• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের আদলে পূজামন্ডপ

প্রকাশ:  ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ১২:৪১ | আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ১২:৪৩
রাজশাহী প্রতিনিধি

বোধনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় শারদীয় দূর্গাপূজা। এরপর সোমবার ষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার বাজনা বাজতে থাকে পুরোদমে। মন্ডপে মন্ডপে তিথির সাথে সাথে চলতে থাকে ঢাক-ঢোলের সুর তরঙ্গ ও পূজার আর্চনা। দশমী পূজার শেষে দেবী বিসর্জনের মধ্যমিয়ে ইতি টানে এই মহোৎসবের।

এবারে রাজশাহী জেলায় ৪৫৭টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরমধ্যে মহানগরীর ১২টি থানার অধীনে প্রায় ৮০টি পূজামন্ডপে ঘটা করে উদ্যাপিত হচ্ছে এই মহাউৎসব। এবারেও পূজা মন্ডপে নতুনত্ব নগরীর রাণীবাজার মোড়ের টাইগার সংঘের মন্ডপ। কয়েক বছর থেকে নগরীর সবার কাছেই এই মন্ডপটির আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। প্রতিবারই বিশেষ কিছু করার সুনাম রয়েছে এই মন্ডপের। এরআগে বাহুবলী, বাঘের বিশাল বড় মস্তক আকৃতির পূজা মন্ডপ তৈরী করে মন্ডপ ক্যাটাগরিতে জেলায় বিজয়ী হয়েছে। ফলে প্রতিবছরই নগরবাসী উৎসুক হয়ে থাকে নতুন কি নিয়ে আসছেন টাইগার সংঘের মন্ডপ সাজছে।

চমকটা যেন এবার একটু বেশিই বড়। পৃথিবী ছেড়ে একেবারে আকাশে। নগরীর সবচেয়ে ব্যস্ত রাস্তা রেলগেট কামারুজ্জামান চত্বর থেকে সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট। মাঝপথে পড়বে রাণীবাজার মোড়। এই মোড় অতিক্রম করতে গেলেই দেখা মিলবে চোখ ধাঁধানো এবং সমসাময়িক কৃতিত্বের আদলে গড়া এই মন্ডপটি। যারা টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ দেখতে পারেননি, তাদের সেই অপূর্ণ ইচ্ছেটা হয়তো এখানে পূরণ হতে পারে। হ্যাঁ, বাঙালী জাতির অনণ্য অর্জন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর প্রতিচ্ছবিতে মন্ডপ।

এখানে আপনার চোখে পড়বে মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ সাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী স্পেস-এক্স এর রকেটটি। মনে হতে পারে রকেটটি প্রস্তুতি নিচ্ছে মহাকাশে উড্ডয়নের জন্য। সাদা রঙের সুবিশাল রকেটটি মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে জানান দিচ্ছে এ দেশের মহাকাশ জয়ের ইতিহাস। রকেটটির গায়ে লেখা “বঙ্গবন্ধু-১”। তার সাথে রয়েছে বাঙালীর রক্তে অর্জিত লাল সবুজের পতাকা। রকেটটির নিচের দিকে লাল কাপড়ের কুচিগুলো রকেট থেকে নির্গত অগ্নি ধোঁয়ার স্মারক। পাশেই কালো কাপড়ের মহাকাশ দৃশ্য। আর এতে ভেসে রয়েছে সবুজ-ধূসর পৃথিবী। তার চারদিকে আবর্তমান বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট কিছুক্ষণের জন্য আপনাকে নিয়ে যাবে মহাকাশে। রাতের আলোকসজ্জায় মন্ডপটির সামনে দাঁড়িয়ে আপনি হয়তো কিছুক্ষনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন বিস্তৃত মহাকাশের হাজারো গ্রহ নক্ষত্রের জগৎ থেকে। হয়ে যেতে পারেন নাসার দুর্দান্ত মহাকাশচারী। নজর দেয়া যাক বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের দিকে। টেলিভিশনের পর্দায় দেখা দৃশ্যের সাথে পার্থক্য খুঁজে পাওয়াটা মুশকিলই বটে। দুই ডানায় রয়েছে বাংলাদেশের পরিপূর্ণ রুপ ফুটিয়ে তুলতে রয়েছে মানচিত্র।

সোমবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে থেকে শুরু হয়েছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে নগরীর প্রতিটি পূজাম-পের এদিন সকাল থেকে শুরু হয়ে অনুষ্ঠানিকতা। এবার ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) এসেছেন দেবী দুর্গা। আর যাবেন দোলায় চড়ে। শাস্ত্রমতে এবার মা দুর্গার আগমন-গমন দুটোই অমঙ্গল। এরপরও তিনি জগতের মঙ্গল কামনা করবেন। আর দেবীকে বরণ করতে এরই মধ্যে প্রস্তুতি শেষ করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা।

পঞ্জিকা মতে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হয় সোমবার। রোববার (১৪ অক্টোবর) সায়ংকালে দেবী বোধন অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার ছিলো শ্রী শ্রী দুর্গাষষ্ঠী। এদিন সকাল ৬টা ২৫ মিনিটে কল্পারম্ভ এবং বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে উৎসবের প্রথম দিন সম্পন্ন হয়। মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) মহাসপ্তমী হয়। এদিন সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে শ্রী দুর্গাদেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপন, সপ্তমাদি কল্পারম্ভ ও মহাসপ্তমী বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

উৎসবের তৃতীয় দিন (১৭ অক্টোবর) বুধবার মহাঅষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদিন সকাল ৯টায় এবং বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হয় কুমারী পূজা। সন্ধিপূজা শুরু হয় দুপুর ১২টা ৫৬ মিনিটে। পরদিন বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টায় শুরু হবে নবমী পূজা। পরদিন শুক্রবার সকাল ৭টায় পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন হবে সকাল ৮টায়। এদিন (১৯ অক্টোবর) বিজয়া দশমী। প্রতিমা বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসব।

এদিকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে নগরীর প্রতিটি পূজাম-পের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মন্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করছেন।

পূজা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close