• বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ভাঙচুরকারীরা রাজনৈতিক কর্মী: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ:  ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ১৬:০৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের সময় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা রাজনৈতিক কর্মী বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

সোমবার (১৭ এপ্রিল) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, অগ্নিকাণ্ডে যারা সর্বস্বান্ত হয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী সবসময় তাদের জন্য চিন্তাভাবনা করছেন। ব্যবস্থা নিচ্ছেন। আপনারা এ-ও দেখেছেন বঙ্গবাজারে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসের ১৪টা গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। যে গাড়িগুলো আগুন নেভাবে সেগুলো ভাঙচুর করা হলো। ভিডিওর মাধ্যমে আমরা সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করে আটক করেছি, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভাঙচুর করেছে। তাদের আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিভিন্ন দলের অ্যাক্টিভিস্ট বলে তারা পরিচয় দিয়েছে। এসব কিছু নিয়েই আমাদের তদন্ত চলছে। আশা করি, তদন্তের পর আপনাদের আরও কিছু জানাতে পারবো।’

আপনি ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক ইন্ধনের কথা বললেন, আসলে এটা কোন দলের বলে মনে করছেন- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এটা আরো একটু কনফার্ম হয়ে জানাবো। তবে প্রাথমিকভাবে জেনেছি তারা রাজনৈতিক দলের কর্মী। আমরা আরো তদন্ত করার পর বিস্তারিত জানাতে পারবো।

গত কিছুদিন ধরে ঢাকায় ক্রমাগত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। ঘটনাগুলো প্রায় একই রকম। এসব ঘটনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন নাশকতা বা কেউ জড়িত আছে কিনা- তা খতিয়ে দেখা হবে। এগুলো নিয়ে আপনারা কী কাজ করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা দেখছেন গত ৫৮ বছরের মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চলছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশেও হিটস্ট্রোকে মানুষ মারা যাচ্ছে। ঢাকায় ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা, যেটা আমরা চিন্তাও করতে পারি না। সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়। এ অবস্থায় একটা জিনিস আমরা লক্ষ্য করছি আমাদের মার্কেটগুলোতে হঠাৎ আগুন লাগছে। আমরা বঙ্গবাজারে আগুন দেখেছি, নবাবপুরে ইলেকট্রিক মার্কেটে আগুন দেখেছি। সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নেওয়ার পরেও প্রায় রোজই আমরা আগুন ধরার দৃশ্যটা দেখছি।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন যে, হঠাৎ করে একই সঙ্গে এতো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে কেন? সেই ঘটনাগুলো আমরা তদন্ত করছি। আমাদের একটা টিম আগে থেকেই কাজ করছিল। যে টিম কাজ করছিলো তাদের এ আইটেমটাও...আগুন লাগার মূল কারণটা কী, উৎসটা কী, তদন্ত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

‘আমরা মনে করি এসব কিছুর পেছনে যদি কোন উদ্দেশ্য থাকে, কোন নাশকতা থাকে বা কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন ধরিয়ে দিয়ে থাকেন একটা ঘটনা ঘটানোর জন্য সেটাও আমাদের কাছে চলে আসবে। আমরা সেজন্য কাজ করছি।’

আপনারা কী এ ঘটনাগুলোকে নাশকতা মনে করছেন না- জবাবে তিনি বলেন, আমি তো সেটাই বলছি, আমরা নাশকতা চিন্তা করছি, আমরা মনে করছি কেউ উদ্দেশ্য করে এটা করাতে পারে। তদন্তের পরে আমরা বিস্তারিত বলতে পারবো। আমরা এটা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি, আমরা এটা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছি। প্রধানমন্ত্রী একটা নির্দেশনা দিয়েছে সে অনুযায়ী কাজ করছি।

ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী- এসব অগ্নিকাণ্ডের পেছনে সিটি করপোরেশনের ইন্ধন থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে তদন্তে নিরপেক্ষভাবে বিষয়টি উঠে আসবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিটি করপোরেশন এখানে কি করবে? বঙ্গবাজারকে অনেক আগেই সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিস পরিত্যক্ত মার্কেটে হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। তারপরও তো তারা কোর্টের একটা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মার্কেট করছিলো। সিটি করপোরেশন তাদের কাজ করছে। এগুলো নিয়ে অনেকে হয়তো বিভ্রান্তিকর নিউজ ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। সবকিছুই আমরা তদন্ত করে দেখছি।

ঈদে লম্বা ছুটি হচ্ছে, এতো লোক থাকার পরও ব্যবসায়ীরা নাজেহাল। তাহলে বন্ধে আপনারা নিরাপত্তার জন্য কী করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা এরই মধ্যে একটি মিটিং করেছি। সেখানে আমরা সিদ্ধান্তে নিয়েছি যাতে মানুষ নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পারেন সেই চেষ্টা করছি। গার্মেন্টসসহ অন্যান্য শিল্প কলকারখানাগুলোতে পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়া হবে। এসব বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।

৫৮টি মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ, সেগুলো কী করা হবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ৫৮টি মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে, এ মার্কেটগুলোর ব্যবসায়ীরা এটার ব্যবস্থা নেবেন। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় মার্কেটগুলো চালাবেন কিনা এটা তারা বলতে পারবেন। আমি মনে করি অতিসত্ত্বর ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট থেকে ব্যবসায়ীরা তাদের অন্যত্র সরিয়ে নেবেন।

কয়টি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের তিনটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। একটি ফায়ার সার্ভিসের, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি তদন্ত কমিটি রয়েছে। সরকারি অফিস, কেবিনেটের প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন অতিরিক্ত সচিব।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সেখানে নতুন এজেন্ডা দেওয়া হয়েছে। এ দুইটি বিষয় যেমন- এ অগ্নিকাণ্ড নাশকতা কি না, রাজনৈতিক কোনো ইন্ধন কি না, এ বিষষগুলো তাদের দেওয়া হয়েছে। তারা বিস্তারিত তদন্ত করবে এবং দ্রুত প্রতিবেদন দেবে। এজন্য দুই দিন সময় বাড়ানো হয়েছে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী,কর্মী,রাজনৈতিক,ফায়ার সার্ভিস,গাড়ি,ভাঙচুর,আসাদুজ্জামান খান কামাল
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close