• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

ওয়ালটনের ব্যাংক হিসাব থেকে ৬ কোটি টাকা লোপাটের চেষ্টা, গ্রেপ্তার ১০

প্রকাশ:  ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ০১:৫৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

ওয়ালটন গ্রুপের ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড (ডিবিবিএল) এর হিসাব থেকে স্বাক্ষর জাল করে সাড়ে ৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগে জালিয়াতি চক্রের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. জাকির হোসেন (৩৫), ইয়াসিন আলী (৩৪), মাহবুব ইশতিয়াক ভূঁইয়া (৩৫), আনিছুর রহমান ওরফে সোহান (৪২), মো. দুলাল হোসাইন (৩৫), মো.আসলাম (৫৩), আব্দুর রাজ্জাক (৪৮), জাকির হোসেন (৪৪), মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া (৫৬) ও মো. নজরুল ইসলাম (৫০)। এদের মধ্যে জাকির হোসেন ডিবিবিএল এর কারওয়ান বাজার শাখায় এসএমই সেলস টিম ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত।

ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো.আসাদুজ্জামান শুক্রবার নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ভাটারা থানা-পুলিশ। চক্রটি রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) ফর্মে অন্য একটি ব্যাংকে টাকা স্থানান্তর চেষ্টা করলে নজরে আসে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের। আরটিজিএস হলো একটি বিশেষায়িত তহবিল স্থানান্তর ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে তাৎক্ষণিক বা প্রকৃত সময়ে তহবিল স্থানান্তর করা যায়।

ব্যাংকের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার ডিবিবিএল এর শাখায় ওয়ালটন গ্রুপের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকাটি আরটিজিএস ফর্মে স্থানান্তরের একটি আবেদন আসে। সেই টাকা এবি ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় ট্রান্সফারের আবেদন করা হয়। ডিবিবিএল’র বসুন্ধরা শাখার ব্যবস্থাপকের কাছে স্থানান্তরের আবেদনটি অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় তিনি সঙ্গে সঙ্গে ওয়ালটন গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে ওয়ালটন গ্রুপ থেকে ব্যাংক ব্যবস্থাপককে বলা হয় তারা টাকা স্থানান্তরের কোনো আবেদন করেননি। পরে আবেদনটি স্থগিত করা হয়। এ বিষয়ে ওয়ালটন গ্রুপের পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার ডিএমপির ভাটারা থানায় একটি অভিযোগ করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে চক্রের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে ভাটারা থানা-পুলিশ।

আরও জানা যায়, চক্রের মূল হোতা জাকির হোসেন ডিবিবিএলে চাকরি করার সুবাদে ব্যাংকের সার্ভার থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য সংগ্রহ করেন। যেসব হিসাবের টাকার পরিমাণ বেশি তাদের ব্যাংক হিসাব থেকে স্বাক্ষর জাল করে আরটিজিএসের মাধ্যমে টাকা স্থানান্তরের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার পর ইয়াসিন আলীকে স্বাক্ষর জালিয়াতির কাজ দেন জাকির। পরে ইয়াসিন আলী স্বাক্ষর জাল করে মাহবুব ইশতিয়াক ভূঁইয়ার পরিচালিত হিসাবে এনআই করপোরেশন, বিডি লি. নামে এবি ব্যাংক লি. মতিঝিল শাখায় স্থানান্তরের পরিকল্পনা করে জাল ব্যাংক দলিল তৈরি করে। পরে তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অন্যদের ঠিক করেন।

ডিসি মো.আসাদুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা এই প্রতারক চক্রের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। চক্রটির কার্যক্রম ব্যাংকের ভেতর থেকে শুরু হয়। এর বাইরে চক্রটির সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে। আমরা যখন তাদের গ্রেপ্তার করতে যাই তখন তারা ইউনাইটেড গ্রুপের ব্যাংক হিসাব থেকে ১২ কোটি টাকা স্থানান্তরের চেষ্টা করছিল।

তিনি বলেন, চক্রটি দুইভাবে কাজ করে। এক অংশ যে গ্রুপ বা ব্যক্তির টাকা স্থানান্তর করবে সেই নির্দিষ্ট কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে। আরেকটি অংশ যে শাখায় টাকা স্থানান্তরের আবেদনটি জমা দেবে সেই শাখার ব্যবস্থাপককে তাদের পক্ষে আনার জন্য বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে ম্যানেজ করে।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি আসাদুজ্জামান বলেন, মূলত বাংলাদেশের বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক বা গ্রুপের ব্যাংক হিসাব টার্গেট করে তারা। এমন প্রতিষ্ঠানকে তারা টার্গেট করে যেখান থেকে টাকা স্থানান্তর হলে যেন দ্রুত বুঝতে না পারে। কেননা বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসাবে বিশাল অঙ্কের টাকা থাকে।

পূর্বপশ্চিম- এনই

ওয়ালটন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close