• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

কোথায় আছেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই?

প্রকাশ:  ২০ মার্চ ২০২২, ১৭:০৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকাই চলচ্চিত্রের নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। রোববার (২০ মার্চ) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেন এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত অন্য দুই আসামি হলেন- ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও সেলিম খান।

নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। ঢাকাই সিনেমার তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ আত্মহত্যা করলেও তার পরিবার ও তার ভক্তদের অভিযোগ, এটা হত্যাকাণ্ড এবং এর সঙ্গে জড়িত আজিজ মোহাম্মদ ভাই। প্রশ্ন ওঠেছে, কোথায় আছেন তিনি?

সম্পর্কিত খবর

    বাংলাদেশের রহস্যময় ব্যক্তিদের তালিকা করলে প্রথমদিকেই থাকবে যার নাম। যাকে নিয়ে আছে নানা গল্প, নানা রহস্য। আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে নিয়ে এসব গল্পের বেশিরভাগই চলচ্চিত্র জগতের নারী ও হত্যা কেন্দ্রিক। এ গল্পের কতটুকু সত্য আর কতটুকু মুখরোচক বা মিথ্যা সে নিয়েও আছে নানা মত।

    আজিজ মোহাম্মদ ভাই বর্তমানে সপরিবারে থাইল্যান্ডে বসবাস করছেন বলে জানা গেছে। সেখান থেকেই তিনি ব্যবসা পরিচালনা করেন। তার স্ত্রী নওরিন মোহাম্মদ ভাই দেশে এসে ব্যবসা দেখেন। আজিজ মোহাম্মদের ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে।

    আজিজ মোহাম্মদ ভাই ৫০টির মতো চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। চলচ্চিত্রের প্রতি ভালোবাসা থেকে নাকি নায়িকাদের রূপের মোহে, নাকি কালো টাকা সাদা করতে, নাকি শুধুই ব্যবসায়িক মানসিকতায় প্রযোজনায় আসেন সেটা নিয়ে তর্ক রয়ে গেছে।

    ১৯৪৭ এ দেশভাগের পর তাদের পরিবার ভারতের গুজরাট থেকে বাংলাদেশে আসে। ধনাঢ্য এই পরিবার পুরান ঢাকায় বসবাস শুরু করে।

    ১৯৬২ সালে আজিজ মোহম্মদ ভাইয়ের জন্ম হয় আরমানিটোলায়। আজিজ মোহাম্মদ ভাই তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ইস্পাত প্রযোজকের পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে নিযুক্ত ছিলেন।

    তিনি সার্ক চেম্বার অব কমার্সের আজীবন সদস্য। অলিম্পিক ব্যাটারি, অলিম্পিক বলপেন, অলিম্পিক ব্রেড ও বিস্কুট, এমবি ফার্মাসিটিউক্যাল, এমবি ফিল্ম ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের মালিক আজিজ মোহাম্মদ ভাই।

    এছাড়াও মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুরে রয়েছে তার হোটেল ও রিসোর্ট ব্যবসা। মাদক ব্যাবসার সাথে তার জড়িত থাকার প্রমাণও পাওয়া গেছে। তিনি সার্ক চেম্বারের আজীবন সদস্য। মুম্বাইয়ের ডন দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলেও অভিযোগ আছে।

    আজিজের সঙ্গে একাধিক নারী; বিশেষ করে জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের সম্পর্ক নিয়ে এখনও মিডিয়াপাড়ায় নানা ধরনের রটনা প্রচলিত।

    এর আগে, এরশাদের শাসনামলে একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। কথিত আছে, নিজারি ইসলামের (শিয়া মতাদর্শীদের একটি ভাগ) বর্তমান ইমাম ৪৯ তম প্রিন্স আগা খানের হস্তক্ষেপে মুক্তি পান তিনি। সেসময় বাংলাদেশে এসছিলেন আগা খান।

    ১৯৯৬ সালে বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলার একজন আসামি হিসেবে আবারও আলোচনায় আসেন চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে সুপরিচিত আজিজ।

    ১৯৯৯ সালে আরেক চলচ্চিত্রাভিনেতা সোহেল চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের তদন্তেও তার নাম আসে। তবে, কখনোই তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি।

    ২০০৭ সালে গুলশানের একটি বাসা থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার হন তার ভাতিজা আমিনুল হুদা। এই ঘটনার তদন্তেও আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নাম আসে। তবে, বরাবরের মতো সেবারও তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি পুলিশ।

    ২০১৮ সালে, ১৯৯৬ সালের শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত। এবার চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নামে আবারও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলো।

    পূর্বপশ্চিম- এনই

    আজিজ মোহাম্মদ ভাই
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close