‘অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে মানুষকে আতঙ্কিত করার অধিকার কারো নাই’

‘দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করা হয়েছে’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এ বক্তব্যের উত্তরে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, যদি তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়, তাহলে কি আমরা আলোচনায় বসতাম। সুযোগই ছিলো না। এই যে, অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে দেশের মানুষকে আতঙ্কিত করার অধিকার কারো নাই। আমাদের রিজার্ভ আছে। কোভিডের সময় রিজার্ভ বেড়ে গিয়েছিলো। এখন সচল হয়েছে। কেনাকাটা হচ্ছে। রিজার্ভ কিছুটা কমছে। এর মানে এই নয়; দেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে গেছে।

রোববার (২০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে দৈনিক ইত্তেফাক আয়োজিত ‘বাংলাদেশের শিপিং খাত: বাস্তবতা ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেন, দেশের অর্থনীতি সচল আছে বলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামো উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করতে পেরেছেন। বাংলাদেশের সবকিছু এখনও স্বাভাবিক আছে। গ্রামীণ অর্থনীতি এখনো ভালো আছে, চাঙ্গা আছে। তিন বছর আগে বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশও কোভিড আক্রান্ত হয়েছে। কোভিডকালীন অর্থনীতিকে সরকার যেভাবে আগলে রেখেছিল- সেজন্য সরকার অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। দুর্ভাগ্য এটাই- দেশকে তলানিতে ঠেলে দেয়ার জন্য কিছু মানুষ রাজনীতি করছে।

তিনি বলেন, আলোচকদের কথা অনুযায়ী- অর্থনীতির দুরবস্থা, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতা, এনবিআরের জটিলতার মধ্যেও ৫০টি নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান কিভাবে বাংলাদেশে হচ্ছে? কথার সঙ্গে বাস্তবতার অনেক ফারাক দেখতে পাচ্ছি এবং এটার মূল কারণটা হচ্ছে রাজনীতি। আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে, চলমান বাস্তবতার মধ্যেও আমরা বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে রাজনৈতিক খেলায় অবতীর্ণ হয়েছি। এটা আমাদের জন্য চরম দুর্ভাগ্য। এসব বিষয়ে সরকার সতর্ক আছে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, অল্প কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী পায়রা বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং কাজ, আটটি জাহাজের উদ্বোধন, প্রথম টার্মিনাল, ৬-লেন সংযোগ সড়ক এবং সেতু নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে ব্যবসায়ীরা পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল দিয়ে আমদানি করতে পারবেন। অর্থনীতি খারাপ হলে সরকার কেন এগুলো করবে?

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের কনজেশন কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত হচ্ছে। বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরাও বিদেশে বিনিয়োগ করছে। চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরের পণ্য নৌপথে পরিবহনের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। যাতে সড়কের ওপর চাপ কম পড়ে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল এবং বে-টার্মিনালের অনেক কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সমস্যা আছে। বর্তমান সরকার আমলাতান্ত্রিক জটিলতার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে। কমিউনিকেশন গ্যাপ ফিল আপ করেছে। আপনারা এখন যেকোনো সচিবের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। সংকটগুলো নিরসন করাই সরকারের কাজ। সরকারের মূল কাজটাই হচ্ছে পথ দেখানো। আলোচনার মধ্য দিয়ে অবশ্যই ভালো পথ তৈরি করবো। যে পথ দিয়ে আপনাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সার্বিক অর্থনীতি নিরাপদ থাকবে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম