• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

জাপান-নরওয়েকে জাহাজ প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে অর্থায়নের আহ্বান

প্রকাশ:  ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ২৩:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাপান-নরওয়েসহ অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদের বাংলাদেশে জাহাজ পুন:প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে অর্থায়নের আহ্বান জানিয়েছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।

সম্পর্কিত খবর

    তিনি বলেন, জাহাজ পুন:প্রক্রিয়াজাতকরণ বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় খাত। বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে অন্যতম প্রধান জাহাজ পুন:প্রক্রিয়াকারী দেশ, বাংলাদেশে ১০৮টি জাহাজ পুন:প্রক্রিয়াকরণ ইয়ার্ড রয়েছে, যা চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলাতে অবস্থিত। উল্লিখিত ইয়ার্ডগুলোর মধ্যে কার্যরত রয়েছে ৫০টির মতো। যাদের বার্ষিক জাহাজ পুন:প্রক্রিয়াকরণ সক্ষমতা ১০ মিলিয়ন মেট্রিক টনেরও অধিক। এদেশের বার্ষিক জাহাজ পুন:প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের গড় প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৪ শতাংশ। দেশের সামগ্রিক আয়রন চাহিদার ৬০-৭০ শতাংশ আসে জাহাজ পুন:প্রক্রিয়াকরণ শিল্প থেকে।

    এ খাত থেকে আয় হয় প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলারেরও অধিক এবং সরকারের রাজস্ব আয় হয় প্রায় ১০০-১২০ মিলিয়ন ডলার। এ শিল্পে প্রত্যক্ষভাবে ৩০ থেকে ৫০ হাজার মানুষ, পরোক্ষভাবে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ নির্ভরশীল। এ শিল্পের ওপর ৩০০টিরও বেশি রি-রোলিং স্টিল মিল নির্ভরশীল। ফলে দেশের সামগ্রিক টেকসই উন্নয়নে এ শিল্প ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে।

    বুধবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও প্যান প্যাসিফিক হোটেলে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। শিল্প মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা (আইএমও) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে। এতে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার এবং জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আইএমও -এর অংশীদারিত্ব ও প্রকল্প বিষয়ক ডিরেক্টর হোসে ম্যাথিকাল ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।

    বাংলাদেশের শিপ ব্রেকিং তথা জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ১৯৬০ এর দশকে। ওই সময়ে গ্রিক পতাকাবাহী একটি জাহাজ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপকূলে আছড়ে পড়ে। দীর্ঘদিন ওই জাহাজটি মালিকানাবিহীন অবস্থায় সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ফেরিঘাটে পড়েছিল। পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম স্টিল হাউজ জাহাজটি স্ক্র্যাপ হিসেবে ক্রয় করে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি পতাকাবাহী আল আব্বাস না‌মের জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে ওই জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় ফৌজদারহাট উপকূলে পড়ে থাকে। ১৯৭৪ সালে কর্ণফুলী মেটাল ওয়ার্কস লি. ওই জাহাজটি স্ক্র্যাপ হিসেবে ক্রয় করে। এভাবে ১৯৮০ এর দশকে বাংলাদেশ শিপ ব্রেকিং কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমান সময়ে এ শিল্পটি লাভজনক শিল্প হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীনে এ শিল্পের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।

    বিগত কয়েক বছরের জাহাজ পুন:প্রক্রিয়াজাতকরণ তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় যে ২০১৪ সালে ২২৭টি, ২০১৫ সালে ২২১টি, ২০১৬ সালে ২৫০টি, ২০১৭ সালে ২০৪টি, ২০১৮ সালে ১৯৮টি, ২০১৯ সালে ২৩৭টি, ২০২০ সালে ১৫০টি, ২০২১ সালে ২৭১টি, ২০২২ সালে ১৪৮টি জাহাজ পুন:প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪টি ইয়ার্ড ক্লাসএনকে সার্টিফিকেট অর্জন করেছে এবং ইয়ার্ডগুলোর গ্রিন ইয়ার্ডে রূপান্তর কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৪ সালের মধ্যে কমপক্ষে ১০টি ইয়ার্ড সার্টিফিকেট অর্জন করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা যায়।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close