• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

যেসব অভিযোগে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল

প্রকাশ:  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২১:৪২
বিনোদন ডেস্ক

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদ্য নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের প্রার্থিতাই বাতিল হয়ে গেল। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন নিপুণ আক্তার। শনিবার ( ৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এফডিসিতে শিল্পী সমিতির নির্বাচন সম্পর্কিত আপিল বোর্ডের প্রধান পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান এ ঘোষণা দেন।

গত ২৮ জানুয়ারি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়। সভাপতি পদে বিজয়ী হন অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন। তাঁর প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী নিপুণ আক্তার নির্বাচনে হেরে যান। পরে তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী জায়েদ খানের বিরুদ্ধে ভোট কেনা, নানাভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করা, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ একাধিক অভিযোগ আনেন। অভিযোগ এসেছে কার্যকরী পরিষদ সদস্য পদে নির্বাচিত চুন্নুর বিরুদ্ধেও। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে নির্বাচনের সপ্তাহ পেরোতেই উল্টে গেল ফল।

নিপুনের অভিযোগগুলোর সুরাহা করতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর নির্দেশ দেয় আপিল বোর্ডকে। এই বোর্ড আজ শিল্পী সমিতির অফিসে জরুরি বৈঠক ডাকে। বৈঠকে অংশ নিতে আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান চিঠি দেন অভিযোগকারী নিপুণ, অভিযুক্ত জায়েদ খান ও চুন্নু, দুই নির্বাচন কমিশনার জাহিদ হোসেন ও বিএইচ নিশান এবং শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনকে।

আজ বিকেলে সমর্থকদের নিয়ে এফডিসিতে আসেন নিপুণ। এ সময় ‘জায়েদ খানের বিচার চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন বিদায়ী কমিটির সময়ে সদস্যপদ স্থগিত হওয়া শিল্পীরা।

আপিল বিভাগের প্রধান পরিচালক সোহানুর রহমান নির্ধারিত সময়ে শুনানি শুরু করতে চাইলে তখনও জায়েদ খান উপস্থিত না হওয়ায় তাঁর জন্য আরও ১০ মিনিট অপেক্ষা করেন। এ সময় তাঁরা পরিচালক সমিতির কার্যালয় তালাবদ্ধ পান। এমনকি অফিস পিয়নদের খুঁজে না পাওয়ায় বাইরে মাঠে চেয়ার পেতে বসেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন— কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল থেকে বিজয়ী সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিক, আপিল বিভাগের সদস্য মোহাম্মদ হোসনসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা। অপেক্ষা শেষে জায়েদ খান না আসায় নিপুণকে নিয়ে পরিচালক সমিতিতে বসেন সোহানুর রহমান সোহান এবং তাঁর বক্তব্য দেন।

সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের সামনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো পড়ে শোনান সোহানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী তফসিলের ১১ নাম্বার অনুচ্ছেদ মোতাবেক ২৮ জানুয়ারি নির্বাচন সম্পন্ন করে ওই তারিখে ফলাফল ঘোষণা করার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান নির্বাচন কমিশন ২৯ জানুয়ারি ভোর ৫টায় ফলাফল ঘোষণা করেছেন। এটি তফসিলের পরিপন্থী ও বিধিবহির্ভূত। অথচ নির্বাচনের ফলাফলের ঘোষণাপত্রে তারিখ দেওয়া হয়েছে ২৮ জানুয়ারি। এতে প্রতীয়মান হয় যে, নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান পীরজাদা শহীদুল হারুণ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করেছেন।’

নির্বাচন কমিশনের দুই সদস্য মৌখিকভাবে জানিয়েছেন যে, বিভিন্ন প্রার্থী ও ভোটারদের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও চেয়ারম্যান পীরজাদা বিষয়টি আমলে না নিয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই দুইজন সদস্য হলেন বিএইচ নিশান, জাহিদ হোসেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিপক্ষে পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগে চলচ্চিত্র শিল্পকেন্দ্রীক বিভিন্ন সংগঠন সোচ্চার হয়ে ওঠে। তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন তাঁরা।

দুইজন ভোটার লিখিতভাবে জানান, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জায়েদ খান এবং সদস্য পদপ্রার্থী চুন্নু তাঁদের ভোট দেওয়ার জন্য নগদ অর্থ দিয়েছেন। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকজন ভোটার মৌখিকভাবে তাঁদের অর্থ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। কিছু ভিডিও ফুটেজে প্রতীয়মান হয়েছে যে এই অর্থ প্রদানের অভিযোগ সত্যি।

নির্বাচনের জন্য প্রণীত তফসিলের ১০ নম্বর ধারায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা নির্বাচন কমিশন বাতিল করতে পারবে। অভিযোগ পাওয়া সত্ত্বেও বিষয়টি আমলে না নিয়ে এবং উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন প্রধান পীরজাদা দায়িত্বজ্ঞানহীতার পরিচয় দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন আপিল বোর্ড প্রধান।

বক্তব্য পাঠ শেষে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের ঘোষণা দেন সোহানুর রহমান সোহান। প্রতিদ্বন্দ্বী সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ পেয়েছিলেন ১৬৩ ভোট। তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন বোর্ড প্রধান। একই সঙ্গে মিশা-জায়েদ প্যানেলের কার্যকরী সদস্য চুন্নুর প্রার্থিতাও বাতিল ঘোষণা করেন আপিল বিভাগের প্রধান সোহানুর রহমান সোহান।

পূর্ব পশ্চিম/জেআর

জায়েদ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close