• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

'বাজারের ব্যাগটা যেন আতঙ্কের নাম'

প্রকাশ:  ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ২১:১৭
পূর্ব পশ্চিম ডেস্ক

নিত্যপ্রয়জনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির ফলে ভালো নেই দেশের আপামর সাধারণ জনগণ। দাম বাড়লেও বাড়ছে না আয়। ধরাবাঁধা বেতনে হিমসিম খেতে হচ্ছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষকে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চিন্তা ভাবনা তুলে ধরেছেন আসাদুর রহমান বিজয়

সম্পর্কিত খবর

    দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির যুগে ভালো নেই কেউ

    উন্নতির ছোয়া লেগেছে আমাদের দেশে। এখন আমরা সেতু দিয়ে চলি, মেট্রোরেলে ঘুরি। কিন্তু মুদ্রার অপর পিঠে আমারা দেখছি দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি। ভয়াবহ একটি সময় পার করছি আমরা। বাজারের ব্যাগটা যেন আতঙ্কের নাম। খুব স্বাস্থ্য সচেতন মানুষটাও এখন চিবিয়ে খাচ্ছে সস্তায় পাওয়া পচাঁ সবজি। বাজারে সয়াবিন তেলের বদলে কিছুটা সস্তায় খুঁজে সুপার পাম তেল। কাঁচামালের আকাশচুম্বী দাম দেখে কি মনে হয় কৃষকরা ভালো আছে? এই ঊর্ধ্বগতির যুগে ভালো নেই কেউ। কাল আবার বাজারে যেতে হবে এই চিন্তা রাতে ঘুমাতে দেয়না। এই আহাজারির শেষ কোথায়? উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাক সেটা আমরাও চাই, কিন্তু পেটের ক্ষুধা কি আর তা বুঝে? বন্ধ হোক এই ঊর্ধ্বগতি, ভালো থাকতে চায় মানুষ।

    হিমেল দর্শন বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

    দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি বতমানে একটি ব্যাধিতে পরিনত হয়েছে।

    আমাদের দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় মূল্য বৃদ্ধি আজ কোনো বিশেষ সংবাদ নয় যেনো স্বতঃসিদ্ধ একটি নবজাত প্রানীর বয়সের মতো শুধু বাড়ে। দ্রব্যমূল্য একবার বাড়ার সুযোগ পেলে আর কমে না। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে জিনিসপত্রের দাম যেমন বাড়ছে, জনসাধারনের আয়ও তেমন বাড়ছে। কিন্তু আমাদের দেশে আয় বাড়ে এক পয়সা জিনিসের দাম বাড়ে তিনগুণ। মূল্য বৃদ্ধির ফলে বাঁধা ধরা আয়ের লোকেরা হিমশিম খাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি বর্তমানে একটি ব্যাধিতে পরিনত হয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি জনজীবনকে করে তুলছে অচল ও অতিষ্ট । বিশেষ করে নিম্নআয়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি অভিশাপস্বরুপ। প্রতি বছরই কর প্রস্তাবিত বাজেটের সাথে সাথেই বৃদ্ধি পায় দ্রব্যমূল্য। আর অসাধু ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নেয়। দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য জনগন ও সরকার উভয়কেই সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে তার জন্য প্রয়োজন উৎপাদন শিল্পর প্রসার ও অকৃএিম দেশপ্রেম।

    রেশমা আক্তার আইন বিভাগ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

    একবার যে দ্রব্যর দাম বাড়ে তা আর কমে না

    নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দ্রুতহারে অযৌক্তিক ঊর্ধ্বমূল্য সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কষ্টের কারণ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অযৌক্তিকভাবে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিম্ন-মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষ কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন যৌক্তিক কারণে পণ্যের ঊর্ধ্বমূল্য হতে পারে। একবার যে পণ্যের দাম বাড়ে, তা আর কমে না। এতে মৌলিক চাহিদা পূরণ ব্যহত হচ্ছে। যদি আমার জন্মস্থানের অর্থনীতির অবস্থা বর্ণনা করি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের প্রধান একটি পেশা লবণ উৎপাদন। দেশে প্রচুর লবণের মজুদ থাকা সত্ত্বেও দেশের মানুষের অর্থনীতি সচল না রেখে বিদেশ থেকে লবণ রপ্তানি করা বিলাসিতা ছাড়া কিছুই না। একদিকে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি অপর দিকে তাদের অর্থনীতি হুমকির দিকে ঠেলে দেওয়া সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণাও বটে। দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতি চলতে থাকলে অতি দ্রুত আমাদের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। মূলত আমরা যদি আমাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি উৎপাদনে সচেষ্ট হই তবে একদিকে যেমন আমদানির প্রবণতা কমে আসবে, ঠিক তেমনি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের অসৎ উদ্দেশ্যও বিফলে যাবে। দেশের উন্নতিকে ধরে রাখতে হলে আমাদের অবশ্যই অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

    মুহাম্মদ সাজ্জাদুল আমিন আইন বিভাগ, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম।

    মূল্যবৃদ্ধির এই যাত্রাকালে পিষে যাচ্ছে মধ্যবিত্ত সমাজ

    'দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি' শব্দটা ছোট হলেও এর বিস্তৃতি বেশ অনেকটাই। যা মহামারি সমতুল্য আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে প্রত্যাহিক জনজীবনে। সমাজের সাধারণ মানুষ পড়ে আছে এই ছোট শব্দটার পাহাড় সমান চাপে। নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো ছাটাই করার পাল্লা চলছে এখন। কিন্তু আর কত? কিছু যে বাকি থেকেই যায়। তিনবেলার খাবার জোগাড় করাটাই এখন মুশকিল। সারাদিনের পরিশ্রমের সবটুকু দিয়েও যেন পারা যাচ্ছে না রান্নাটা চড়াতে। মূল্যবৃদ্ধির এই যাত্রাকালে পিষে যাচ্ছে মধ্যবিত্ত সমাজ, সেখানে দরিদ্রদের অবস্থা তো আর বলার অপেক্ষাই রাখে না। চলতি বছরে দাম বেড়েছে চাল, ডাল, তেল সহ সকল দ্রব্যের, বাড়েনি শুধু মধ্যবিত্তের আয়। এই চরম সংকট এর সময় কৃষিখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, অসাধু ব্যবসায়িদের আইনের আওতায় আনা সর্বোপরি সরকারের সার্বিক সহযোগিতা কাম্য।

    ফারহানা হক জুঁই

    এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন বিভাগ,

    খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।

    লেখা: শিক্ষার্থী, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close