যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোয় আটকে গেল জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব আটকে গেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) নিরাপত্তা পরিষদে একমাত্র দেশ হিসেবে এই প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নেয় যুক্তরাষ্ট্র।
সম্পর্কিত খবর
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে খসড়া প্রস্তাবটি গৃহীত হলে সেটি সুপারিশ আকারে যেত সাধারণ পরিষদে। তারপর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এর পক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনের প্রয়োজন হতো।
নিরাপত্তা পরিষদে এ প্রস্তাব পাস হতে এর পক্ষে অন্তত ৯টি ভোট প্রয়োজন ছিল। তবে শর্ত অনুযায়ী প্রস্তাবে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া কিংবা চীনের কোনো ভেটো পড়া যাবে না।
ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দিতে খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিল নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য আলজেরিয়া।
আলজেরিয়ার খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্য় হিসেবে গ্রহণ করা হোক। ২০১২ সাল থেকে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে রয়েছে ফিলিস্তিন।
ভোটের পর জাতিসংঘের মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “ভাবনা ভালো ছিল। কিন্তু এদিনের প্রস্তাব সময়ের আগেই নেওয়া হয়েছে। এভাবে ফিলিস্তিনকে সদস্য় করা সম্ভব নয়।”
ভোটের আগে যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, তারা চায় ফিলিস্তিন আলাদা রাষ্ট্রের সম্মান পাক। কিন্তু সেই আলোচনা সরাসরি ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের সদস্যদের একসঙ্গে বসে করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র সেখানে মধ্যস্থতা করতে পারে মাত্র।
এর আগে, ২০১১ সালে সদস্যরাষ্ট্র হওয়ার জন্য প্রথমবারের মতো আবেদন করে ফিলিস্তিন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ভেটো প্রয়োগ করে বারবার এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আসছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বরে অসলো চুক্তিতে ফিলিস্তিনকে নিজস্ব প্রশাসন ও সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের রাষ্ট্রের সম্মান দেওয়া হয়নি। তবে ভবিষ্য়তে যাতে তারা রাষ্ট্রের সম্মান পেতে পারে, সেই রাস্তা তৈরি করে রাখা হয়েছিল।
এদিকে, মধ্য়প্রাচ্য়ে উত্তেজনা অব্য়াহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, ইসরায়েল গাজা আক্রমণ করার পর থেকে তারা লোহিত সাগরে জাহাজের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে। এ নিয়ে মোট ১০০টি জাহাজে হামলা চালানো হয়েছে।
হুতি মুখপাত্র একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ভারত মহাসাগরে তারা অভিযান শুরু করেছে। অর্থাৎ, জলপথে ইসরায়েলের দক্ষিণে পৌছানোর চেষ্টা করছে তারা। মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণ আরো জোরদার হবে।
ইসরায়েল গাজা স্ট্রিপে আক্রমণ শুরু করার পর থেকেই হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে জাহাজের ওপর আক্রমণ শুরু করে।
এদিকে, ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের আক্রমণে গাজা স্ট্রিপে এখনো পর্যন্ত ৩৪,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অসংখ্য নারী এবং শিশু আছে।