• মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি 

তিন মাসের মধ্যে ৫৬ মামলার চার্জশিট না দিলে দুদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

প্রকাশ:  ২৯ নভেম্বর ২০২২, ১৫:৫৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় তিন মাসের মধ্যে ৫৬ মামলার চার্জশিট দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর এই সময়ের মধ্যে চার্জশিট দিতে ব্যর্থ হলে দুর্নীতি দমন কমিশনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

বেসিক ব্যাংকের শান্তিনগর শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলীর জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ এই রায় দেন। একই সঙ্গে চার্জশিট দিয়ে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে হাইকোর্টে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এর আগে শুনানিতে হাইকোর্ট বলেন, দুর্নীতিবাজ যত প্রভাবশালী, যত বড়ই হোক না কেন, আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলে যাব। দুর্নীতি নির্মূল করাই আমাদের লক্ষ্য। ব্যক্তিগতভাবে আমরা কারও বিরুদ্ধে কথা বলি না, কেউ আমাদের শত্রু নয়। দেশ ও জনগণের স্বার্থে আমরা কথা বলি।

আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। জামিন আবেদনকারি মোহাম্মদ আলীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এসএম আবুল হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

শুনানিতে খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘৫৬টি মামলার অনুসন্ধান চলছে। এরইমধ্যে ১১৬ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ২ হাজার ৪০০ জনকে পরীক্ষা করা হয়েছে। কেউ সাক্ষি দিতে চায় না।’

আদালত বলেন, কাকে পাওয়া যাচ্ছে না? কেউ সাক্ষি দিতে না আসতে চাইলে আমাদের জানাবেন। আমরা ব্যবস্থা নেব। আপনারা যদি এসব বলেন, আপনাদের কথা যদি না শুনে তাহলে কার কথা শুনবে? আর এটা তো ডাকাতির মামলা না। এখানে ডকুমেন্ট কথা বলবে। টাকা কোথায় নিয়ে গেল দেখার দরকার নেই। দেখবেন টাকা ব্যাংক থেকে উঠলো কি না?

আবুল হোসেন, ‘চার্জশিট না দিতে পারলে বিচারিক আদালতকে জামিন বিবেচনা করতে নির্দেশনা দেন। এটাই আমাদের প্রার্থনা।’ আদালত দুদক আইনজীবীকে বলেন, চার্জশিট দিতে কতদিন লাগবে, এক মাস? খুরশীদ আলম খান বলেন, আমাদের প্রতিবন্ধকতা আছে। আপনারা বিবেচনা করে আদেশ দেন। আদালত বলেন, প্রতিবন্ধকতা থাকবেই। পৃথিবী যত দিন থাকবে, তত দিন প্রতিবন্ধকতা থাকবে। এর মধ্যে দিয়েই কাজ করতে হবে।

আবুল হোসেন বলেন, দুদক একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। সরকার বলেছে কাউকে ছাড় নয়, তাহলে ৮২ জন ব্যবসায়ীকে ধরা হচ্ছে না কেন? তাদের ধরতে অসুবিধা কোথায়? আদালত বলেন, এটা একটা সিন্ডিকেট। একে অপরকে সহযোগিতা করছে।

আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি তো নিজে আত্মসমর্পণ করে কারাগারে আছি। আমার অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। আমাকে জামিন দেন। জামিন নিয়ে তো পালিয়ে যাব না। সাক্ষি-প্রমাণে যা হবার হবে। দেখা গেল ৫ বছর পর বিচার শুরু হচ্ছে। মানুষের জীবনের তো মূল্য আছে।’

পরে আদালত জামিন সংক্রান্ত রুল খারিজ করে তিন মাসের মধ্যে দুদককে চার্জশিট দিতে নির্দেশ দেন।

হাইকোর্ট
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close