• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ফুটবল মানব মাসুদ রানাকে সংবর্ধনা দিল ওয়ালটন

প্রকাশ:  ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:৪৫ | আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:৫১
স্পোর্টস ডেস্ক

ওয়ালটন গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় বল মাথায় নিয়ে সাঁতরিয়ে দ্রুততম সময়ে (৪৪.৯৫ সেকেন্ডে) ৫০ মিটার অতিক্রম করে মাসুদ রানা নতুন একটি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়েন। ৯ নভেম্বর বিকেলে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ তার এই রেকর্ডের স্বীকৃতি দেয়। শনিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে তাকে সংবর্ধনা দিয়েছে ক্রীড়াবান্ধব প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপ। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাকে প্রতিশ্রুত ১ লাখ টাকা, একটি ওয়ালটন স্মার্টফোন ও ব্লেজার দেওয়া হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর (গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস) এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন), বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের উপ মহ-সচিব আশিকুর রহমান মিকু, এটিএন বাংলার উপদেষ্টা (চেয়ারম্যান) মীর মোতাহার হাসান, ওয়ালটন গ্রুপের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মেহরাব হোসেন আসিফ, রেকর্ড গড়ার ক্ষেত্রে গঠিত কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী রায়হান আল মুঘনিসহ অন্যান্যরা।

সম্পর্কিত খবর

    সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে মাসুদ রানা বলেন, প্রথমেই আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই ওয়ালটন গ্রুপকে। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ওয়ালটন গ্রুপের এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন) স্যারের প্রতি। চার বছর আগে তিনি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপে আমাকে দেখেন এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। ঢাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পর আমার পারিবারিক অবস্থা ও বৃদ্ধ মায়ের কথা শুনে আমার জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেন। সেই ভাতা পেয়েই আমি গেল চার বছর চলেছি। এরপর ওয়ালটন পরিবার পৃষ্ঠপোষকতা করে আমাকে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়তে সহায়তা করেছে। আমাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছে। এই রেকর্ডের কৃতিত্ব অবশ্যই তাদের দিতে হবে।

    তিনি আরো বলেন, আমি অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। গেল ২২ বছর ধরে আমি এই ফুটবল নিয়েই পরে আছি। আমার সবকিছু বিসর্জন দিয়েছি। ছোটবেলায় ম্যারাডোনার খেলা দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। তখন ভেবেছিলাম যে বড় হয়ে আমি ভিন্ন কিছু করে আমাদের ছোট্ট-সুন্দর বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারি। বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে চাই। আমার আরো ১১টি ইভেন্ট রয়েছে। আশা করব ওয়ালটন গ্রুপ বরাবরের মতো সব সময় আমার পাশে থাকবে।

    অনুষ্ঠানে ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর (গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস) এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন) বলেন, আজকের দিনটি আমাদের ওয়ালটন গ্রুপ, ওয়ালটন পরিবার, বিশ্বাস করি বাংলাদেশের জন্য আনন্দের। আমরা আসলে দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ট্যালেন্টদের খুঁজে বের করে তাদের নিয়ে কাজ করছি। আমাদের প্রডাক্টগুলো যেমন বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছি, তেমনি এই ট্যালেন্টদেরও বিশ্ব দরবারে তুলে ধরছি। আব্দুল হালিমকে দিয়ে তিন-তিনটি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়িয়েছি। এবার মাসুদ রানাকে দিয়ে করালাম। আরো একজন ইতিমধ্যে রেকর্ড গড়েছে। তার নাম মাহমুদুল হাসান ফয়সাল। তাকেও শিগগিরই আমরা সংবর্ধনা দেব।

    তিনি আরো বলেন, আমি ২০১৪ সালে সাতক্ষীরায় জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপে মাসুদ রানাকে দেখতে পাই। সেখানে তিনি মোটরসাইকেল চালিয়ে ফুটবল মাথায় নিয়ে নানা কলা-কৌশল দেখাচ্ছিলেন। এরপর তাকে আমার কার্ড দিয়ে ঢাকায় দেখা করতে বলি। তার জন্য মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করি। এরপর পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে রেকর্ড গড়িয়েছি। আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল সে রেকর্ডের স্বীকৃতি পেলে ১ লাখ টাকা দিব। আজ সেটা দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। ভবিষ্যতে আব্দুল হালিম, মাসুদ রানা, ফয়সালসহ অন্যান্য আরো যে ট্যালেন্ট আছে তাদের নিয়ে এই রেকর্ড গড়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখব। আশা করব ভবিষ্যতেও তারা রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।

    আশিকুর রহমান মিকু বলেন, গিনেস বুকে নাম লিখিয়ে মাসুদ রানা আমাদের গর্বিত করেছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন, ক্রীড়াঙ্গনের পক্ষ থেকে তাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সত্যিকার অর্থে দেশের খেলাধুলাকে যারা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, দেশের খেলাধুলায় কার্যকরী অবদান রাখছে তাদের মধ্যে ওয়ালটন উল্লেখযোগ্য নাম। তাদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। মাসুদ রানার উত্তোরোত্তর সাফল্য কামনা করছি এবং আজকের এই আয়োজনের জন্য ওয়ালটন গ্রুপকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

    এটিএন বাংলার উপদেষ্টা (চেয়ারম্যান) মীর মোতাহার হাসান বলেন, ছোটবেলায় মাসুদ রানা নামের গল্পের বই পড়েছিলাম। সেই গল্পের নায়ক অত্যন্ত সাহসী ছিলেন। কাকতালীয়ভাবে আজ আমার পাশে বসা ব্যাক্তির নামও মাসুদ রানা। সেও একটি রেকর্ড গড়েছে এবং সেটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। যেকোনো প্রাপ্তিই আনন্দের। সেটা দেশীয়ভাবে যেমন আনন্দের। আন্তর্জাতিক হলে তো কথাই নেই। এমন একটি প্রাপ্তির জন্য মাসুদ রানাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। তিনি বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। আমাদের আন্তর্জাতিক প্রাপ্তি খুব বেশি নেই। তবে মাঝে মাঝে এমন কিছু মানুষ এই প্রাপ্তি ও স্বীকৃতিগুলো নিয়ে আসেন যাদের আমরা আগে থেকে চিনি না। মাসুদ রানা তেমনই একজন। তার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। আর এই স্বীকৃতি ও প্রাপ্তির নেপথ্য কারিগর ওয়ালটন গ্রুপকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা এটিএন পরিবার ওয়ালটন গ্রুপের সব ধরনের উদ্যোগের সঙ্গেই আষ্টেপৃষ্টে থাকার চেষ্টা করি।

    উল্লেখ্য, গেল ২ আগস্ট মিরপুরের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সুইমিং কমপ্লেক্সে বল মাথায় নিয়ে সাঁতরিয়ে দ্রুততম সময়ে ৫০ মিটার অতিক্রম করেন মাসুদ রানা। গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ ৫০ মিটার অতিক্রম করে এই রেকর্ড গড়তে মাসুদ রানাকে ৯০ সেকেন্ড সময় বেঁধে দিয়েছিল। সেটা মাসুদ রানা মাত্র ৪৪.৯৫ সেকেন্ডে অতিক্রম করেন। এরপর ৯ আগস্ট তার এই সাঁতারের ভিডিও, মিডিয়া আর্টিকেল, টেলিভিশনের ভিডিও ফুটেজ, ছবি ও অন্যান্য ডকুমেন্ট গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে ৯ নভেম্বর মাসুদ রানাকে নতুন রেকর্ডের স্বীকৃতি দিয়েছে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ। /এস কে

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close