রাহুল বহুবার আমাকে মেরেছে: প্রিয়াঙ্কা

কলকাতার ধারাবাহি নাটকে অভিনয় করতে করতেই প্রেম। ধারাবাহিকে ভাই-বোন হলেও, বাস্তবে কখন যে একে অপরকে ভালবেসে ফেলেছিলেন জানতেন না তারাও। এরপর ২০০৮ সালে মুক্তি পেল রাজ চক্রবর্তীর ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’। ছবির জুটি ধীরে ধীরে বাস্তবেও বৈবাহিক জীবনে আবদ্ধ হল ২০১০ সালে। প্রিয়াঙ্কা সরকারের বয়স তখন মাত্র ১৯। আর অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় (রাহুল) সবে পা দিয়েছেন ২৫ বছরে।

এরপর ২০১৩ সালে বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন প্রিয়াঙ্কা। রাহল-প্রিয়াঙ্কার সুখের সংসার ছেলে সহজ আসায় যেন পরিপূর্ণতা পেল। তবে প্রিয়াঙ্কা যে সন্তানসম্ভবা, সে নিয়ে গোপনয়ীতা বজায় রেখেছিলেন এই দুই টালি তারকাই। যেমন তাদের বৈবাহিক জীবনে যে ভাটা চলছে তা নিয়েও বরাবরই প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি কেউই। তবে সম্পর্কটা যে ভাল যাচ্ছিল না এ নিয়ে জানাজানি হয় বছর দুয়েক আগে। তা প্রকাশ্যে আসে রাহুলের একটি সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট থেকে।

রাহুলের সাথে সম্পর্কের দ্বন্দ্ব নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে প্রিয়াঙ্কা জানান, প্রথম থেকেই আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে বিচ্ছেদ করব ভেবেছিলাম। সেটা সহজের জন্য তো বটেই, আমাদের জন্যও ভাল হবে। দু’বছরের উপর আমি সহজকে নিয়ে আলাদা আছি। যেখানে রাহুল মাঝেমধ্যে ঘুরতে আসা ও খেলা ছাড়া কিচ্ছু করেনি। যখনই কথা হয়েছে, ‘হ্যাঁ, ঠিক আছে’ বলে নানা ভাবে এড়িয়ে গিয়েছে।

তিনি বলেন, রাহুল নানা ভাবে আমাকে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করেছে। কাজের রেস্ট্রিকশন ছিল বহু রকম, যা আমি আগে কোনও দিন বলিনি। সেপারেশনের সময়ে কয়েক জন অভিনেত্রীকে নিয়ে আমাকে মিডিয়া অনেক প্রশ্ন করেছে। কিন্তু সেপারেশনের কারণ সেই অভিনেত্রীরা ছিলেন না। বিচ্ছেদের পরে আমি ওই নামগুলো জেনেছিলাম। আমাদের ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অন্য কারণে। বহু অ্যাফেয়ার ছাড়াও নানা ভাবে রাহুল আমাকে ঠকিয়েছে। ওর সঙ্গে আমার কথা হয়, আমি এ নিয়ে মুখ খুলব না। সেই সঙ্গে এটাও কথা ছিল, সহজের সমান দায়িত্ব দু’জনেই নেব।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এ অভিনেত্রী জানান, রাহুল বহুবার গায়ে হাত তুলেছে। ওর পছন্দ মতো কোনও কিছু না হলে, মানসিক নির্যাতন করেছে! দেওয়ালে নিজের মাথা ঠুকেছে। নিজের মাথাতেও গরম চা ঢেলে দিয়েছে। আমি চাইনি এই মানসিক অত্যাচারের কথা সামনে আসুক। আজ আমার আর উপায় নেই।

সম্পর্কের তিক্ততার পিছনে কারণ জানতে চাইলে প্রিয়াঙ্কা বলেন, এ বছর যখন সহজকে বড় স্কুলে ভর্তি করার কথা হয়, তখন একটা বড় অঙ্কের টাকার প্রয়োজন ছিল। রাহুলকে বলায়, ও অর্ধেকটা দিতে রাজি হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বলে, আমার অসুবিধে আছে। তুমি দিয়ে দাও। আমি পরে দেব। কিন্তু সেটা এতটাও বড় অঙ্ক ছিল না, যেটা ওর পক্ষে অর্ধেক দেওয়া অসুবিধের। না পারার কারণ ও নিজেই বলেছে। ফ্ল্যাট, নতুন বিএমডব্লিউ লোনের কারণে রাহুলের এতটাই খরচ হচ্ছে, সঞ্চয় করতে পারছে না। এটা ভাবতে আমার খুব অবাক লাগে, এত টাকা ও রোজগার করছে, অথচ তার মধ্যে সহজকে নিয়ে ভাবনা নেই!

তিনি বলেন, তারপরও আমি ওকে বলি যে, আমাদের কথা বলা দরকার। কিন্তু ও মিটিং এড়িয়ে যায়। শেষে ওর সঙ্গে আমার ফোনেই কথা হয়। ওকে বলি, সহজের জন্য মাসে এই পরিমাণ খরচ হয়। তোমার সহযোগিতা চাই। সেখানে ও আমাকে বলে, ‘আমার সহজ চাই না। আমি টাকা দিতে পারব না।’ এ কথার রেকর্ডিংও আমার কাছে আছে। তখনই মিউচুয়ালের পথ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিই।