• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

ইসরায়েলের ‘পক্ষে’ লেবার পার্টির অবস্থানে মুসলিম ভোটারদের অসন্তোষ

প্রকাশ:  ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:২৮
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির অবস্থান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন দেশটির মুসলিম ভোটাররা।

২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। দেশটির ওয়ালসল সেন্ট্রাল মসজিদের ইমাম মুর্তজা কাদরি গত সপ্তাহে দ্য গার্ডিয়ানের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তিনি মনোভাবের পরিবর্তন দেখছেন।

স্থানীয় মুসলিমরা ইসরায়েল-হামাস ইস্যুতে লেবার পার্টির অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বিশেষ করে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য দলটির অনাগ্রহে নাখোশ তারা।

গাজায় ২৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে লেবার পার্টির ইসরায়েলপন্থি অবস্থান সেখানকার মুসলিম ভোটারদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি করেছে।

যদিও “অভিবাসনবান্ধব” বলে পরিচিত লেবার পার্টির প্রতি মুসলিমরা বিগত দিনে সমর্থন দিয়ে এসেছে। তবে গত বছরের নভেম্বরে পরিচালিত সাভান্তা নামের একটি প্রতিষ্ঠানের জরিপে উঠে এসেছে, ৬৪% মুসলিম ভোটার লেবার পার্টিকে সমর্থন করছে। আর ৪০% ভোটার দলটিকে ভোট দেওয়ার বিপক্ষে ছিল, কারণ দলটির নেতা কেইর স্টারমার বলেছিলেন, “হামাস নিধনে ইসরায়েলের যুদ্ধ করার অধিকার রাখে।”

দ্য গার্ডিয়ান বলছে, লেবার পার্টির এমন অবস্থানের কারণে আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে ইলফোর্ড উত্তরে ছায়া স্বাস্থ্য সচিব ওয়েস স্ট্রিটিংকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য ভোটাররা আরেকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বেছে নিয়েছেন।

এদিকে, ওয়ালসালের মোট জনসংখ্যার ১১.৩% হলো মুসলিম, এখানে নভেম্বর মাসে আটজন লেবার কাউন্সিলর পদত্যাগ করেছেন; যারা আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কথা ভাবছেন।

কির্কলিসের লেবার কাউন্সিলর আম্মার আনোয়ার পার্টির অবস্থানের জন্য গলায় ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে কান্নাজড়িত অবস্থায় পদত্যাগ করেছেন। ওয়ালসালের বাইরেও পদত্যাগের ঘটনা ঘটছে। বার্নলি, অক্সফোর্ড, ব্ল্যাকবার্নসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে একই কারণে কাউন্সিলরদের পদত্যাগের খবর পাওয়া গেছে।

ওয়ালসালে পদত্যাগকারীদের মধ্যে একজন হলেন আফতাব নওয়াজ। তিনিও দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি এবং হামাস-ইসরায়েল ‍যুদ্ধে দলের অবস্থান নিয়ে অসন্তুষ্ট।

এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিশেষ করে, কম বয়সী ভোটাররা তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। যা দলীয় সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করছে।

১৫ বছর ধরে লেবার পার্টির সদস্য ছিলেন নাহিদ আহমেদ। ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি সংঘাতে তার অবস্থান নিয়ে তিনি পার্টি ছেড়েছেন। নাহিদের মতে, লেবার পার্টির ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থানের কারণে মুসলিমদের ভোটের ওপর প্রভাব পড়ছে। তিনি বলেন, “আমি স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ভোট দেব, অথবা ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকব।”

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাসের হামলার পর লেবার পার্টির পক্ষ থেকে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানানো হয়। এরপরই মূলত ব্রিটিশ মুসলিম ও লেবার পার্টির মধ্যে ভাঙনের সূত্রপাত হয়।

যদিও সম্প্রতি গাজায় যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে লেবার পার্টির পক্ষ থেকে কথা বলা হচ্ছে। তবে এতেও সংশয় কাটেনি মুসলিম ভোটারদের।

যুক্তরাজ্য,ইসরায়েল,ফিলিস্তিন,হামাস
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close