যুদ্ধও থামাতে পারেনি মেলবন্ধন: ফিলিস্তিনি আশ্রয়শিবিরের তাঁবুতে বিয়ের আয়োজন
চার মাস ধরে গাজায় চলছে ইসরায়েলি সহিংসতা। ঘরবাড়ি ছেড়েছেন লাখো ফিলিস্তিনি। তারা অনেকেই ঠাঁই নিয়েছেন সীমান্তবর্তী অপেক্ষাকৃত এলাকায়। সেখানে কাটছে দুর্বিষহ জীবন। এর মধ্যেও জীবন চলছে জীবনের মতো। নিয়ম করে হাজির হচ্ছে হাসি-কান্নার নানা মুহূর্ত। প্রিয়জন হারানোর গল্প যেমন আছে, ফিলিস্তিনে রচিত হচ্ছে বন্ধনের গল্পও। এমনই এক গল্পের পাত্র-পাত্রী মোহাম্মদ আল গান্দুর ও শাহাদ। সম্প্রতি রাফাহ সীমান্তের কাছে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন এই যুগল।
আশ্রয়শিবিরের তাঁবুতে তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়। চলমান গাজা যুদ্ধের কারণে কয়েক মাস আগে তারা ঘরবাড়ি ছেড়ে সেখানে আশ্রয় নেন।
সম্পর্কিত খবর
বিয়ে উপলক্ষে রঙিন প্রদীপ ও সোনার ফ্রেমযুক্ত আয়না দিয়ে সাজানো তাঁবুতে জড়ো হন উভয়পক্ষের লোকজন। বিয়ের খাবার হিসেবে অতিথিদের প্লাস্টিকের প্যাকেটে স্ন্যাকস দেওয়া হয়।
নববধূ শাহাদ সাদা পোশাক ও ঐতিহ্যবাহী সূচিকর্মে অলঙ্কৃত হিজাব পরেছিলেন। সেখানেই বর তাকে আংটি পরিয়ে দেন।
জীবনের সবচেয়ে সুখের দিনটিতেও নবদম্পতির চোখেমুখে ছিল তীব্র বেদনার ছাপ। কারণ, তাদের বহু আত্মীয় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। তাদের অনেকের ঘরবাড়ি চিরতরে ধ্বংস হয়েছে।
বর আল গান্দুর বলেন, “জীবনের এই আনন্দময় উপলক্ষটিতেও খুব বেশি খুশি হতে পারছি না। হয়ত আমার খুশির মাত্রা ৩%। তবে স্ত্রীর জন্য পুরোপুরি খুশি খুশি মুখে থাকতে হচ্ছে।”
শাহাদের মা বিয়ের উদযাপনে আগত নারীদের গান গেয়ে শোনান। অনুষ্ঠানে উৎসবের আমেজ ব্যাটারিচালিত প্লেয়ার থেকেও গান বাজানো হয়।
যুদ্ধের আগে উভয় পরিবারই ছেলে-মেয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন।
শাহাদের মা উম্মে ইয়াহিয়া খলিফা বলেন, “আমার স্বপ্ন ছিল শাহাদকে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর, সেরা বিয়ে দেওয়ার।”
“আমরা তার বিয়ের জিনিস প্রস্তুত করেছি। সে খুশি ছিল। কিন্তু গোলাগুলিতে সব শেষ হয়ে গেছে। যতবার মনে পড়ে সে কাঁদতে শুরু করে,” তিনি বলেন।