• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

গণবি'তে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবী শিক্ষার্থীদের

প্রকাশ:  ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১০:৪১ | আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১১:২৯
মুন্নি আক্তার, গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও সুপরিচিত। আর সেইসঙ্গে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় স্থান করে নিয়েছে ভাষা ও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক শহীদ মিনার।শুধু দেশেই নয়, বিশ্বের যেখানেই গড়ে উঠেছে বাঙালি জনবসতি, সেখানেই পরম মমতায় গড়ে উঠছে শহীদ মিনার।

কিন্তু দুঃখের বিষয় সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠার ৭বছরেও কোন শহীদ মিনার নির্মিত হয় নি। এটা না থাকা আমাদের জন্য ব্যর্থতা। কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও জানানো হয় শ্রদ্ধা। ক্যাম্পাসে দ্রুত শহীদ মিনার স্থাপন দরকার বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সম্পর্কিত খবর

    মেডিকেল ফিজিক্স এন্ড বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৭ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী রানা মিত্র জানান, মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনকে বুকে ধারণ করে যে ক্যাম্পাস। সেই কাম্পাসে শহীদ মিনার থাকবে না এমনটি মেনে নেওয়া যায় না, এতে করে আগামী দিনের তরুণরা ভুলতে বসবে একুশের চেতনাকে । আশা করি গণবিতে অচিরেই নির্মিত হবে শহীদ মিনার। এটা আমাদের প্রানের দাবি কতৃপক্ষের কাছে।

    ফিজিওথেরাপি বিভাগের ৭ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইসলাম বলেন, আমরা সবাই আমাদের মাতৃভাষা তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অর্জনের পটভূমি জানি। শহীদ মিনার সেই সকল সূর্য সন্তানদের স্বরণে নির্মিত, বাঙ্গালী জাতির গর্বের প্রতীক। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো আমার বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনেও একটি শহীদ মিনার নির্মাণে আন্তরিক হবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

    আইন বিভাগ ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এনায়েত উল্লাহ কৌশিক জানান, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনার নেই। ফলে নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাসের সুষ্ট চর্চার বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস যেমন নতুন প্রজন্মের জানা প্রয়োজন, তেমনি ইতিহাসের ঘটনা প্রবাহ চেতনায় ধারণ করাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমাদের ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার নির্মাণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে ইতিহাসের নবদিগন্তের উম্মোচন করা সম্ভব।

    সি.এস.ই বিভাগের ৩য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী আফরিন খান বলেন, শহীদ মিনার না থাকায় নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের গৌরবময় অর্জন ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয় এ যেখানে আমরা সমগ্র বিশ্বের সকল সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটাচ্ছি। সেখানে আমাদের নিজেদের ভাষা নিজেদের সংস্কৃতি কি পিছিয়ে পড়ছে না? এর থেকে উত্তোলন এর একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠা করা।

    সি.এস.ই বিভাগের ৭ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান জিহাদ জানান, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা প্রয়োজন। আমাদের ক্যাম্পাসে একটি শহীদ মিনার থাকলে তা বছরের প্রতিটি দিনই আমাদেরকে ভাষা শহীদদের কথা মনে করিয়ে দিবে। তাদের ত্যাগের মহিমায় আমাদের স্বদেশ প্রেম ও বাংলা ভাষার প্রতি কর্তব্যবোধকে সদা জাগ্রত রাখবে।

    এমবিবিএস ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী লিয়া ইয়াছমিন বলেন, ভাষা শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের মাতৃভাষা "বাংলা"। চোখের সামনে একটি শহীদ মিনার কারণে অকারণে বার বার আমাদের ভাষা শহীদ দের বীরত্বের কথা মনে করিয়ে দিতে পারে। আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি আমাদের ভাষা শহীদদের কথা। আমরা আমাদের মনে লুকিয়ে রাখা শ্রদ্ধা প্রকাশ করার দৃষ্টান্ত হিসেবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি শহীদ মিনার চাই ।

    ইংরেজী বিভাগ ৮ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী চৈতি জানান, শহীদ মিনার প্রতীকী হলেও ছাত্রছাত্রীদের মনে দেশি সংস্কৃতির প্রভাব ফেলবে। আর আমাদের বিশাল খেলার মাঠ রয়েছে। কতৃপক্ষ ইচ্ছা করলেই শহীদ মিনার তৈরি করতে পারে।

    বিবিএ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আইভান বলেন, 'শহীদ মিনার একটা প্রতীক। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে কলেজ সব জায়গায় শহীদ মিনার আছে। আর আমাদের এই সবুজে ভরা বিশাল ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার থাকবে না এটা হতে পারে না। আমরা আগামী বছর শহীদ মিনার দেখতে চাই আমাদের ক্যাম্পাসে।'

    বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বলছে, শহীদ মিনার স্থাপন আইন করে নয়, এটি দেশপ্রেম ও ভাষা চেতনা থেকেই করতে হবে। তবে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানায় ইউজিসি।

    /এস কে

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close