বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে রাণীনগরে তৈরি হচ্ছে সাব-স্টেশন
কোন এলাকার উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার বাণিজ্যিক রাজধানী হচ্ছে আবাদপুকুর। যে এলাকাটি এক সময় সকল উন্নয়ন থেকে ছিল বঞ্চিত। এক সময় উপজেলার এই পূর্ব জনপদের মানুষদের পরিচয় ছিলো ‘পা ফাঁটা’ (উপহাস করে বলা হতো) হিসাবে।
পায়ে হেটে না হলে গরু কিংবা ঘোড়ার গাড়িই ছিলও এই জনপদের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় বর্তমানে এই আবাদপুকুর এলাকাটি উপজেলার বাণিজ্যিক রাজধানী হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। দিনে দিনে গড়ে উঠছে বড় বড় শিল্প কারখানা।
সম্পর্কিত খবর
এখানে গড়ে উঠছে আধুনিক মানসম্মত বাণিজ্যিক বিপনিবিতান। এই জনপদের মানুষের কাছে বিদ্যুৎ ছিলো সোনার হরিণের মতো কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে বর্তমানে প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌছে গেছে বিদ্যুৎ। আর নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রচেষ্টায় এই আবাদপুকুরে নির্মাণ করা হচ্ছে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ মেগাওয়ার্ট ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন পল্লী বিদ্যুতের সাব-ষ্টেশন। দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে এই সাব-ষ্টেশন নির্মাণের কাজ। আর কিছু দিনের মধ্যেই কাজ শুরু করবে এই সাব-ষ্টেশন। ষ্টেশনটি চালু হলে প্রায় ২২ হাজার গ্রাহক এই সাব-ষ্টেশন থেকে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে বিদ্যুৎ পাবে।
জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুতের বর্তমানে গ্রাহক ৫০ হাজার ৩ শত। গ্রাহকগুলোর জন্য রাণীনগর উপজেলার চকমুনু নামকস্থানে নির্মিত সাব-ষ্টেশন থেকে পুরো রাণীনগর উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। দিন দিন গ্রাহক বৃদ্ধি পাওয়া ও ধারন ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে চরম লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হতো গ্রাহকদের। কোথাও কোন সমস্যা দেখা দিলে ষ্টেশনটি বন্ধ রেখে কাজ করার কারণে পুরো উপজেলাবাসীকে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হতো।
আবাদপুকুর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো: রুহুল আমীন বলেন আমাদের এলাকায় অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকতো না। আর একটি সাব-ষ্টেশনের কারণে বিদ্যুৎ থাকলেও ভোল্টেজ কখনো কম আবার কখনো বেশি। যার কারণে জমিতে পানি সেচসহ নানা কাজে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হতো এই জনপদের মানুষকে। কিন্তু ব্যস্ততম জনপদ এই আবাদপুকুরে আলাদা করে বিদ্যুতের সাব-ষ্টেশন নির্মাণ হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। বর্তমান সরকার প্রধান তার দেওয়া অঙ্গিকার পালন করায় আমরা তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আমরা আশা করছি এই সাব-ষ্টেশন নির্মাণ হওয়ার কারণে এই জনপদের অর্থনৈতিক চাকা আরো দ্রুতগতিতে ঘুরবে। পাল্টে যাবে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা।
নওগা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর রাণীনগর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো: আসাদুজ্জামান বলেন, দিন দিন গ্রাহকদের সংখ্যা ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার আবাদপুকুর এলাকায় ১০ মেগাওয়ার্ট ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি সাব-ষ্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের অঙ্গিকার বাস্তবায়নের ফলশ্রুতিতে এই সাব-ষ্টেশনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এ মাসেই কাজ শেষ করে আগামী মাসেই ষ্টেশনটি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। ষ্টেশনটি চালু হলে বিশেষ করে এই জনপদের মানুষরা দিন-রাত নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মো: ইসরাফিল আলম বলেন, বর্তমান সরকারের অঙ্গিকার বাস্তবায়ন করাই আমাদের কাজ। এই সাব-ষ্টেশনটি নির্মাণ তারই একটি জলন্ত উদাহরণ। এই জনপদের মানুষের দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিলো একটি বিদ্যুতের সাব-ষ্টেশন নির্মাণ করা। যেটি নির্মিত হলে অবহেলিত এই জনপদের মানুষরা দিন-রাত নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে বিদ্যুৎ পাবে। আমি চেষ্টা করেছি শেখ হাসিনার দেওয়া উন্নয়নগুলো অবহেলিত মানুষগুলোর মাঝে পৌছে দিতে। কারণ আ’লীগ সরকার উন্নয়নের সরকার।
/পি.এস