দক্ষিণ আফ্রিকায় ঝড়-বন্যায় নিহত বেড়ে ৪৪৩
দক্ষিণ আফ্রিকায় ঝড়ের তাণ্ডবে সৃষ্ট বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৬৩ জন। গৃহহীন হয়ে পড়েছেন আরও ৪০ হাজারের মতো মানুষ।
দেশটির জরুরি সেবা বিভাগ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কোয়াজুলু-নাটাল (কেজিএন) প্রদেশে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। একজন প্রাদেশিক কর্মকর্তা ধারণা দিয়েছেন যে, শুধু অবকাঠামো খাতে ক্ষয়ক্ষতি প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম চালাতে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে চার হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
সম্পর্কিত খবর
কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা সিহলে জিকালালা বলেন, মৃত্যুর সংখ্যা বর্তমানে ৪৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। আরও ৬৩ জন এখনও নিখোঁজ বলে জানান তিনি। এর মধ্যে উদ্ধারকারী দলের এক সদস্য দায়িত্ব পালনের সময় ‘শ্বাসকষ্টে ভুগলে তাঁকে আকাশপথে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্ভাগ্যবশত, তিনি মারা গেছেন। খবর এএফপির।
এদিকে, বন্যা-বিধ্বস্ত পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টি কমতে শুরু করেছে। যার ফলে এযাবৎকালের অন্যতম ভয়াবহ ঝড়-পরবর্তী সময়ে উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে।
কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আমাদের সরেজমিনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও উদ্ধার অভিযানের গতিরোধ করেছিল। কিন্তু, এ মুহূর্তে আমরা আবার পুরোদমে কাজে ফিরেছি।
বন্যার পানির তোড়ে গত সপ্তাহের শুরুর দিকে দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় শহর ডারবানসহ আশপাশের অঞ্চলগুলোর কিছু অংশের রাস্তাঘাট ভেঙে যায়, হাসপাতালগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ঘরবাড়িসহ সেগুলোর ভেতরে আটকে পড়া লোকজনকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
এদিকে বন্যার কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে শত শত হাসপাতাল ও বিদ্যালয়। বন্যার তীব্রতা এতটা হবে, তা আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশটি ভাবতে পারেনি।
বন্যার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা তাঁর সৌদি আরব সফর স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার ওই সফর শুরু হওয়ার কথা ছিল।
প্রেসিডেন্ট রামাফোসা বলেন, শত শত মানুষের প্রাণহানি এবং হাজার হাজার বাড়িঘর, সেইসঙ্গে (বন্যার) অর্থনৈতিক প্রভাব এবং অবকাঠামো ধ্বংস হওয়ায় সবাইকে হাতে হাত রেখে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা এখনও কোভিড মহামারি এবং গত বছরের দাঙ্গার প্রভাব থেকে দেশকে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভয়াবহ ওই দাঙ্গায় সাড়ে ৩০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিল, যাদের বেশির ভাগই ছিল বর্তমানের বন্যা-বিধ্বস্ত দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দা।
পূর্বপশ্চিম/এনএন