• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

নারীর নিরাপত্তায় ১০৮ বাসে লাগানো হলো সিসি ক্যামেরা

প্রকাশ:  ১৬ অক্টোবর ২০২২, ১৮:৩৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

নারী যাত্রীদের নিরাপত্তায় রাজধানীতে চলাচলকারী বাসগুলোর মধ্যে ১০৮টি বাসে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ফলে ওইসব বাসে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে ফুটেজ প্রমাণ হিসেবে কাজে লাগানো যাবে। এজন্য অভিযোগকারীকে অবশ্যই ৯৯৯ বা ১০৯ নম্বরে কল করে অভিযোগ জানাতে হবে।

রোববার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর মিরপুরের সৈয়দ নজরুল ইসলাম কনভেনশন সেন্টারে ব্যতিক্রমধর্মী এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মহিলা ও শিশু প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ কাজে আর্থিক সহায়তা করেছে দিপ্ত ফাউন্ডেশন।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী জানান, নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যায়ক্রমে সকল বাসে সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। হয়রানি বা নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে সিসিটিভির ফুটেজ আদালতে আলামত ও প্রমাণক হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, উদ্বোধনী দিনে ৫টি বাস কোম্পানি ও ভিন্ন রুটের মোট ১০৮টি বাসে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বাসগুলো হলো- চন্দ্রা টু ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার রুটের রাজধানী সুপার সার্ভিস লিমিটেডের ২৫টি, গাবতলী টু গাজীপুর রুটের বসুমতি ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের ২৫টি, মোহাম্মদপুর টু আবদুল্লাহপুর রুটের প্রজাপতি পরিবহন লিমিটেডের ২৫টি। ঘাটারচর টু আব্দুল্লাহপুর রুটের পরিস্থান পরিবহনের রয়েছে ২৫টি এবং গাবতলী টু সায়েদাবাদ রুটের গাবতলী এক্সপ্রেসের ৮টি বাসে প্রাথমিক পর্যায়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

এই মোট ১০৮টি বাসে ৩ বছর মেয়াদী সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও মেইনটেনেন্সে খরচ বাবদ মোট প্রকল্পের বাজেট ২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, সিসি টিভি স্থাপনের মাধ্যমে গণপরিবহন নারীবান্ধব ও নিরাপদ হবে। নারীরা সিসি ক্যামেরা সংযুক্ত বাসে উঠতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে। সিসি ক্যামেরা থাকায় এসব বাসের সাধারণ যাত্রীরাও সতর্ক থাকবে এবং তাদের মাঝে সচেতনতা তৈরি হবে। নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যায়ক্রমে সকল বাসে সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের নারীবান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের ফলে আজ শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র ও উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে নারীর পদচারণা বেড়েছে বহুগুণ। এর ফলে নারীকে প্রতিদিন কর্মস্থলে ও স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হয়। নারীরা গণপরিবহনের মাধ্যমে স্বল্প খরচে কর্মস্থল ও নিজ নিজ বাসস্থানে যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু নারীদের জন্য সরকারের এত উন্নয়নের কার্যক্রম গ্রহণের পরেও গণপরিবহনে নারীর প্রতি যৌন হয়রানির ঘটছে। গণপরিবহনে যাতায়াতকালে নারীরা অসম্মানজনক আচরণেরও শিকার হচ্ছেন। যার ফলে সভ্যতার এযুগে নারীরা চলাচলের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। এসব ঘটনা তাদের স্বাধীন চলাচলকে বাধাগ্রস্ত করছে। গণপরিবহনে এশিয়ার অন্যান্য দেশের নারীরা নিপীড়নের স্বীকার হয়ে থাকে।

প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে প্রথম বাংলাদেশে কর্মজীবী নারী ও শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক বাস চালু করেন। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের সকল গণপরিবহন নিরাপদ ও নারীবান্ধব করে তুলছে। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকলে নারীরা নিরাপদ থাকে। নারীর উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।

তিনি বাস মালিক সমিতির উদ্দেশে বলেন, চালক নিয়োগের পূর্বে তাদের সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে যেন তারা অপরাধ করলে দ্রুত শনাক্ত করা যায়। যাত্রীদের সাথে গাড়ির চালক ও স্টাফদের উত্তম আচরণ কেমন হবে, সে ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোলের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আগা খান মিন্টু। আরও উপস্থিত ছিলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বাসচালক, স্টাফ, হেলপার যাত্রীসহ পরিবহনের সাথে সংশ্লিষ্টরা।

নারী,নিরাপত্তা,বাস,সিসি ক্যামেরা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close