• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

বেগুনে আগুন, মাছবাজারেও স্বস্তি নেই

প্রকাশ:  ০৯ এপ্রিল ২০২২, ১২:০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

এক সপ্তাহ আগেও বাজারে ঢ্যাঁড়সের দাম ছিল ১২০ টাকা। শসার দামও চড়া ছিল। আর বেগুনে আগুন তো লেগেই আছে। তার পরও সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির বাজারে কিছুটা হলেও ফিরেছে স্বস্তি। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। অন্যদিকে মাছের দামে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে।

শুক্রবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।

ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম কিছুটা কমলেও তা তাঁদের ক্রয়ক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আর মাছ-মুরগি কিনতে আসা ক্রেতাদের মাঝে ক্ষোভের কমতি ছিল না।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সবজি কিনতে এসেছিলেন ফয়সাল হাসান। তিনি বলেন, ‘সবজির দাম আগের চেয়ে একটু কমেছে। বেগুন এখনো ৮০ টাকা। আর শসার দাম কিছুটা কমেছে। এই বাজার থেকে কিনলাম ৩০ টাকা কেজি। তবে এগুলো আরও কমে পাওয়া যায়। দোকানিরা দাম কমাচ্ছেনই না। সব জিনিস একদামে বিক্রি হচ্ছে।'

শাহান আরা নামের আরেক ক্রেতা বললেন, সবজির দাম কম, এটা ঠিক। কিন্তু সবার পক্ষে এই দামে কেনা কঠিন। লাউ ৮০ টাকা ছিল। এখন ৫০ টাকায় দিচ্ছে। কিন্তু এই দামও বেশি। ছোট একটা লাউ ৩০ টাকা হলে ঠিক আছে।

কারওয়ান বাজারে মুরগির দোকানগুলোতে দাম ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কোন ধরনের মুরগির কেমন দাম, সেই তালিকা প্রায় প্রতিটি দোকানেই দেখা যায়। ক্রেতাদের জন্য সাঁটানো ওই তালিকায় দেশি মুরগি ৬০০টাকা, পাকিস্তানি কক ৩২০ টাকা, ব্রয়লার ১৭০ টাকা, লেয়ার ২৪০ টাকা উল্লেখ করা হয়। কোনো কোনো ক্রেতা দরদাম করলে ব্যাপারীরা ৫-১০ টাকা কেজিপ্রতি কমাচ্ছেন। এ ছাড়া গড়ে সবাইকে এক দামেই বিক্রি করতে দেখা গেছে।

মুরগি কিনতে আসা ফারুক হোসেন বলেন, ‘এত দাম হলে তো খাওয়া মুশকিল হয়ে পড়বে। দেশি মুরগির কেজি ৬০০ টাকা। এটা আমাদের মতো মধ্যবিত্তের জন্য বেশিই। এই এক সপ্তাহে ব্রয়লারের দাম কেজিতে ২০ টাকা বাড়ল। এটা সাধারণ মানুষের জন্য কত বেশি বোঝেন?’

এই সপ্তাহে দাম না বাড়লেও বিক্রেতারা বলছেন, আগামী সপ্তাহে কিছুটা কমতে পারে। ভাই ভাই ব্রয়লারের বিক্রেতা সুমন বলেন, ‘মুরগির দাম কমে যাবে। ব্রয়লার কয়দিন আগেও ১৫০ টাকা ছিল। এখন সরবরাহ কম পাই। সরবরাহ না থাকলে তো দাম বেড়ে যায়। আশা করি আগামী সপ্তাহে কমে যাবে।’

বাজার ঘুরে দেখা যায়, বরবটি ৬০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা, শসা ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া বেগুন আকারভেদে ৭০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কারওয়ান বাজারে ঢ্যাঁড়স ৫০ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, লেবুর হালি ২০ থেকে ৩০ টাকা, ঝিঙে কেজি ৫০ টাকা, আলু ২০ টাকা, ডাঁটার আঁটি ১৫-২০ টাকা দরে কিনতে হয়েছে ক্রেতাদের।

এদিকে কারওয়ান বাজার ছাড়াও রাজধানীর অন্য বাজারে সবজির দাম অনেকটা একই রকম ছিল। এদিন প্রায় সব বাজারে দাম কমেছে পেঁয়াজের। এক পাল্লা (একসঙ্গে ৫ কেজি) কিনলে ১৩০ টাকা আর খুচরা এক কেজি করে নিলে ২৮ থেকে ৩০ টাকায় পড়েছে গতকাল। উত্তর বাড্ডা কাঁচাবাজারে বাজার করতে এসেছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা শরীফুজ্জামান। জানালেন, মাসখানেক আগেও পেঁয়াজের কেজি ছিল ৬৫ টাকা। এখন এক পাল্লা কিনতে পারছেন ১৩০ টাকায়। তিনি বলেন, বাজারে সবজির দাম হালকা কমলেও বেশিই বলা চলে। তবে পেঁয়াজের দাম অনেকটাই কমেছে।

এই বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, বেগুনের দাম ৮০-১০০ টাকা। বেগুনের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে শসা। এক কেজি শসা কিনতে ৬০-৮০ টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, বরবটি ৬০-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে রুই ও ইলিশের দাম বেড়েছে। রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে রুই মাছের কেজি ছিল ২৮০-৪৫০ টাকার মধ্যে। কিছুদিন আগে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া এক কেজি ওজনের ইলিশ এখন বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। অন্যান্য মাছের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

বাজারে মাছ কিনতে আসা ইমরান হোসেন বলেন, ইলিশের দাম অনেক। ইলিশ কেনার মতো অবস্থা নেই। এ ছাড়া রুই মাছের কেজি ছিল আগে ২৮০ টাকা। সেটি এখন ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস গত সপ্তাহের মতো ৬৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে বিভিন্ন মহল্লার কোনো কোনো ব্যবসায়ীকে গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে। আগের দামে বিক্রি হয়েছে ডিম। লাল ডিমের ডজন ১০০ থেকে ১০৫ টাকা। হাঁসের ডিমের ডজন ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা। ডিম বিক্রেতা মো. ইসমাইল বলেন, চাহিদা কম থাকায় ডিমের দাম বাড়েনি। রোজায় মানুষ ডিম কম খায়। এ কারণে দাম কমেছে।

পূর্ব পশ্চিম/জেআর

বাজার
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close