• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

ধর্ষণের ঘটনা ফাঁস করে দেবেন বলাতেই খুন করে ৬ টুকরা

প্রকাশ:  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৮:৫৭ | আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৯:০৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের ফার্মেসি থেকে ৬ টুকরো উদ্ধার করা নারীকে হত্যার আগে গণধর্ষণ করা হয়। শাহনাজ পারভীন জোৎস্না (৩৪) নামের ওই নারী ফার্মেসিতে ওষুধ আনতে গিয়ে রাতভর গণধর্ষণের শিকার হন। ধর্ষণের ঘটনা ফাঁস করে দেবেন বলাতেই তাকে হত্যা করা হয় এবং পরে গুম করার জন্য লাশ ৬ টুকরা করে ওষুধের কার্টনে ভরা হয়।

শনিবার (শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিআইডির সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।

তিনি জানান, এ ঘটনায় জড়িত মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গ্রেপ্তাররা হলেন- জিতেশ চন্দ্র গোপ (৩০), অনজিৎ চন্দ্র গোপ (৩৮) ও অসীত চন্দ্র গোপ (৩৬)।

সিআইডির কর্মকর্তা মুক্তা ধর জানান, জোৎস্না কিছুদিন ধরে শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সমস্যার কথা স্থানীয় ফার্মেসি মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপকে জানালে তিনি তাকে ফার্মেসিতে যেতে বলেন। এরপর ফার্মেসিতে গেলে পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার হন জোৎস্না। ধর্ষণের কথা সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বললে জিতেশসহ তিনজন জোৎস্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ফল কাটার ছুরি দিয়ে মরদেহ ছয় টুকরা করে।

এ ঘটনায় শুক্রবার ঢাকার ভাটারার নুরের চালা এলাকা থেকে অভি মেডিকেল হল নামে ওই ফার্মেসির মালিক জিতেশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ছাড়া তার দুই সহযোগী অনজিৎ চন্দ্র গোপ (৩৮) ও অসীত চন্দ্র গোপকে (৩৬) সুনামগঞ্জ জগন্নাথপুর পৌর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জিতেশের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ইতনা থানার শহিলা গ্রামে। অনজিৎও একই এলাকার এবং অসীতের বাড়ি নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ থানার সুয়াইর অলিপুর গ্রামে।

পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ওষুধ কিনতে যেতেন বলে ওই নারীর সঙ্গে অভি মেডিকেল হলের মালিক জিতেশের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জিতেশ ওই নারীর মায়ের ব্লাড প্রেশার মাপার জন্য তাদের বাড়িতে যান। সেসময় ওই প্রবাসীর স্ত্রী তার সমস্যার কথা বললে জিতেশ তাকে ফার্মেসিতে যেতে বলেন। ওইদিন বিকালে তিনি ফার্মেসিতে গেলে দোকানে কাস্টমার রয়েছে বলে তাকে অপেক্ষা করতে বলেন জিতেশ। এক পর্যায়ে রাত হয়ে গেলে বাসায় যাওয়ার জন্য ওই নারী অস্থির হয়ে ওঠেন। তখন ওই ফার্মেসির মধ্যে তাকে একটি ঘুমের ওষুধ খেতে দেন জিতেশ।

তিনি বলেন, ঘুমের ওষুধ খেয়ে ওই নারী তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। এরপর জিতেশ তার দুই সহযোগী অনজিৎ চন্দ্র গোপ ও অসীত গোপকে নিয়ে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে। এরপর রাত গভীর হলে আশপাশের দোকান বন্ধ হয়ে যায়। তখন জিতেশ ও তার দুই সহযোগী এনার্জি ড্রিংকস পান করে জোৎস্নাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে।

মুক্তাধর বলেন, ধর্ষণের বিষয়টি জোৎস্না তার পরিবারকে জানাবে বলে জানান। তখন জিতেশ ও তার সহযোগীরা জোৎস্নার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মুখে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ওই ফার্মেসিতে থাকা ফল কাটার ছুরি দিয়ে জোৎস্নার দুই হাত, দুই পা ও বুক-পেটসহ ছয় টুকরা করে। এরপর দোকানে থাকা ওষুধের কার্টন দিয়ে খণ্ডিত অংশগুলো ঢেকে রেখে তারা ফার্মেসি তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ওই মরদেহের খণ্ডিত অংশ পাশের একটি মাছের খামারে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তু ভোর হয়ে যাওয়ায় ও লোকজন চলে আসায় তারা সেই কাজটি করতে পারেনি।

নিহত শাহনাজ পারভীন জোৎস্না ২০১৩ সাল থেকে পৌর শহরের নিজের বাসায় দুই ছেলে, এক মেয়ে, বৃদ্ধা মা ও ভাই-বোনদের নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। তার স্বামী সৌদি আরব প্রবাসী।

পূর্বপশ্চিম-এনই

সুনামগঞ্জ,গণধর্ষণ,লাশ ৬ টুকরো।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close