• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

খুলছে মধুমতি সেতু, দুর্ভোগ কমবে দশ জেলার

প্রকাশ:  ১০ অক্টোবর ২০২২, ০০:০১ | আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২২, ০০:০৪
নড়াইল প্রতিনিধি

অবশেষে দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা মধুমতি সেতুর দ্বার খুলছে সোমবার (১০ অক্টোবর)। এদিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটি উদ্বোধন করবেন। সেতুটি চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নড়াইল, গোপালগঞ্জ, খুলনা, মাগুরা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর ও ঝিনাইদহসহ অন্তত ১০ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে আশা করেন স্থানীয়রা।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর নড়াইলের নির্বাচনি জনসভায় এ সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তিনি ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মাসে সেতুর কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যশোর ও নড়াইলসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে কালনা ঘাটে সেতুর প্রয়োজনীয়তা বহু গুণ বেড়ে যায়।

পদ্মা সেতু পার হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রবেশদ্বার কালনা ঘাট। সেই অপেক্ষা পূরণের জন্যে অপেক্ষা এখন কেবলমাত্র এক রাতের। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে এ সেতু নির্মাণ হয়েছে।

প্রকল্প কর্মকর্তাদের মতে, সেতুটি চালু হওয়ার মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষ দ্রুত সড়ক যোগাযোগ সুবিধা পাবেন। কারণ, বেনাপোল বন্দর থেকে মধুমতি সেতু হয়ে ঢাকা পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার দূরত্ব কম হবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ১০টি জেলার মানুষ কম সময়ে বিভিন্ন এলাকায় সহজে যাতায়াত করতে পারবেন। এটি দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল, যশোর থেকে ঢাকা পর্যন্ত ভ্রমণের সময়ও বাঁচিয়ে দেবে।

সেতুর মাঝখানে বসানো হয়েছে ১৫০ মিটার দীর্ঘ স্টিলের স্প্যান। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) এ স্প্যানটি তৈরি হয়েছে ভিয়েতনামে। ওই স্প্যানের উভয় পাশের অন্য স্প্যানগুলো পিসি গার্ডারের (কংক্রিট)। এটি সেতুকে দৃষ্টিনন্দন করেছে। সেতুটি এশিয়ান হাইওয়ের একটি অংশ যা রাজধানীকে দেশের বৃহত্তম বেনাপোল স্থলবন্দরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। ২৭.১ মিটার চওড়া সেতুটিতে চারটি উচ্চ গতির লেন ৪.৩০ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোড এবং দুটি সার্ভিস লেনসহ ছয়টি লেন রয়েছে।

মধুমতী সেতু প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, সেতুতে ল্যাম্পপোস্ট বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। টোল প্লাজার মেশিন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। সেতুটি গাড়ি চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।

গোপালগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ মোশাররফ হোসেন বলেন, সেতুটি এ অঞ্চলের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে। নতুন নতুন শিল্প কলকারখানা এই অঞ্চলে গড়ে উঠবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ঢাকার সাথে বেনাপোল স্থলবন্দর, মংলা সমুদ্র বন্দর ও নোয়াপাড়া নদী বন্দরের সড়ক যোগাযোগ সহজ হবে।

নড়াইল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, এ সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে নড়াইল ও গোপালগঞ্জের দু’প্রান্তে দুটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ সেতুর চালু হলে সারা দেশের সাথে নড়াইলসহ দক্ষিনাঞ্চলের যোগাযোগ যেমন বাড়বে তেমনি ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনৈতিক জোন, বিসিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় বড় উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসবেন। ফলে সেতুটি হবে নড়াইলসহ দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশ দ্বার।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

নড়াইল,দুর্ভোগ,মধুমতি সেতু,শেখ হাসিনা,প্রধানমন্ত্রী
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close