• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

রাতে হুমকি দিয়ে সকালেই হল থেকে বের করে দিল ছাত্রলীগ

প্রকাশ:  ১২ এপ্রিল ২০২২, ১৯:২৫
রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এক শিক্ষার্থীকে রাতে হল ছাড়ার হুমকি দিয়ে সকালে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আকিব জাভেদ। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি শের-ই-বাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে রাতুল। তিনি শের-ই-বাংলা হল ছাত্রলীগের সভাপতি পদে আছেন।

জানা যায়, সোমবার রাত ১২টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা রাতুল ঐ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জাভেদকে সিট ছেড়ে দেওয়ার আলটিমেটাম দেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হল থেকে জাভেদের জিনিসপত্র বের করে দিয়ে কমল কুমার পাল নামের এক শিক্ষার্থীকে সেই সিটে তুলে দেন।

কমল ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার আবাসিকতা নেই।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আকিব জানান, গতকাল রাত ১২টার দিকে হল ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান আমার রুমে আসে এবং বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আজ সকাল ৯টার মধ্যে রুম ছেড়ে চলে যেতে আলটিমেটাম দিয়ে যান।

তিনি জানান, আজ সকালে এসে মোস্তাফিজুর আবার আমাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আরো সাত-আট জন মিলে আমার বইপত্রসহ সব জিনিস বাহিরে ফেলে দেন। কিন্তু আমার কোন যাওয়ার জায়গা নেই। এমতাবস্থায় আমি অনিরাপত্তাবোধ করছি।

জানা যায়, গত জানুয়ারির প্রথম দিকে আবাসিকতার জন্য আবেদন নেয় হল প্রশাসন। তারপর মৌখিক পরীক্ষা হয় ফেব্রুয়ারিতে। মার্চের প্রথমে হল প্রাধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে ১২৯ নম্বর কক্ষে ওঠেন আকিব। ওই বেডে ২০১৫-১৬ সেশনের এক শিক্ষার্থী আরও এক মাস ছিলেন। পরে তিনি ৮ এপ্রিল চলে যান। পরে এই বেডে ওঠেন আকিব।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে রাতুল বলেন, যে ছেলে অভিযোগ করে বেড়াচ্ছে, সেই বরং কমল নামে আমার এক ছোট ভাই উঠেছিল, তার বিছানাপত্র নামিয়ে দিয়ে নিজে উঠেছে এবং মিথ্যা কথা বলে বেড়াচ্ছে।

কমলের বৈধ সিট আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমল এখনো অ্যালটমেন্টের মাধ্যমে সিট পায়নি। ওর অ্যালটমেন্টের প্রক্রিয়া চলছে। আর ওর এক বড় ভাই চলে যাওয়ার পরে, ও ওনার সিটে বিছানাপত্র রেখেছিল। একটা কাজে কমল ওর বন্ধুর কাছে ছিল। তাই বিছানাপত্রের খেয়াল রাখতে পারেনি। এসময়ে আকিব কমলের বিছানাপত্র সরিয়ে নিজে উঠেছে। বিষয়টি গতকাল জানার পরে আমি আকিবকে বলেছিলাম, কমলতো আগে উঠেছে, তুমি ওর বিছানাপত্র সরিয়েছো কেনো ? অথচ, ও এখন অভিযোগ করছে যে আমি ওর বিছানাপত্র সরিয়ে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের হলে কক্ষ নির্দিষ্ট করে বরাদ্দ বা অ্যালটমেন্ট দেওয়া হয়না। সাধরণভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীদের যে যার মত করে সিট খুজে নিতে হয়। তারপর বিষয়টা প্রাধ্যক্ষকে জানিয়ে লিপিবদ্ধ করে নিতে হয়। আকিব কিন্তু প্রাধ্যক্ষ স্যারকে জানায়ওনি এবং লিপিবদ্ধও করেনি। তবে এসব ঝামেলা করার কারণে আজকে প্রাধ্যক্ষ ওকে একটা সিটের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

হল প্রাধ্যক্ষ মো. হবিবুর রহমান বলেন, আজ সকালে বিষয়টি জেনে সেখানে গিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেছি। সব শুনে আপতত তাকে অন্য একটি রুমে থাকার ব্যবস্থা করেছি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি, খুব দ্রুতই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

প্রাধ্যক্ষ আরও বলেন, গতকাল এমন ঘটনা ঘটেছে কিন্তু সে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হল প্রশাসনকে কিছুই জানায় নি। এমনকি সে হলে উঠেছে সেটাও জানেনা কর্তৃপক্ষ। তবে তার ঐ সিট বরাদ্দ রয়েছে। তাছাড়া একজন শিক্ষার্থী কেউ রুম থেকে বের করে দেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি বলে জানান তিনি।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএ/জেএস

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়,ছাত্রলীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close