• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন এখন সময়ের দাবি

প্রকাশ:  ২৬ মার্চ ২০২২, ১৫:৩৪ | আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২২, ১৫:৩৯
গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) দীর্ঘ আট বছর ধরে সমাবর্তনের অপেক্ষায় কয়েক হাজার স্নাতক শিক্ষার্থী। সর্বশেষ ২০১৪ সালে তৃতীয় সমাবর্তনের পর চতুর্থ সমাবর্তন এখনো আয়োজন করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে হতাশায় ভুগছেন সমাবর্তনের অপেক্ষায় থাকা গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীরা।

সম্প্রতি গবিতে নতুন উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) নিয়োগ হওয়ায় নতুনভাবে সমাবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন তারা। গবি প্রশাসনকে দ্রুত সমাবর্তন আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন তারা। তাদের মতে সমাবর্তন এখন সময়ের দাবি।

গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২৪ বছর ইতিমধ্যে পার করলেও মাত্র তিনটি সমাবর্তন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়েছে। ২০১১ সালের ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদের সময় অনুষ্ঠিত হয় প্রথম সমাবর্তন।

দুই বছর পর একই উপাচার্যের নেতৃত্বে দ্বিতীয় সমাবর্তন হয় ২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট। এরপর আবারও ২০১৪ সালের ২৯ মে অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদের সময়েই তৃতীয় সমাবর্তন হয়। এরপর কয়েক হাজার শিক্ষার্থী গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করলেও সমাবর্তন পাননি।

ফিজিওথেরাপি বিভাগের ২৯তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী অরুপ সরকার এ বিষয়ে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সমাবর্তন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। এর মধ্য দিয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সনদপত্র পেয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শেষে মূল সনদপত্র পাওয়াটা থাকে অনেক প্রত্যাশা ও প্রতীক্ষার। অনেক সিনিয়র আছেন যাদের সাথে কথা হয়েছে অনলাইনে, কখনো দেখা হয়নি। সমাবর্তনের মাধ্যমে সিনিয়র, জুনিয়র মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হবে, তাদের সফলতার গল্প অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে। এই দিনটির জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। খুব শিগগির একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠান গবি কর্তৃপক্ষ আয়োজন করবে প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে আশা করি।'

সমাবর্তন নিয়ে আরও কথা হয় সম্প্রতি গ্রাজুয়েশন সম্পন্নকারী অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের ৩১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. ওমর ফারুক সিদ্দিকীর সাথে। তিনি জানান, সমাবর্তন হচ্ছে মিলনমেলা বা আনন্দ উৎসব। গাউনের কলো রঙ সবসময় বিদায়ী শোকের বার্তা দিলেও সমাবর্তনে রঙটা আনন্দ আর সম্মানের স্বাক্ষর রাখে। কামার-কুমার, চাষির ছেলে/মেয়ের গায়ে ইউনিফর্ম জড়িয়ে দেন দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি মহামান্য রাষ্ট্রপতি! শিক্ষার প্রকৃত সম্মান এখানেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ সমাবর্তন হয়েছিল ২০১৪ সালে। যেহেতু বিভিন্ন জটিলতা বা সুযোগের অভাবে প্রতিবছর সমাবর্তন সম্ভব হয় না, সেহেতু এই উৎসব ক্যাম্পাস জীবনের সমসাময়িক সিনিয়র-জুনিয়র, শিক্ষক-ছাত্র ও বন্ধুদের মিলনমেলায় রূপান্তরিত হয়। প্রিয় বিদ্যাপীঠটার বাতাসে গৌরব আর আনন্দের সুঘ্রাণ বইতে থাকে। আরো ভারি হয় অর্জন আর সমৃদ্ধির ভাণ্ডার। ব্যক্তিগতভাবে বলতে চাই প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর সমাবর্তন হওয়া উচিত। আর গবিতে সমাবর্তন এখন সময়ের দাবি।

বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সর্বশেষ বিভাগীয় প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রিমন বলেন, 'সমাবর্তন বলতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি বলে বুঝে থাকি। আবার এটাও জানি সমাবর্তন মানে একসাথে মিলিত হওয়া। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বলতে হয় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকদিন যাবত কোনো সমাবর্তন হয় না। গ্রাজুয়েশন শেষ করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের ইচ্ছে থাকে একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার। কেননা সেই অনুষ্ঠানে অনেকদিন পর ছোট বড় একসাথে মিলিত হওয়ার সুযোগ থাকে। প্রত্যেক গ্রাজুয়েটদের ইচ্ছে থাকে সমাবর্তনের সেই ড্রেস পরার। ইচ্ছে থাকে সবাই একসাথে মাথার হ্যাট খুলে ছুড়ে মারবে আকাশের দিকে। সেই দৃশ্যটি আবার ক্যামেরাবন্দি করে রাখবে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, যেন খুব শীঘ্রই একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজন করে এবং প্রতি বছরই যেন সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজন করার চিন্তাভাবনা রাখে।'

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো: আবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা ইউজিসির সাথে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। ইউজিসি অনুমতি দিলে, যদি সম্ভব হয় আমি সমাবর্তন দ্রুত করার চেষ্টা করবো।’

পূর্বপশ্চিম/এসপি/এনএন

সমাবর্তন,গণ বিশ্ববিদ্যালয়
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close