সেবা না পেয়ে অটোরিক্সায় প্রসূতির সন্তান প্রসব
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে এক প্রসূতি মা অটোরিক্সায় সন্তান প্রসব করেছেন। হৃদয় বিদারক এ অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২০ আগষ্ট) দিনগত ভোর রাতে।
জানা গেছে, উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউপির আন্দুয়া গ্রামের প্রসূতির স্বামী মহেদুল ইসলাম তার স্ত্রী রুমানা বেগমের (২৫) প্রসব বেদনা ওঠে। প্রসব বেদনায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ভোররাতে ওই তাকে নিজস্ব অটোরিক্সায় স্ত্রীকে পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন।
সম্পর্কিত খবর
এসময় রাত সাড়ে ৩ টার দিকে বিপদগ্রস্ত কাতর স্ত্রীর অসুস্থতায় বিচলিত স্বামী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসককে সেবা দিতে অনুরোধ জানান। কিন্তু জরুরি বিভাগে ওই সময় দায়ীত্বরত সংশ্লিষ্টদের উদাসিনতায় চিকিৎসা সেবা পেতে ব্যর্থ হোনন ওই দম্পতি। দায়ীত্বরত কোন চিকিৎসক বা নার্স গুরুত্ব না দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে নেয়ার পরামর্শ দেন।
মরনাপন্ন প্রসূতির নিরুপায় স্বামীসহ পরিবারের অন্যরা দ্রুত হাসপাতাল থেকে উপজেলা সদর অভিমুখে আসার পথে স্থানীয় গাইবান্ধা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় প্রসূতি প্রসব বেদনায় ছটপটসহ কাতর হয়ে পড়েন। এক পর্যায় রাত প্রায় ৪ টার দিকে অটোরিক্সার মধ্যে ফুঁটফুটে একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন।
এ বিষয়ে ভূক্তভোগী মহেদুল জানান, আমার স্ত্রী যখন প্রসব বেদনায় কাতর, ঠিক তখন ডাক্তাররা ঘুম নিয়ে ব্যস্ত। তাদের অনেক অনুরোধ করেও কোন কাজ হয়নি। পরে বাধ্য হয়ে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে আমার স্ত্রী একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেয়।
ভূক্তভোগি মহল জানান, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্ত্তির অর্থই হচ্ছে মৃত্যুমুখে ধাবিত হওয়া। এখানে পৌঁছার আগেই রেফার্ড শব্দটি মনে হয় অনেক আগেই লিখে রাখা হয়ে থাকে। ফলে উপজেলা এলাকার সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠি হাসপাতালটির সার্বিক চিকিৎসা সেবার প্রতি আস্থা হারাতে বসেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ওয়াজেদ আলী জানান, প্রসূতিকে সেবা না দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে যাওয়ার পরামর্শ দেয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না। অভিযোগ পেলে তাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য কোন জবাবদিহীতা না থাকায় ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। একের পর এক এমন দায়ীত্বহীনতার কবলে এলাকার ভূক্তভোগি মহল হাসপাতালের উপর কোন ভরসা রাখতে পারছেন না।
এলাকার সর্বস্তরের সচেতন মহল এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের যথাযথ জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ওএফ