• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে সাগরে

প্রকাশ:  ১৪ আগস্ট ২০১৮, ১৪:১১
বরগুনা প্রতিনিধি

জ্যৈষ্ঠের শেষ দিক থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত ইলিশের মৌসুম। আষাঢ়ে ভরা মৌসুমেও কাঙ্খিত ইলিশের দেখা মেলেনি। একটু দেরি হলেও এখন দেখা মিলেছে রুপালি ইলিশের। বঙ্গোপসাগর ও তার মোহনা সংলগ্ন বিষখালি, বলেশ্বর নদী ও গভীর সমুদ্রে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ায় বাজার জমজমাট, কমছে দাম। উপকূলীয় বরগুনা জেলার পাথরঘাটা, বামনা, বেতাগী, তালতলী, আমতলীসহ দক্ষিণাঞ্চলে সাধারণত দুই ধরনের জেলে।

এক ধরনের জেলে নদ-নদীতে মাছ ধরে, আরেক ধরনের জেলেরা ফিশিং ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশ শিকার করে। দুমাস আগেও বিষখালি ও বলেশ্বর নদীর জেলেরা হতাশা প্রকাশ করেছিল। বলেশ্বর বিষখালিসহ উপক‚লীয় নদ-নদীর ইলিশকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় লোকাল ইলিশ। যা আকারে বড় হয়, তৈলাক্ত ও সুস্বাদু হয়। আর গভীর সমুদ্রের ইলিশকে বলা হয় ফিশিং ইলিশ, যা আকারে খুব বেশি বড় হয় না।

মৌসুমের শুরুতে ইলিশের দেখা না পেলেও এখন কাঙ্খিত রুপালি ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটে উঠেছে জেলে, আড়ৎদার ও মৎস্যজীবীদের মাঝে। তাই স্বরূপ ফিরেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে (বিএফডিসি) পাথরঘাটা। জেলে, আড়ৎদার ও মাছ ব্যবসায়ীদের এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। কেউ ইলিশ মাছের ঝুড়ি টানছেন, কেউ প্যাকেট করছেন, আবার কেউ কেউ সেই প্যাকেট দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে তুলে দিচ্ছেন ট্রাকে। সব মিলিয়ে যেন আনন্দের জোয়ার বইছে। অন্য দিকে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বরফ কলের শ্রমিকরাও।

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় উপূূলীয় জেলে পল্লীগুলোতে স্বস্তি ফিরেছে। মাছ ভর্তি যান্ত্রিক নৌযান কিংবা মাছধরার (ফিশিং) ট্রলার নিয়ে জেলেরা গভীর সমুদ্র থেকে হাসি মুখে ফিরছেন। আবার অনেকে মাছ ধরার জন্য ছুটছেন সাগর পানে। তবে জলদস্যু আতঙ্কে অস্বস্তিও কম নেই জেলে পরিবারে। মঙ্গলবার (১৪ই আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফিশিং ইলিশ ১৩ থেকে ১৮ হাজার টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে। আর লোকাল ইলিশ ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ১৭ থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কেজির ওপরে ইলিশ ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকা করে কেনাবেচা চলছে। যা কদিন আগের চেয়ে প্রায় মণে ১০-১৫ হাজার টাকা কম।

স্থানীয় জেলেরা জানান, চলতি বছরে ইলিশ মৌসুমের প্রথম দু-মাসে ইলিশের দেখা মেলেনি। তাই ট্রলার মালিকসহ মৎস্য পেশার সঙ্গে জড়িত সবাই হতাশ হয়ে পড়ে ছিলেন। তবে সাগরে এখন প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। সামনের দিনগুলোতে আরো বেশি ইলিশ পাবেন এমনটাই আশা করছেন তারা। পাথরঘাটার টেংরা এলাকার ট্রলার শ্রমিক অবুল কালাম বলেন, ‘ট্রলার সকালেই ঘাটে নোঙর করেছি। সব সময় এরকম মাছ জালে ধরা পড়ে না। তবে এবারে যে মাছ পেয়েছি, তাতে খুশি। এবার প্রায় ১০ লাখ টাকার মতো মাছ বিক্রি করতে পারবো। জাকির নামের এক পাইকার জানান, ঢাকা, যশোর, মাগুরা, রাজশাহী, রংপুর, পাবনা, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ইলিশ মাছ পাঠান তিনি।

মেসার্স বরিশাল ফিস আড়তের মালিক খান মো. হাবিব বলেন, সাগর থেকে যে কিছু ট্রলার ঘাটে আসছে, তাদের প্রতেকেই কম-বেশি মাছ পাচ্ছে। বিক্রি করেও ভালোই লাভ করছে তারা। ইলিশের দাম মধ্যম পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান তিনি।

পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম জানান, গত দু-মাসের তুলনায় এখন অনেক বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে। প্রচুর বৃষ্টি হলে আরও বেশি ইলিশ ধরা পড়বে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এতদিন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছিল না। আশা করি সামনের দিন গুলোতে প্রচুর ইলিশ ধরা পরবে।

/পি.এস

বরগুনা,ইলিশ,সাগর

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close