণ্ডবে প্রথম তিন দিনেই নিহত হন অন্তত ৭০ জন। এছাড়া বহু গাড়ি-দোকানপাট ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, হিন্দুদের মন্দির-ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

সাঈদী আপিল করলে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেয়। তাতে সাজা কমে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ আসে। ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন হলেও তাতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

সাইদী,যুদ্ধাপরাধী,মানবতাবিরোধী অপরাধা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close