ধর্ষণের ঘটনা টাকায় মীমাংসা, এসআই প্রত্যাহার
ঢাকার সাভারে ধর্ষণের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে এ ঘটনায় মামলা হয়।
গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত আসামিকে। একই সঙ্গে আশুলিয়া থানার এসআই ফরিদুল আলমকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
সম্পর্কিত খবর
মঙ্গলবার ক্লোজ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম।
এর আগে ২১ মার্চ আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকায় স্থানীয় সাকিব ভূইয়ার বিরুদ্ধে এক নারী পোশাকশ্রমিক থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৩ থেকে ৪ মাস আগে তার দোকানে গিয়ে অভিযুক্তের সঙ্গে পরিচয় হয় ভুক্তভোগীর। এরপর থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তাদের মধ্যে। পরে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। গত ৬ মার্চ সর্বশেষ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে বিয়ের কথা বললে সেই নারীকে তালবাহানা করে ঘুরাতে থাকে ওই যুবক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আশুলিয়া থানার এক কর্মকর্তা বলেন, ২১ মার্চ থানায় লিখিত অভিযোগ করলে সেই অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব পরে আশুলিয়া থানার এসআই ফরিদুল আলমের ওপর। এর আগেই এ ঘটনার মীমাংসা করা হয়েছিল।
ধর্ষণের অভিযোগ করা সেই নারী বলেন, ‘এসআই ফরিদ ও আরও কয়েকজন স্থানীয় লোক থানায় বসেই আমাকে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে মীমাংসা করায়। তারা বলে মামলায় গেলে অনেক ঝামেলা অনেক খরচ, তুমি মীমাংসা করে নাও। এ বিষয়ে আমার আর কোনো অভিযোগও ছিল না।
‘সেই টাকা থেকে আমার কাছে বিভিন্ন খরচাপাতির কথা বলে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন উপস্থিতরা। আমি ৪০ হাজার টাকা টেবিলের ওপর রেখে দিয়ে চলে আসি। কিন্তু হঠাৎ করে এসআই ফরিদ আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, বোন আমার চাকরিটা বাঁচাও। তুমি থানায় এসে একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে যাও। পরে আমাকে থানায় নিয়ে মামলা গ্রহণ করে।’
তিনি বলেন, ‘আমি যখন মামলা করতে চেয়েছি তখন আমার মামলা নেয়া হয়নি। আর পরে আমি যখন সব ভুলে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে চেয়েছি তখন আমাকে এই পথে আনা হলো। আমাকে হেনস্তা করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে এসআই ফরিদুল আলম বলেন, ‘আমি আজকে থেকে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত। আমি কারও কাছ থেকে টাকা নেইনি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিও গ্রেপ্তার হয়েছে।’
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘মামলা সংক্রান্ত একটি জটিলতার নিয়ে এসআই ফরিদুল আলমকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।’
পূর্ব পশ্চিম/জেআর