• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কাশ্মীরে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবার পদত্যাগ, জোট ছাড়লো বিজেপি

প্রকাশ:  ১৯ জুন ২০১৮, ১৭:৪৩ | আপডেট : ১৯ জুন ২০১৮, ১৭:৪৭
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) মেহবুবা মুফতি। ফলে গভর্নরের শাসন জারি হয়েছে রাজ্যটিতে। এর আগে জোট সরকার থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। এতদিন বিজেপি-র সঙ্গে জোট বেঁধেই পিডিপি সেখানে সরকারের নেতৃত্বে ছিল।

সম্পর্কিত খবর

    মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপি পিডিপির সঙ্গে গড়ে তোলা জোট থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দিয়ে। এর কিছুক্ষণ পরই মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি পদত্যাগ করেন।

    বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব মঙ্গলবার দুপুরে নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে জম্মু-কাশ্মীরে সরকার থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্তের কথা জানান । তিনি বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরে পিডিপি-র সঙ্গে পথচলা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সরকার থেকে সরে আসা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।’’ এর পরেই রাজভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি তাঁর ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে আসেন। বিজেপি যদিও রাজ্যে রাজ্যপালের শাসনই চায়, বৈঠকে এমনটা জানিয়েছিলেন রাম মাধব।

    জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় মোট ৮৭টি আসন। ২০১৪ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পিডিপি পেয়েছিল ২৮টি আসন। বিজেপি পেয়েছিল ২৫টি। এ ছাড়া ওমর আবদুল্লার দল ন্যাশনাল কনফারেন্স ১৫টি, কংগ্রেস ১২টি এবং অন্যান্যরা ৭টি আসন পেয়েছিল। বিজেপি এবং পিডিপি যৌথভাবে ম্যাজিক সংখ্যা ৪৪ ছাড়িয়ে ৫৩ আসনে পৌঁছয়। সেই জোটই এত দিন সরকার চালাচ্ছিল জম্মু-কাশ্মীরে। এর ফলে বিজেপি বেরিয়ে যেতেই পিডিপি-র মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

    হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, গত এপ্রিল মাসে কাঠুয়া জেলায় যাযাবর মুসলিম সম্প্রদায়ের আট বছর বয়সী এক কন্যাশিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় বিজেপি-পিডিপি জোটে ফাটল ধরে। ওই সময় রাজ্য সরকারের বিজেপির মন্ত্রী চৌধুরী লাল সিং ও চন্দর প্রকাশ গঙ্গা কাঠুয়ায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে মিটিং-মিছিল করেছিলেন। এরপরই দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। প্রবল বিক্ষোভের মুখে পিছু হটে বিজেপি। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা জম্মু-কাশ্মীরে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা শুরু করেন।

    বিজেপির দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, ওই সময় আয়োজিত এক সমাবেশে শিশু ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আর কাউকে গ্রেপ্তার না করতে পুলিশের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁরা। তৎকালীন মন্ত্রী চৌধুরী লাল সিং ও চন্দর প্রকাশ গঙ্গার এই ভূমিকায় অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা। পরে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পদত্যাগপত্র জমা দেন মন্ত্রীদ্বয়। বিশ্লেষকদের মতে, মেহবুবা মুফতির দলের সঙ্গে জোট টিকিয়ে রাখতেই ওই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

    পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে জম্মু-কাশ্মীরে সামরিক অভিযান চালানো থেকে বিরত ছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। গত রোববার সিদ্ধান্ত হয়, রমজান মাস শেষ হয়ে যাওয়ায় এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। এর পরই জম্মু-কাশ্মীরের জোট সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল বিজেপি। মূলত পিডিপির নেতা মেহবুবা মুফতির আরজির পরিপ্রেক্ষিতেই কেন্দ্রীয় সরকার যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

    জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যসভায় পিডিপির দখলে রয়েছে ২৮টি আসন। অন্যদিকে বিজেপির আছে ২৫ জন আইনপ্রণেতা। এই রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে আসন প্রয়োজন ৪৫টি।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close